somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তীর্থ-বাসনা

সোহাগপুর। অজপাড়া গাঁ বলতে যা বোঝায়, ঠিক তাই। আধুনিক জীবনেরর কোন অনুষঙ্গই এখানে প্রবেশ করেনি। এ গ্রামে খন্দকার পরিবারের মর্যাদা সবচেয়ে বেশী, তাঁরাই একমাত্র সম্ভ্রান্ত পরিরার এবং গ্রামের মাথা। গ্রামবাসীর অধিকাংশই কৃষিকাজ করে। গ্রামের একমাত্র মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা খন্দকারদের পূর্বপুরুষ। অপূর্ব স্থাপত্য শৈলী। আয়তনেও বৃহৎ। মসজিদটি বড় হলেও কোন কমিটি নেই এবং কর্মচারী মাত্র দু’জন। ইমাম কাম মুয়াজ্জিন আর ফাই ফরমায়েশ খাটার একটি বালক। ইমামের বেতন ও আনুষঙ্গিক খরচ খন্দকাররাই বহন করে আসছেন প্রতিষ্ঠা অবধি। কিন্তু এ মসজিদে মুছল্লি তেমন হয় না। জুম্মারদিনে জুম্মার নামাজের সময় জনা চল্লিশ হলেও অন্যান্য দিনে ও ওয়াক্তের সাত-আট জন। কোন ওয়াক্তে মাত্র দু’জন। এমনি কোনদিন ফজরের ওয়াক্তে ইমাম কাম মুয়াজ্জিন একাই নামাজ সারেন আর ভাবেন- শেস দুনিয়া বোধহয় এসে গেল, নইলে ধর্মে মানুষের এত অমতি হবে কেন?

গ্রামীণ অনাড়ম্বর জীবন-যাপন প্রণালীতে হঠাৎ একটি ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা ঘটে গেল। অপ্রত্যাশিত, অত্যাশ্চার্য ঘটনা যা গ্রামবাসী স্বপ্নেও কল্পনা করেনি। প্রায় সত্তুর বছর বয়সের ইমাম কাম মুয়াজ্জিন আউয়াল কামারের যুবতী স্ত্রী মোমেনাকে নিয়ে পালিয়ে গেল। সেদিন মসজিদে ভোরের আযান পড়ল না। কারণ, অর্ধরাতেই ইমাম ও মোমেনা গ্রাম ছেড়েছিল। দুপুর না গড়াতেই ব্যাপারটা গ্রামের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত রাষ্ট্র হয়ে গেল। ছিঃ ছিঃ, হায় হায়, আসতাগফি..., নাউযুবি... ইত্যাদি রব উঠতে লাগলো। আউয়ালকে দেখে সবাই মুখ টিপে হাসতে থাকল। কেউ কেউ বলল- ‘তুই কেমন মরদ রে? আশি বছরের বুড়ার সাথে তোর বউ পলে গেল!’ আউয়াল এসব দেখে-শুনে ভিতরে ভিতরে রাগে ফুলতে লাগল এবং তার বলতে ইচ্ছে হল- ‘কেমন মরদ, তোমার বইনগুলাক পাঠে দেন বুঝবার পারবে মুই কেমন মরদ’। কিন্তু মুখ ফুটে তা উচ্চারণ করল না। কোন উত্তর না দিয়েই স্থান ত্যাগ করল। তবু রেহাই নেই। দু’একজন বন্ধু গোছের পড়শি তার পিছনে পিছনে এসে তাকে সহানুভুতি জানালেও সে ভাবল-তারা তাকে নিয়ে উপহাস করছে। সন্ত্রু চাষীর ছেলে বাচ্চু তাকে আন্তরিকভাবে তাকে বলল, ‘আউয়ালরে, মোর মনটা কয় ঐ শালা বুড়া বোদ’য় ভাবিক তাবিজ করি দিওয়ানা বানেয়া নিয়া গেইছে’। আউয়াল ভাবে, হতেও পারে, কারণ মোমেনা অনেকদিন ছোট-খাটো রোগ-ব্যাধি, আশাপূরণ, এমনকি স্বামীর ভালোবাসা পাওয়ার জন্যও তাবিজ-কবচ, পানি পড়া ইত্যাদির জন্য ইমামের কাছে যেত। মোমেনার রূপ দেখে হয়ত ইমাম উল্টো-তাবিজ করে মোমেনাকে নিজের বশ করেছিল। বিচিত্র কি! এ চিন্তা করে মোমেনাকে ক্ষমা করে দিল আউয়াল। কিন্তু বৃদ্ধ ইমামকে সে ছাড়বে না। যদি কোনদিন খুঁজে পায়। আউয়ালের লোহাপেটা সবল পেশি টান টান হয়ে উঠল, হাত মুষ্ঠিবদ্ধ হল সংকল্পে।

