somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই জন্মদিনে.........

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গিফট পেতে আমার বরাবরই ভালো লাগে। আমি নিজে কিন্তু গিফট করি খুব গৎবাঁধা- পড়ুয়া হলে বই। অবশ্য আগে কৌশলে জেনে নেই যেটা দিচ্ছি সেই বইটা তার পড়া কিনা। পড়া বই গিফট করাটা একদম বিব্রতকর। যদি wrapping paperটা খুলে বইটা হাতে পেয়েই বলে ,'ও অমুক? এইটা আমার পড়া বই। তারপরও...থ্যাংকস!' তখনকার অনুভূতিটা বলে বুঝানো যাবে না। কিংবা গিফট করি কফির মগ, রাইটিং প্যাড,পেন্সিল বক্স এইসব। আমার এক স্কুল জীবনের ফ্রেন্ড ছিল যে কখনো ফ্রেন্ডদের বিশেষ কোন উপলক্ষে উপহার দিত না। তার থিওরী ছিল- যদি প্রত্যেক বছর একই উপলক্ষে উপহার দেয়া হয় তখন একটা এক্সপেক্টেশান তৈরি হয়ে যায়। কোন কারণে হয়ত তুমি একবার ভুলে গেলে অথবা হয়তো হাতে টাকা থাকল না- তখন সে আশাভঙ্গের কষ্ট পায়। তত্ত্বটা আমার ভালোই লাগত। আসলে সব সময় তো এত উপহার দেয়া যায় না। আমার বন্ধুদের মধ্যে এই চলটা প্রায় নেই বললেই চলে। হয়ত একপক্ষের অনীহার কারণে বা হয়ত আমার ফ্রেন্ডরাও আমারই মত কারণে অকারণে উপহার দেয়াকে অতটা জরুরী মনে করে না। তবে চুপি চুপি বলি, একেবারে সত্যি কথা- উপহার পেতে কিন্তু চমৎকার লাগে। দিতেও। এজন্য আমি প্রায়ই দু'টো আনন্দ একসাথে পাওয়ার ব্যবস্থা করি। সহজ ব্যবস্থা- নিজেকে নিজে উপহার দেই। দেয়ার আনন্দটাও পাই, পাওয়ার আনন্দটাও পাই। এই যেমন এইবারকার জন্মদিনে গিফট পেলাম দুইটা। একটা আমার বান্ধবী সাবাহর করা (তাও আমার সাথেই গিয়ে কিনল, আমারই পছন্দে!)। আরেকটা আমার নিজের গিফট, একটা ডায়রী। সাবাহকে বললাম,'এই আমাকে ... টা টাকা ধার দে তো' ও: কেন? আমি: ডায়রী কিনব। ও: নে অসুবিধা নাই। আমি: পরে মনে করিয়ে দিস, ফেরত দিয়ে দেব। তোরই কিন্তু মনে করিয়ে দিতে হবে আমি কিন্তু ভুলে যাওয়ারই চেষ্টা করব........ হা হা হা...
ও আমাকে কাঠের একটা ঘর কিনে দিল। টান দিয়ে ঘরের দরজা খুললে একটা কালো চ্যাল্লা ডিং ডিং করে দুলতে দুলতে বের হয়ে আসে। তবে কিনা দরজা একটু আস্তে খুললে বেচারা চ্যাল্লা বের না হয়ে ঘরের ভিতরেই বসে বাতাস খায়। হা হা.... যাই হোক ঘরটা সুন্দর, এজন্যই ওটা আমার পছন্দ হয়েছে। সেলস ম্যান পিচ্চিটা আবার বোকার মত জিজ্ঞেস করে ডায়রী wrap করে দেবে নাকি। আমি বলি, অবশ্যই, অবশ্যই! ওটাও তো গিফট! বেচারা অবাক হয়।
বাসায় নিয়ে আসার পর ছোটবোনটা দেখতে চাইল ডায়রীটা। আমি বললাম, উঁহু, রাত বারোটার পরে খোলা হবে। তখন দেখো। নিজেই এস গিফটের উপর ফ্রম সাবাহ.... ফ্রম মি এইসব লিখে নিলাম। রাত এগারোটা উনপঞ্চাশ মিনিটে অ্যালার্ম দিয়ে রাখলাম, কারণ আমি কোনদিনই ঠিক বারোটার সময়টা ধরতে পারি না। যথারীতি এইবারও পারলাম না, কারণ pm না দিয়ে গাধার মত am এ অ্যালার্ম দিয়েছিলাম। রাত ১২:০১ এ ঘড়ি দেখলাম। রেগে মেগে আবার অ্যালার্ম। ১২:০৩ এ প্রথম উইশ। কার? আমার নিজের। একটা মোমবাতি জ্বললো, happy birthday to me গান গাওয়া হল। এটা আমি সব সময়ই করি। প্রথম উইশটা নিজেকে নিজে। অবশ্য এই বছরের প্রথম বার্থডে উইশটা পেয়েছি বার্থডের বেশ কয়েকদিন আগে... নিজে থেকেই উইশ করল, অবাক হলাম। আরেকজন করল, অবশ্য বলার পর।
