somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টাইম পাস বা ব্লগর ব্লগর

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সত্যিকার অর্থে সিরিয়াস ভাবে ব্লগিং করি না বহুদিন। হঠাৎ করে অফিসের কাজের প্রেসার ব্লগিং এ অনিয়মিত হবার প্রথম কারণ। দ্বিতীয় কারণ, আমার সিনিয়র বসেরা ব্লগিং, সাহিত্য চর্চা এসব ভালো ভাবে নেয় নাই। আর সবচেয়ে বড় কথা অফিসে বসে ব্লগিং বা সাহিত্যি চর্চা করার মতো কাজটা যে ঠিক না এই বোধটা তখন আমার মাঝে কাজ না করলেও একটা অভিমান অভিমান ভাব কাজ করতো। প্রায়ই এক কলিগ জিজ্ঞেস করতো ,
তুমি এখন লেখ না কেন? ব্লগিং করো না কেন?

আমিও কপট রাগ দেখিয়ে বলতাম, তোমরা দেশের একজন সাহিত্যিককে কাজের প্রেসার দিয়া সাহিত্যের জগত থেকে বিদায় করে দিছো, এখন আর লিখে কি হবে!

আর ব্লগিং না করলে, কেউ যদি নিজের ভিউ বা লেখাটা না পড়ে, সেটাও আগ্রহ হারাবার কারণ। দেখা গেলো যাদের সাথে ব্লগিং এর কারণে একটা আন্তরিকতা গড়ে উঠেছে, তারাও সেই সময় ব্লগে অনুপস্থিত। তখন না ইচ্ছা করে লেখা পোস্ট দিতে, না ইচ্ছা করে কারো লেখা পড়তে! না লিখতে লিখতে আমার মাঝে একটা আলসেমিও কাজ করেছে। কেউ কেউ বলেছে রাইটার্স ব্লক, তাই হয়তো এমন হচ্ছে। আসলে এই ব্লক জাতিয় কিছু না জাস্ট এখন কেন জানি ইচ্ছা করে না লিখতে, পড়তে।

আমি খুব গল্পের বই পড়তাম। সবার আগে আমি ছিলাম পাঠক। আমার পাঠক সত্তাটা কই যেন হাওয়া হয়ে গেলো। অনেক অনেক দিন কয়দিন আগে একটা থ্রিলার উপন্যাস শেষ করলাম একটানা বসে। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীনের লেখা " এখানে রবীন্দ্রনাথ কখনো খেতে আসেন নি "। পড়ে হতাশ হয়েছি। ভালো লাগে নাই। লেখকের লেখা পড়ে মনে হয়েছিলো উনি খুব জ্ঞানি এটাই উপন্যাসের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে। খুব সহজেই একটা মন্তব্য করে ফেললাম বইটা নিয়ে, আমাকে লিখতে দিলে হয়তো এক কোণাও পারবো না লিখতে। পাঠক হিসাবে কিছু কথা আমরা বলতেই পারি। এটাও তেমন একটা কমেন্ট। এই বইটা কেউ পড়েছেন?

এরপর আরেকটা বই পড়া ধরলাম। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজির " অলীক মানুষ"। ৫২ পাতা পর্যন্ত পড়ে রেখে দিয়েছি। তবে চমৎকার একটা উপন্যাস নিঃসন্দেহে। যে সময়কার লেখা এই বই সে সময়ের হিসাবে লেখকের মনন, চিন্তা ভাবনা অনেক আধুনিক। পুরো উপন্যাসটা পড়ার আগ্রহ কেমন করে যেন হারিয়ে ফেললাম। এরপর গার্সিয়া মার্কেজের " নিঃসঙ্গতার একশো বছর" ধরেছিলাম, ৩৭ পাতা পর্যন্ত পড়ে সেটাও আর ধরা হয়নি।

যখন আমার ব্লগিং এর শুরু তখন কাণ্ডারি অথর্ব, কাল্পনিক ভালোবাসা, মামুন রশীদ ভাই, হাসান মাহবুব, স্বপ্নবাজ অভি, আলাউদ্দীন, দূর্জয়, নাহোল, সোনালী ডানার চিল, কবি আরও অনেকেই তখন সেসময় অনেক ব্লগিং করতো। তাদের সাথে সময়টা নিঃসন্দেহে ভালো ছিল। এরপর বৃতি, তনিমা, মাঈনউদ্দিন মইনুল ভাই, অদৃশ্য, বোকামানুষ, প্রোফেসর শঙ্কু, সিফাত, সাদিয়া, রাবেয়া রব্বানি, সিফাত, শ্যামল জহির ভাই এদের সাথেও ভালো একটা সময় গিয়েছে। আমিই কেন জানি অনিয়মিত হয়ে গেলাম। কেউ কেউ বলে আমি সুখে সুখে দিন কাটিয়ে অলস হয়ে গেছি। কেউ কেউ নুহা সিরিজটা আবার শুরু করতে বলে।

আমারও ইচ্ছে করে। এখন অফিসের কাজের চাপ কম, বসেরাও আগের মতো কঠিন নেই। কিন্তু আমিই আর আগ্রহ পাচ্ছি না ব্লগিং বা লেখালেখিতে নিয়মিত হতে। ইচ্ছে ছিল ২০১৬ তে একক বই বের করব। আমার ছেলে বাবুইকে কথা দিয়েছিলামও। কিন্তু সেই কিন্তুর চক্করে পড়ে সব ভেস্তে গেছে।

লেখালেখি আর ব্লগিং তো বর্তমানের এক আতংকের বিষয়ও হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবার জীবনের নিরাপত্তা কামনা করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৪
৪৯টি মন্তব্য ৪৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×