শুক্রবার। জুম্মার দিন। অন্যান্য জুম্মার চেয়ে মসজিদে লোক সমাগম তুলনামূলক বেশি। তার কারণও আছে। গত জুম্মার দিনে খুতবার সময় খন্দকার পরিবারের বর্তমান কর্তা হিকমত খন্দকার মুছুল্লিদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘বাহে, তোমারগুলাক মুই কয়টা কথা কবার চাওং। মন দিয়া শোনো। কতা হইল, হামার বাপ-দাদারা এ মজ্জিদ বনাইছিল যাতে তোমরাগুলা, মানে এ গ্রামের মানুষগুলা নামাজ-কালাম পইড়বার পারে, আল্লাক ডাকবার পাড়ে, আল্লাহর খেদমত কইরবার পারে। মেলা বড় শহরতও এমন মজ্জিদ নাই। এতবড় মজ্জিদ, য্যাটে চাইর-পাঁচশ’ নামাজি নামাজ পইড়বার পারে, স্যাটে এক কাতার মানুষে হয় না! তোমরায় কও আল্লা’র গজব নামতে কতক্ষণ? আর এই মজ্জিদের সম্মানে বা থাকিল কোটে? হামার বংশের ইজ্জতে বা থাকিল কোটে?’ সন্ত্রু মনে মনে বলল, ‘ব্যটায় কয় কি? ওমার মজ্জিদোত নামাজ না পড়লে ওমার সম্মান থাকে না! ওমরা কি আল্লার সাগাই?’ একটু কেশে গলা পরিষ্কার করে নিয়ে হিকমত খন্দকার আবার শুরু করলেন, ‘গ্রামোত এত মাইষের মদ্দত একআনা মানুষও আল্লার রাস্তাত নাই! সেই জন্যে মুই সোগারে কতা চিন্তা করিয়া এই মজ্জিদোত নামাজ-কালাম আর কোরান শিক্কার ব্যবস্তা কইরবার চাওং। সামনের শুক্রবার তোমরা সোগায় নিজের সাথে করি এক-দুইটা মিলের মানুষ, ব্যাটা-ভাই-ভাতিজা সোগাকে জরে-পল্টে সাথোত নিয়া আসমেন। সোগারে সাথে নয়া ইমামের সাক্ষাৎ করি দিম। আগের ইমাম ব্যাটা তো... থাউক সে কতা।’ বোধহয় নিজের ব্যক্তিত্ব ক্ষুন্ন হবে ভেবে হিকমত খন্দকার সে প্রসঙ্গ আর উত্থাপন করলেন না। তারপর বললেন, ‘আলীয়া মাদ্রাসার ফাজিল পাশ, কোরানোতো হাফেজ, নয়া ইমাম আল্লার ওয়াস্তে তোমারগুলাক কোরান আর নামাজের মছলা, হায়-হাদিস শিখাইবে।’

নতুন ইমামের সাথে সকলের পরিচয় হল। নাম হামিদুল ইসলাম, তরুণ, বয়স পঁচিশ-ত্রিশ হবে। নূরাণী চেহারা, মুখভর্তি কালো কুচকুচে দাঁড়ি, মাথায় পাগড়ি। ইমামকে দেখে সকলের ভালোই মনে হল। কিন্তু অনেকে শঙ্কিতও হলেন পূর্বের ঘটনা মনে করে। যেখানে বৃদ্ধ ইমাম এমনর বেহায়াপনা করল, সেখানে এ তরুণ ফাজিল পাশ ইমাম না জানি কি ফাজলামি করে বসে, অঘটন ঘটায়। নতুন ইমাম সেদিন হতেই কাজে বহাল হলেন। জুম্মার নামাজ তার ইমামতিতেই অনুষ্ঠিত হল। প্রতিদিন এশার নামাজের পর কোরআন শিক্ষার সময় নির্ধারণ করা হলে যথারীতি কোরআন তালিম শুরু হল। ‘আলিফ’, ‘বে’, ‘তে’ ধ্বনিতে প্রকিম্পিত হতে থাকল মসজিদের পরিপার্শ্ব। কিছুদিন পর দেখা গেল, বয়স্কদের তুলনায় যুবক-তরুণরাই দ্রুত শিক্ষায় অগ্রসর হচ্ছে। তাদের স্মরণশক্তিও বেশি। পনের-বিশ দিন পর দেখা গেল অনেক বয়স্কলোকেরা অক্ষর পর্যন্ত চিনতে পারছেন না। নুক্তার ওলটপালটই করছেন বেশি। যেমন বলছেন, ‘বে’ তে দুই নুক্তা প্রভৃতি।

