ও আমাকে কাঠের একটা ঘর কিনে দিল। টান দিয়ে ঘরের দরজা খুললে একটা কালো চ্যাল্লা ডিং ডিং করে দুলতে দুলতে বের হয়ে আসে। তবে কিনা দরজা একটু আস্তে খুললে বেচারা চ্যাল্লা বের না হয়ে ঘরের ভিতরেই বসে বাতাস খায়। হা হা.... যাই হোক ঘরটা সুন্দর, এজন্যই ওটা আমার পছন্দ হয়েছে। সেলস ম্যান পিচ্চিটা আবার বোকার মত জিজ্ঞেস করে ডায়রী wrap করে দেবে নাকি। আমি বলি, অবশ্যই, অবশ্যই! ওটাও তো গিফট! বেচারা অবাক হয়।
বাসায় নিয়ে আসার পর ছোটবোনটা দেখতে চাইল ডায়রীটা। আমি বললাম, উঁহু, রাত বারোটার পরে খোলা হবে। তখন দেখো। নিজেই এস গিফটের উপর ফ্রম সাবাহ.... ফ্রম মি এইসব লিখে নিলাম। রাত এগারোটা উনপঞ্চাশ মিনিটে অ্যালার্ম দিয়ে রাখলাম, কারণ আমি কোনদিনই ঠিক বারোটার সময়টা ধরতে পারি না। যথারীতি এইবারও পারলাম না, কারণ pm না দিয়ে গাধার মত am এ অ্যালার্ম দিয়েছিলাম। রাত ১২:০১ এ ঘড়ি দেখলাম। রেগে মেগে আবার অ্যালার্ম। ১২:০৩ এ প্রথম উইশ। কার? আমার নিজের। একটা মোমবাতি জ্বললো, happy birthday to me গান গাওয়া হল। এটা আমি সব সময়ই করি। প্রথম উইশটা নিজেকে নিজে। অবশ্য এই বছরের প্রথম বার্থডে উইশটা পেয়েছি বার্থডের বেশ কয়েকদিন আগে... নিজে থেকেই উইশ করল, অবাক হলাম। আরেকজন করল, অবশ্য বলার পর।
তারপর গিফট খুললাম। আগে ফ্রেন্ডেরটা, পরে নিজেরটা। খুলে একটু গাধাই হয়ে গেলাম! গর্দভ রহস্য বালিকাটা গিফট করেছে কিন্তু প্রাইস ট্যাগটা ডায়রীর উপর জ্বল জ্বল করছে!! তাড়াতাড়ি ছিঁড়ে ফেললাম। ছোটবোনটা এসে হাজির। উইশ টুইশ করে বলে, দাম কত নিল ডায়রীর? আমি বলি, আরে, গিফটের দাম কখনো কি জিজ্ঞেস করতে আছে? বলা যাবে না।
-এহ! নিজেই কিনেছে আবার ঢং!
-উঁহু, বলব না।
-বলেন না...
আমি চোখ টোখ বুঁজে মাথা নাড়ি- তা হবে না। বলব না।
.................................................
সকালে ভয়ংকর বিশু স্যারের ক্লাস। এমনিতেই আমি কেমিস্ট্রিতে মাস্টার, তার উপর
আবার বিশু স্যারের ভয়ে অস্থির........ উফ!
কিন্তু আমার সাথে বিশেষ একটা ভীতিকর কিছু ঘটল না (আহ!).....
তিনটা ব্যাড ইভেন্ট বাদ দিলে এইটাই এই বছরের জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে মোবাইলে নতুন রিংটোন এবং ব্যানার আর কম্পিউটারে বসে প্যাঁচালিতে নতুন পোস্ট আর নতুন প্রোফাইল পিকচার দিয়েই মনে হল "আহ! বিশাল পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলেছি!!"
দিন পার। ব্যাস, সব আবার আগের মত! এক বছর বুড়ো হয়ে গেলাম। এখনো ততটা খারাপ লাগছে না, তবে মনে হয় যেন যত দিন যাবে তত অসুখী হব। কেন যে মনে হয়......
লিখতে গিয়ে অনেক বছর আগের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। আমার ছোট ভাই তখন বেশ পিচ্চি। সেদিন ছিল ওর জন্মদিন। সবার মুখে জন্মদিন জন্মদিন শুনে এসে আম্মুকে বলে,'আম্মু আমি জন্ম নিতে যাব।' শুনে আমরা হেসেই খুন...........
রাতে পড়ার মন ছিল না। বসে রাইটিং প্যাডে একটা ব্লগ লিখলাম। কি কপাল! আব্বু সেটাকে হাবিজাবি কাগজ ভেবে ওয়েস্ট পেপার বাস্কেটে চালান করে দিল!!! পোস্ট দিয়ে প্রথম রেটিং আবার পেলাম 'বাজে'!
কিভাবে যেন আমার জন্মদিনে একটা না একটা বদখত ঘটনা ঘটবেই। এবার একটা না ঘটেছে তিন তিনটা! কি আর করা!
...............................
কাল রাতে আবার হঠাৎ এক ব্লগার বন্ধুর অপ্রত্যাশিত কল। দেরিতে উইশ। রাগ করে ছেলেটার মাথা ফাটাবো না মাফ করে দেব ভেবে পেলাম না। এখনো কনফিউজড.........
ভাবছি মাফই করে দেব কিনা........
[ছবি: এই মাত্র তুললাম। ডায়রির উপর ঘর।]
------------------------------------------------------
(লেখাটা প্যাঁচালীতে ১লা জুলাই পোস্ট করেছিলাম। সামহয়্যারেও রাখলাম।)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:০২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






