পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়, সেটি আসলে বটগাছ নয়, অশ্বত্থগাছ; তাই তারা দাঁত কেলিয়ে হাসছে! কেউ ভাবছে ছায়ানটের সংস্কৃতিকর্মীরা কত বোকা, কত মূর্খ! আবার কেউ ভাবছে ছায়ানটের সংস্কৃতিকর্মীরা অশ্বত্থমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করে বটমূলের নামে প্রচার করে মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে! বিদ্রুপকারীরা বিচিত্র সব মন্তব্য করছে, বিচিত্র সব ভাষায়!
এবার দেখা যাক ছায়ানট আসলেও এমন একটি ভুল করেছে কি না। ছায়ানট অশ্বত্থমূলকে কেন বটমূল বলেছে, এই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে কেউ যদি হাসতে চায়, হাসতেই পারে, তবে হাসার আগে তার উচিত জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের ‘বাঙ্গালা ভাষার অভিধান’ বইটি দেখে নেওয়া। বাসায় না থাকলে পিডিএফ ফাইল ডাইনলোড করেও নিতে পারে। এরপর ৮৮৯ পৃষ্ঠা বের করলেই তার হাসিমুখ চুপসে যাবার কথা। পঞ্চবট বলা হয়েছে- অশ্বত্থ, বিল্ব, বট, ধাত্রী ও অশোক বৃক্ষকে। এই পাঁচ বৃক্ষকে পঞ্চবটীও বলা হয়।
সঙ্গত কারণেই ছায়ানটের বটমূল নামকরণের মধ্যে হাস্যকর কিছু নেই, বরং আছে জ্ঞানের পাঠ। অশিক্ষা বড় বালাই, সেটা জাহির করা নিজের জন্যই লজ্জার ও অপমানের। এখন কেউ তা জাহির করবে কি করবে না সেটা তার ব্যাপার। তারপরও কিছু লোক ব্যঙ্গোক্তি করবে, হাসাহাসি করবে। বাঙালির শিল্প-সংস্কৃতি নিয়ে এদের পূর্ব-পুরুষেরাও বিদ্রুপ করেছিল, এদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মও তাই করবে। আর বাঙালির শিল্প-সংস্কৃতি আপন গতিতে এগিয়ে যাবে মহাকালের পথ ধরে।
ঢাকা
১৬ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৯