সন্ত্রুর বয়স পঞ্চাশ বছর। এক সন্তানের জনক। স্ত্রী গত হয়েছে বেশ ক’বছর হল। পেশা কৃষি কাজ। বাস্তুভিটা ছাড়াও তার পাঁচবিঘা আবাদী জমি আছে। সন্ত্রুও কোরআন শিখছে। প্রথম প্রথম একটু লজ্জা পাচ্ছিল সে, এই বয়সে আবার আরবি শিখবে?- এই প্রশ্নের সম্মুখিন হয়ে। পরে ‘শরম করলে গরম ভাত মেলে না’ এই চিন্তা করে শেখার সিদ্ধান্তই নিয়েছে এবং যথাসাধ্য মনোযোগ দিয়েই শিখছে। অন্যান্য সমবয়সীদের তুলনায় সন্ত্রু বেশ ভালো শিখছে। সে জানে, একেকটা হরফে কতই না ‘নেকি’ লুকিয়ে আছে। যখন সে মসজিদে কায়দা নিয়ে পড়তে থাকে ‘আলিফ’ যবর ‘য়া’, ‘বে’ যবর ‘বা’ তখন তার এক অদ্ভূত অনুভুতি হয়, মনে হয় সে যেন অন্য ভূবনে বাস করছে। মনটাও হালকা হালকা লাগে তখন তার। যখন প্রতিদিন কোরআন শেখা শেষে বাড়ি ফিরে আসে তখনও অনেকক্ষণ আচ্ছন্ন হয়ে থাকে সে। আরবি অক্ষরগুলো তার চোখের সামনে ভাসতে থাকে এবং কর্ণকূহরে ধ্বনিত হতে থাকে সেগুলোর উচ্চারণ। ইদানিং সন্ত্রু মৃত্যুর কথা খুব স্মরণ করে। শুধু মৃত্যু নয়; মৃত্যুর পর কি হবে? কোথায় যাবে? দোজখ-বেহেস্ত, কবর আজাব, ছওয়াল-জবাব ইত্যাদি প্রসঙ্গও বাদ পড়ে না তার চিন্তা থেকে। এবং সে এটাও ভাবে বয়স হলেই বোধহয় মৃত্যুচিন্তা মানুষকে এইরূপে পেয়ে বসে। কই জোয়ান থাকতে সেতো এভাবে এসব কখনও চিন্তা করেনি। তার মনে পড়ে, কবে-কখন সে ছোট-বড় নানা পাপ করেছিল। যেমন, একবার রমজান মাসে রোজা রেখেও সে চুপিচুপি খৈনি খেয়েছিল। আর একবার, বিয়ের আগে, যাত্রাপালা এসেছিল সোহাগপুরে। ধরলা নদীর ধারে ‘প্যান্ডেল’ তুলেছিল। রাতে যাত্রা দেখে এসে সন্ত্রু সারারাত ঘুমাতে পারেনি, একজন নাচনেওয়ালীর রূপের কথা মনে করে এবং তারই রূপের মোহে সে প্রায় প্রতিদিনই যাত্রা দেখেছিল তার পরের দিন থেকে। সে সময় একদিন ভোরে সন্ত্রু মাছ ধরতে গিয়েছিল নদীর পাশের ¯্রােতহীন একটা জলাভূমিতে। সেখানে প্রচুর মাছ। দিনের মধ্যে অন্যান্য সময়ে সেটি বহুলোকের দখলে চলে যায়। তাই সন্ত্রু ভোরবেলা গিয়েছিল। মাছ ধরতে ধরতে দেখতে পেয়েছিল, একটু দূরে, নদীতে ওই রূপসী নাচনেওয়ালী একা স্নান সারছে। এমনিতে সন্ত্রু ছিল লাজুক প্রকৃতির। মেয়েদের বেলায় তা প্রকাশ পেত আরো বেশি। তবু ওইদিন তাকে স্নানরতা দেখে এবং আশেপাশে কাউকে না দেখতে পেয়ে আবেগের তাড়নায় দিগ্বিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে ছুটে গিয়ে সজোরে জড়িয়ে ধরেছিল নাচনেওয়ালীকে। