গতকাল থেকে আমার হাসি পাচ্ছে। ভীষণ হাসি পাচ্ছে। হাসি পাওয়ার কারণ হচ্ছে এই যে, কিছুদিন থেকে বিশেষ করে আমার গত পোস্টের পরে গেজেট এন্ড গিয়ার নিয়ে আমার পুরো ফেবুর ওয়াল জুড়ে শোকের মাতম। অন্যের শোক দেখে হাসি পাওয়াটা ঠিক নয়, একেবারেই না। কিন্তু নিজেদের নির্বুদ্ধিতা দেখে আক্কেল সেলামী দেয়া মানুষ গুলোর অবস্থা দেখেই হাসি পাচ্ছে। বলছিলাম গেজেট এন্ড গিয়ারের পাড় ভক্তদের কথা। আমার পরিচিত বহু মানুষ আছে , এমনকি আমি নিজেও ছিলাম একটা সময়, যারা মোবাইল ফোন কেনার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে এক বাক্যে গেজেট এন্ড গিয়ার কে দেবতা তূল্য মনে করতেন। মোবাইলফোনের অনুমোদিত ডিলারের কাছে দামটা কিছুটা বেশী হওয়ায় সবার কাছে একবাক্যে গেজেট এন্ড গিয়ার ছিলো সবচেয়ে পছন্দের। সেই দেবতার মন্দিরের আসল রূপ গতকাল লোকচক্ষুর সামনে চলে এসেছে। ঘটনা কি জানতে চান? বলছি। নিচের নিউজ হেডলাইনটা দেখুন।
গেজেট অ্যান্ড গিয়ারে অভিযান, চার শতাধিক অবৈধ হ্যান্ডসেট উদ্ধার- কালের কন্ঠ
দামি মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানিকারক গেজেট অ্যান্ড গিয়ার থেকে চার শতাধিক অবৈধ হ্যান্ডসেট উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এগুলোর মধ্যে স্যামসাং, নকিয়া, সনি এক্সপেরিয়া, ব্ল্যাকবেরি ও মটোরোলার মতো নামকরা ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেট রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে গেজেট অ্যান্ড গিয়ারের বনানী ১১ এবং গুলশান অ্যাভিনিউয়ের শোরুমে অভিযান চালিয়ে হ্যান্ডসেটগুলো জব্দ করা হয়। অনুমোদনবিহীন, শুল্ক ছাড়া এই সব হ্যান্ডসেটের বেশিরভাগই হচ্ছে ক্লোন বা নকল যা আমরা অনেক আনন্দে কম দামে কিনে রীতিমত ঠকেছি! গতকাল জব্দকৃত এসব সেটের মূল্য জানতে চান? আঁতকে উঠবেন। চোরাই পথে আমদানী কৃত এসব সেটের মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা! এবং সেটের নাই কোন গ্যারান্টি, নাই কোন ওয়ারেন্টি, জব্দ হওয়া মোবাইল হ্যান্ডসেটগুলোর আইএমইআই নম্বরগুলো পর্যন্ত রেজিস্টার্ড নয়। কি পরিমান লাভ এই একটা আমদানীকারক প্রতষ্ঠান একাই করেছে, ভাবা যায়! এইসব সেট গুলো দিয়ে গেজেট এন্ড গিয়ার কর্তৃপক্ষ শুধু গ্রাহকদের সাথে প্রতারনা করছিলো তা না, এইসব সেটের আইএমইআই যেহেতু রেজিস্টার্ড না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাই এসব হ্যান্ড সেটের মালিকদের ট্রেস ও করতে পারবেনা। [মোবাইল ফোনে চাঁদাবাজি কিংবা সন্ত্রাসীদের হুমকি ধামকি দেশে এমনে এমনে তো বাড়েনি!] যেটা কিনা আপনার আমার সকলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ।
উদ্ধার করা সেট গুলো কি করা হয়েছে জানতে চান? এগুলো ঢাকা কাস্টমস বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। চোরাইপথে মোবাইল আমদানির জন্য গেজেট অ্যান্ড গিয়ারের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে। মামলা হওয়াটাই উচিত। তাহলে যদি এইসব ভুয়া হ্যান্ডসেট বিক্রি বন্ধ হয়!