তারপর গিফট খুললাম। আগে ফ্রেন্ডেরটা, পরে নিজেরটা। খুলে একটু গাধাই হয়ে গেলাম! গর্দভ রহস্য বালিকাটা গিফট করেছে কিন্তু প্রাইস ট্যাগটা ডায়রীর উপর জ্বল জ্বল করছে!! তাড়াতাড়ি ছিঁড়ে ফেললাম। ছোটবোনটা এসে হাজির। উইশ টুইশ করে বলে, দাম কত নিল ডায়রীর? আমি বলি, আরে, গিফটের দাম কখনো কি জিজ্ঞেস করতে আছে? বলা যাবে না।
-এহ! নিজেই কিনেছে আবার ঢং!
-উঁহু, বলব না।
-বলেন না...
আমি চোখ টোখ বুঁজে মাথা নাড়ি- তা হবে না। বলব না।
.................................................
সকালে ভয়ংকর বিশু স্যারের ক্লাস। এমনিতেই আমি কেমিস্ট্রিতে মাস্টার, তার উপর
আবার বিশু স্যারের ভয়ে অস্থির........ উফ!
কিন্তু আমার সাথে বিশেষ একটা ভীতিকর কিছু ঘটল না (আহ!).....
তিনটা ব্যাড ইভেন্ট বাদ দিলে এইটাই এই বছরের জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে মোবাইলে নতুন রিংটোন এবং ব্যানার আর কম্পিউটারে বসে প্যাঁচালিতে নতুন পোস্ট আর নতুন প্রোফাইল পিকচার দিয়েই মনে হল "আহ! বিশাল পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলেছি!!"
দিন পার। ব্যাস, সব আবার আগের মত! এক বছর বুড়ো হয়ে গেলাম। এখনো ততটা খারাপ লাগছে না, তবে মনে হয় যেন যত দিন যাবে তত অসুখী হব। কেন যে মনে হয়......
লিখতে গিয়ে অনেক বছর আগের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। আমার ছোট ভাই তখন বেশ পিচ্চি। সেদিন ছিল ওর জন্মদিন। সবার মুখে জন্মদিন জন্মদিন শুনে এসে আম্মুকে বলে,'আম্মু আমি জন্ম নিতে যাব।' শুনে আমরা হেসেই খুন...........
রাতে পড়ার মন ছিল না। বসে রাইটিং প্যাডে একটা ব্লগ লিখলাম। কি কপাল! আব্বু সেটাকে হাবিজাবি কাগজ ভেবে ওয়েস্ট পেপার বাস্কেটে চালান করে দিল!!! পোস্ট দিয়ে প্রথম রেটিং আবার পেলাম 'বাজে'!
কিভাবে যেন আমার জন্মদিনে একটা না একটা বদখত ঘটনা ঘটবেই। এবার একটা না ঘটেছে তিন তিনটা! কি আর করা!
...............................
কাল রাতে আবার হঠাৎ এক ব্লগার বন্ধুর অপ্রত্যাশিত কল। দেরিতে উইশ। রাগ করে ছেলেটার মাথা ফাটাবো না মাফ করে দেব ভেবে পেলাম না। এখনো কনফিউজড.........
ভাবছি মাফই করে দেব কিনা........
[ছবি: এই মাত্র তুললাম। ডায়রির উপর ঘর।]
------------------------------------------------------
(লেখাটা প্যাঁচালীতে ১লা জুলাই পোস্ট করেছিলাম। সামহয়্যারেও রাখলাম।)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:০২
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×