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠে আত্মস্থ হয়ে নাচনেওয়ালী বলেছিল, ‘ট্যাকা আছে, ট্যাকা? সন্ত্রর কাছে টাকা ছিল না। তাই উত্তর দিয়েছিল ‘নাই’। নাচনেওয়ালী তখন নিজের আলিঙ্গন থেকে নিজেকে মুক্ত ক’রে রুক্ষ কণ্ঠে-‘ট্যাকা নাই তা মোর বাল খা’ বলে পশ্চাৎদেশ দুলিয়ে দুলিয়ে চলে গিয়েছিল। আর একবারতো সন্ত্রু খোদ আল্লাহকেই অভিশাপ দিয়েছিল, যখন তার প্রথম ছেলে মাত্র সাত বছর বয়সে মারা গিয়েছিল। সন্ত্রুর একটা দীর্ঘশ্বাস পড়ে মৃত ছেলের কথা মনে হতেই।-হ্যাঁ, তার প্রথম ছেলের নামও ছিল বাচ্চু। সাত বছর বয়সে বাচ্চু প্রচন্ড অসুস্থ হয়েছিল। খাওয়ার রুচি নেই, সব সময় বমি-বমি ভাব, থেকে থেকেই খিঁচুনি, দিন দিন রোগা, হাড়সর্বস্ব হয়ে যাচ্ছিল। সদরে এম.বি.বি.এস ডাঃ সোবহান প্রতি সোমবার বসত। বাচ্চুকে দেখে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তার বলেছিল, ‘সম্ভবত ক্যান্সার হয়েছে, ব্লাড ক্যান্সার। বাঁচার আশা নেই।’ কিন্তু তবুও সন্ত্রু আশা ছাড়েনি।-‘বাঁচা-মরা তো আল্লাহর হাতে’ ভেবে। বিভিন্ন কবিরাজ, ফকিরের তাবিজ-কবজ দিয়ে বাচ্চুর হাত ও গলা ভরে উঠেছিল। একজন ফকির বলেছিল, বদ জ্বীন নাকি বাচ্চুর শরীরে আছর করেছে। সে জ্বীনকে তাবিজ-কবজ, ঔষধ দিয়ে তাড়ানো যাবে না। বাচ্চুকে নাপাক বস্তু খাওয়ালেই তবে সে জ্বীন পালাবে, বাচ্চু সুস্থ হয়ে উঠবে। তাই বাচ্চুকে মানুষের পায়খানা পর্যন্ত খাওয়াতে ছাড়েনি সন্ত্রু। একটি কাঁথা সেলাইয়ের সূঁচ মানুষের তাজা পায়খানায় চুবিয়ে নিয়ে সে সূঁচ আবার পা’রুটির একপ্রান্তে প্রবেশ করিয়ে অন্য প্রান্ত দিয়ে বের করে নিয়ে সেই পা’রুটি বাচ্চুকে খাইয়েছিল। তবুও বাচ্চু বাঁচেনি। আর সেই দুঃখে-ক্ষোভে সে চিৎকার করে উর্ধ্বে মুখ-হাত তুলে আল্লাহকে অভিসম্পাত করেছিল। বলেছিল- ‘রে আল্লা, তোর মনোত কি একনাও দয়া-ময়া নাই? মোর নিষ্পাপ ফুলের মতোন ছাওয়াটাক তুলি নিলু! তোর আরশ কাঁপিল না! তোর ভালো হবার নয়, তোর ভালো হবার নয়’- এমনি অর্থহীন বিলাপ। পরে তার যে ছেলেটি হয়, স্ত্রীর শত বাঁধা উপেক্ষা করেও সন্ত্রু প্রথম ছেলের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তারও নাম রেখেছিল বাচ্চু।

আজ সেসব কথা স্মরণ করে সন্ত্রু শিউরে উঠলো। আল্লাহ কি তাকে ক্ষমা করবে? নিশ্চয়ই করবে। ইমাম সাহেব তাকে বলেছিলেন, পাপ করে খাঁটি মনে তওবা করলে আল্লাহ তার পেয়ারী বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। এসব চিন্তা-ভাবনা করতে করতে সন্ত্রু সিদ্ধান্ত করে ফেলে সে এবার হজ্ব করতে যাবে। ইমাম সাহেব বলেছিলেন এবছর হজ্বের সময় সমাগত প্রায়। কিন্তু হজ্ব করতে গেলে টাকার প্রয়োজন। সে টাকা পাবে কোথায়? নিজের বলতে আছে বাস্তুভিটাটুকু আর বিঘা পাঁচেক ধানি জমি। হজ্ব করতে গেলে যে টাকার দরকার তা যোগার করতে হলে সবগুলো ধানি জমি বিক্রয় করতে হবে। তাহলে খাবে কি? পরে যা হবার হবে। সন্ত্রু অতর্কিতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে ধানি জমি বিক্রয় করে সে হজ্বে যাবে। সন্ত্রু আবার ভাবে, তার ছেলে তো প্রচন্ড বৈষয়িক, কোনমতেই সে জমি বিক্রয় করতে দেবে না তাকে। যদিও জমিগুলো সন্ত্রুর নিজের নামে আছে। কাজেই সে একটা ফন্দি বের করল, যাতে বাচ্চুকে কিছুদিনের জন্য অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়ে নির্বিঘ্নে জমি বিক্রয় করতে পারে।

একদিন সন্ত্রু ফজরের নামাজ আদায় করে এসে ছেলেকে ডেকে বলল, ‘আরে অ বাচ্চু, ঘরোত আছিস বাবা? একনা শোনেক তো।’ ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতে আসতে বাচ্চু বলল, ‘আছোং, কি কইমেন কন।’
- ধর্ম-কর্মত একনা মন দে, বুঝলু?
- ক্যানে! মুইতো পাঁচ অক্ত নামাজে পড়ং।
- কোটে তা আইজ মজ্জিতোত দেখনু?
- আইজ বাড়িতে পড়নু।
- খালি নামাজ পড়লে হয় না রে, এই বয়সে আরো মেলা দায়-দায়িক্ত আছে। মুই কওং কি, বেশশোত্বার তাবলিগের জামাত থাকি ‘চিল্লা’ত যাইবে চল্লিশ দিনের জন্যে। নওমার সাথে তুইও যা ক্যানে।
- ট্যাকা কোটে পাইম? ট্যাকা? চল্লিশ দিনের জন্যে গেইলে তো মেলা ট্যাকা নাগবে। আর এদিককার কাম-কাজ কায় করবে?
- ট্যাকা আর কত নাগবে? ডের হাজার হইলে হইবে। হাজার ট্যাকা নাহয় মুই দেইম এ্যালা। বাকিটা তোর গোরত হবার নায়?
- হইবে।
- এইদিককার কাম-কাজ আর কি? ওইকনা মুই দেইখবার পাইম। তাইলে যাবু?
- হু, যাইম।

এত সহজে কাজ হাসিল হওয়াতে সন্ত্রু খুশিই হল। তবে একহাজার টাকা তাকে গুণতে হবে। তা হোক। এদিকে বাচ্চুর মনেও কোন সন্দেহ জাগেনি। বরং চিল্লা’র অছিলায় নতুন নতুন স্থানে সে ভ্রমণ করতে পারবে তা ভেবেই সে রাজি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বাচ্চু ‘চিল্লা’ চলে গেলে, সন্ত্রু জমিগুলোর হিল্লা করতে প্রস্তুত হল সেদিন থেকেই। খন্দকার বাড়ি গিয়ে হিকমত খন্দকারকে সালাম দিয়ে তার মনোবাঞ্ছা ব্যক্ত করল। হিকমত খন্দকার তামাক টানছিল। সন্ত্রু বলল, ‘খন্দকার স’ব একনা কতা আছিল।’
-ক।
- মোর যে ধানি জমি আছে পাঁচবিঘা, তাক মুই বেচবার চাওং।
-ক্যানে? কি এমন ঠেকা পড়িল যে, জমি বেচা নাগবে? খন্দকার কথাগুলো এমনভাবে উচ্চারণ করলেন, যেন সন্ত্রু জমি বিক্রয় না করলেই তিনি খুশি হন। কিন্তু স্বভাবজাত কারণে তার চোখ লোভে চকচক করে উঠল।
-মানে মুই এবার হজ্ব কইরবার যাবার চাওং।
খন্দকার এমন উত্তর আশা করেননি। তিনি অবাক হলেন এই ভেবে যে, তাঁর এত ধন-সম্পত্তি, মান-মর্যাদা অথচ তিনি কখনও হজ্বে যাবার কথা চিন্তাও করেন নি। তাদের বংশে একমাত্র হাজ্বী ছিলেন তার তিনপুরুষ পূর্বে। তার দাদার বাবা। হাজী ইসমাইল খন্দকার। হিকমত খন্দকার যেন এটা মেনে নিতে পারছেন না। যেন শোনেননি, এমনভাবে বললেন,-‘কি কলু?’
- মুই এবার হজ্ব কইরবার চাওং। তা, তারে ব্যাদে জমিগুলা ব্যাচেয়া ট্যাকা জোগার করিম। কয়দিন আর বাঁচিম কন?
খন্দকার সাহেব চিন্তায় পড়ে গেলেন। ভাবলেন, একেই বোধহয় বলে, ‘গরীবের ঘোড়া রোগ’। এ অঞ্চলে কেউ যদি জমি বিক্রয় করে খন্দকার পরিবারই তা কিনে নেয়। এটা একরকম প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খন্দকার দ্বন্দ্বে পড়ে গেলেন, সন্ত্রুুকে তিনি কি বলবেন? যদি খন্দকার জমিগুলো কিনে নেন তবে সন্ত্রু হজ্জ্বে যাবে এবং হাজ্বী উপাধী লাভ করবে। খন্দকার তা মানতে পারছেন না। খন্দকার যদিও শুনেছিলেন যে হজ্জ করতে গেলে বাণিজ্য করা যায়। অর্থাৎ হজ্জ থেকে ফেরার সময় মক্কা-মদীনা ‘মানওয়ারা’ থেকে হালকা কিছু বিলাস দ্রব্য যেমন স্বর্ণালঙ্কার ইত্যাদি কিনে এনে দেশে বিক্রয় করলে হজ্জ্বে যাবার খরচটাই উঠে আসে, হজ্জ্বও আদায় হয়। মানে এক ঢিলে দুই পাখি শিকার হয়। তবু কোনদিন তাঁর হজ্জ্বে যাবার ইচ্ছে জাগেনি। কারণ, তিনি দূরের যাত্রাকে ভীষণ ভয় পান, নিজ গ্রামের মত স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না কোথাও। এমনকি রংপুর গেলেও তাঁর অস্বস্তি লাগে। সবাই কেমন অপরিচিত আর কেউ-ই তাকে সালামও দেয় না, এসব সব কারণে। তাছাড়া লোহার তৈরী কল আকাশে উড়ে কিংবা জলে ভাসে- এটা বিশ্বাস করেও যেন তাঁর বিশ্বাস হয় না। যদি আকাশে উড়তে উড়তে বিমানটি মাটিতে মুখ থুবড়ে পরে যায় অথবা জাহাজ ডুবে যায জলে, তা হলে তো জীবনের ইতি এবং যেহেতু হজ্জ্বে যাবার পথেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু, সেহেতু সরাসরি বেহেস্ত নসীব, কিন্তু তবুও তিনি ওভাবে বেহেস্তেÍ যেতে গররাজী। বছর পাঁচেক আগে একটি হেলিকপ্টার দেখার সৌভাগ্য তাঁর হয়েছিল। সোহাগপুরে সেবার প্রচন্ড ঘুর্ণিঝড় হয়েছিল। ফলে, এ পল্লীর দুর্দশা পরিদর্শনের জন্য স্বয়ং প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টারে করে এসেছিলেন। হেলিকপ্টারটির ভুমিতে অবতরণের দৃশ্য এখনো তাঁর চোখে ভাসে। ফড়িঙের মতো লোহার তৈরী যানটি দু’পায়ে ভর দিয়ে মাটিতে দাঁড়িয়ে ছিল এবং উপরের প্রপেলারের ঘুর্ণনের সন্ত্রাসে চতুর্দিকের গাছপালা ঘুর্ণিঝড়ের মতোই কেঁপে-কেঁপে উঠেছিল। খন্দকারের কেন যেন মনে হয়েছিল, এই লোহার যন্ত্রটা বোধহয় আর উড়তে পারবে না। এসব চিন্তার মধ্যেই খন্দকার ভাবলেন সন্ত্রুর জমিগুলো উৎকৃষ্টমানের, উর্বর ধানি জমি। এই সুযোগে সস্তায় সেগুলো হস্তগত করতে পারবেন। খন্দকার সাহেবকে চিন্তিত দেখে সন্ত্রু বলে উঠল- ‘কি চিন্তা করোচেন?
-নোয়ায় কিছু ! তোর জমিতো বাথানের উত্তর কানিত, দোলার পাকে, নোয়ায়?
- হয়।
খন্দকার কিনতে রাজিই হলেন। বললেন, ‘ক কত করিয়া বিঘার দাম চাইস?’
এখানে প্রতি বিঘা জমির মুল্য বিশ থেকে পঁচিশ হাজার টাকার মধ্যে। বিঘা প্রতি পনের হাজর টাকা মূল্যেরও জমি আছে। তবে সেগুলো তুলনামুলক অনুর্বর অথবা নিচু, যেখানে ছ’মাসই জল জমে থাকে। শেষে আলাপ আলোচনা ক’রে বিঘা প্রতি পনের হাজার টাকা দরে পাঁচ বিঘা জমির মুল্য হলো পঁচাত্তর হাজার টাকা। যদিও মেপে দেখা গেল জমি সোয়া পাঁচ বিঘা এবং সবগুলো জমিতেই ধান রোপণ করা হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে তা পাকবে। জমির মালিকানা পরির্বতনের ফলে ধানগুলোও নতুন মালিকের হবে। তারপরও খন্দকার বললেন,‘রেষ্ট্রি খরচা বাবদ পাঁচ হাজার ট্যাকা কাটি নেইম।’ তাতওে সন্ত্রু রাজি হল।


দলিল তৈরী হবার সপ্তাহ খানের পরে দু’জনের ক’জন সাক্ষীকে নিয়ে বার মাইল দুরে সদরের রেজিষ্ট্রি অফিসে উপস্থিত হলেন। সাক্ষী- সাবুদ যারা ছিলেন তারা দলিলে টিপসহি দিয়ে দিলে খন্দকাির সাহেব সন্ত্রুকে বললেন, নে’। এ্যালো এইটে সই দে; তাইলে হয়া যায়, ট্যাকাও এ্যালায় দিয়ে দেওছোং।’ সন্ত্রুর একটু যে খারাপ লাগছে না,তা নয়। কিন্তু তীর্থে যাবে পাপমোচন করতে, এ যে তার পরম সৌভাগ্য। সেজন্য এতটুকু ত্যাগ স্বীকার সে করতেই পারে। সন্ত্রু দলিলটি টেনে নিয়ে বলল,’ এই এইটে সই করিস?’
-হয়।
সন্ত্রু ষ্টাম্পের হলুদাভ অংশের স্বাক্ষরের ফাঁকা স্থানটিতে কলম ঘষে স্বাক্ষর করতে শুরু করল। বাকি সবার দৃষ্টিও সেদিকে। স্বাক্ষর শেষে দেখা গেল, তার নামের পরিবর্তে স্বাক্ষরের স্থানে দুর্বোধ্য, প্যাঁচানো আরবি অক্ষর ফুটে উঠেছে। সন্ত্রু সেদিকে হতভম্বের মতো তাকিয়ে আছে। খন্দকার বলে উঠলেন, ‘মস্করা করার আর জা’গা পাইস না, না? নাম সই না করি এইগ্লা কি হাবিজাবি লেখলু, হ্যাঁ?! কয়টা আরবি শিখছিস দেখিয়া সউগটে দেখাবার নাগবে? তামাশা পাইছিস? দলিল তৈয়ার করতে মোর তিনশ’ ট্যাকা নাগছে।’ সন্ত্রু নিজেও বুঝতে পারেনি ব্যাপারটা কি ঘটল। সে বলল, ‘মুই তো নাম সই কইরবারে চানু। না হইলে মুই কি করিম কন? স্বাক্ষীদের একজন বলল, ‘অয় বোদ’য় আরবি দিয়া নাম সই করছে। হেঃ হেঃ হেঃ।’ সে হাসি অন্য কারও মধ্যে সংক্রমিত হল না। খন্দকার পুনরায় বললেন, ‘সন্ত্রু মোর সাথে কি মস্করা শুরু করলু ক’তো? মোর দলিল তৈয়ার করার ট্যাকাটায় মাটি হইল। ফির সদরত দৈৗড়াদৌড়ির খাটনিও বেত্থায় গেল, তুই মানুষটায় ভাল নোয়াইস, প্যাটে প্যাটে খালি শয়তানি।’ সন্ত্রু এমনি ঘটনার আকস্মিকতায় বিহ্বল তার উপর খন্দকারের তিরস্কার শুনে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল, ‘তোমার সাথে মুই মস্করা করিম ক্যানে? তোমরা কি মস্করার নোক? না মোর দুলাভাই? জমি ব্যাচা তো মোরে ঠ্যাকা। মুই ক্যানে সউগ ঠিক করিয়া ধানাই-পানাই করিম। এতো কওছোং মুই নিজের ইচ্ছাত ঐল্লা লেখং নাই।’ সন্ত্রু রাগে দলিলটি ছিঁড়ে ফেলে কাগজের ঝুঁড়ির মধ্যে ফেলে দিয়ে বলল, ‘তোমার সউগ মিলিয়া কত টাকা খরচ হইছে মোক কন মুই দিয়া দেইম।’ তৎক্ষণাৎ-‘উ-ম-ম ট্যাকা এল্যা হইছে, হজ্ব করবে! ফকিরের পুত, ব্যাটা বেঈমান...’ ইত্যাদি বলতে বলতে খন্দকার চলে গেলেন। স্বাক্ষীরাও খন্দকারকে অনুসরণ করল। খন্দকারের আর দোষ কি এতো ভালো জমিগুলো কত অল্প দামে কিনতে পারতো তা আর হল না। রাগ হওয়াই স্বাভাবিক। কিছুক্ষণ পর সন্ত্রুও বাড়ির পথে চলল। সন্ত্রু ঘটনাটি উপলব্ধি করতে পারছে না। হাঁটতে হাঁটতে ভাবছে কেন এমন হল। সে তো তার নামই লেখার চেষ্টা করেছে। তার পুরো নাম মোঃ সহিদুল ইসলাম। কিন্তু তার পরিবর্তে কি সব আরবি অক্ষর কেন ফুটে উঠল? আল্লাহ তাকে নিয়ে কি রসিকতা করছে? জমি বিক্রয় হল না। হজ্বও যাওয়া হবে না। এতে যেন তার স্বস্তিও হল। এ গ্রামে সন্ত্রুদের আমলের লোকজন এবং নিজের সমগোত্রীয়দের মধ্যে একমাত্র সন্ত্রুই নাম সই করতে পারত। আর বানান করে কিছু কিছু বাংলাও পড়তে পারত। সে কিনা আজ নাম সই করতে পারল না! তার বদলে ...। এসব চিন্তা করতে করতে প্রায় এক মাইল পথ আসার পর সন্ত্রু মনে করল, ওই আরবি লেখাগুলোর মানে কি? নিশ্চয়ই কোন অর্থ আছে। ইমাম সাহেবকে দেখালে হয়ত বলতে পারবেন। তাই সে ঘুরে আবার সদরের দিকে হাঁটতে লাগল। কারণ রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিলটি ফেলে এসেছে। অফিসে গিয়ে পরিত্যক্ত কাগজের ঝুড়িতে ছেঁড়া দলিলটি পেল বটে কিন্তু স্বাক্ষরের স্থান অর্থাৎ যে স্থানটিতে আরবি অক্ষরগুলো ফুটে উঠেছিল সেটি খুঁজে পাওয়া গেল না। সন্ত্রুর বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত হল। তবু মাথা থেকে ঐ চিন্তা যাচ্ছিল না। সন্ত্রু বাড়িতে এসে তার নাতনির স্লেটে খড়িমাটি দিয়ে নাম লিখতে আরম্ভ করল এবং লিখতেও পারল। এবার আর আরবি অক্ষর ফুটে উঠল না। সে আননন্দে শিশুর মতো চিৎকার করে উঠল, ‘পাইছুং পাইছুং মুই মোর নাম সই কইরবার পাইছুং।’

অবশেষে তার আনন্দ আরও বেড়ে গেল কেননা কিছুদিন পর যখন শোনা গেল সোহাগপুর গ্রামসহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের হজ্ব যাত্রীরা যে এজেন্টকে টাকা দিয়েছিলÑ পাসপোর্ট, ভিসা, মক্কা-মদীনায় বাড়ীভাড়া ইত্যাদির ব্যবস্থা করার জন্য সেই এজেন্ট সকল হজ্বযাত্রীর টাকা আত্মসাৎ করে নিরুদ্দেশ হয়েছে। সন্ত্রু এ খবর শুনে ভাবল, ‘আল্লাহ যা করে মঙ্গলের জন্যই করে’।



সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৯
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×