somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা একাডেমীর খামখেয়ালীপনাঃ ব-দ্বীপ প্রকাশনকে বইমেলা থেকে বঞ্চিতকরণ

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মাথাব্যাথা কেন? ব-দ্বীপ প্রকাশন আমার একটি বই প্রকাশ করেছে। প্রথমে বইটি প্রকাশের কাহিনীটি বলি একটু।

জীবনের বাস্তবতার মুকাবিলায় লেখালেখি থেকে অনেকটা দূরে প্রায় অর্ধদশক সময়। এবার ডিসেম্বরে বাংলাদেশে গিয়ে ব-দ্বীপ প্রকাশনের মালিক শামসুজ্জোহা মানিক ভাইয়ের বার্তা পেলাম। ২০০৪-০৫ সালে মুক্তমনায় (mukto-mona.com) প্রকাশিত আমার কয়েকটি প্রবন্ধ নিয়ে একটা বই বের করতে চান। লেখাগুলো রেডি করে দিতে হবে এক সপ্তাহের মধ্যে।

মানিক ভাইয়ের সাথে পরিচয় মুক্তমনায় বেশ কয়েক বছর আগে নন্দিনী হোসেনের একটি লেখার উপর নারি-অধিকার প্রসংগে সুন্দর একটি মন্তব্য প্রকাশের সূত্রে। যাহোক তারাতারি বউকে একাকি প্রবাসে পাঠিয়ে দিয়ে লেখাগুলো রেডি করে দিলাম। একুশে বইমেলায় স্টলের দরখাস্ত করার জন্য মানিক ভাই বইটি খুব তারাহুড়ো করে ছাপিয়ে ফেললেন "আস্তিকতা-নাস্তিকতার দ্বন্দ্ব" শিরোনামে। ৩০শে ডিসেম্বর প্রবাসে ফিরার আগে কয়েকটি কপিও আমাকে দিলেন মানিক ভাই। ফেরার পথে আফসোস হচ্ছিলঃ আমার প্রথম বই মাস-খানেক পরই বইমেলায় বিক্রি হবে (কিছুটা উত্তেজনা, পুলকিত বোধ করছিলাম), অথচ আমি সেখানে থাকবো না। ভাবছিলামঃ আমার বই প্রকাশ হবে জানলে আরও দু'মাস পরে আসতাম দেশে।

এখন দেখছি দু'মাস পরে দেশে গেলেও কোনো লাভ হতো না। কারণঃ অজ্ঞাত কারণে ব-দ্বীপ প্রকাশনকে বইমেলায় অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত করেছে বাংলা একাডেমী। বাংলা একাডেমীর এ খামখেয়ালী সিদ্ধান্তের উপর মানিক ভাই পরিচালিত বংগরাষ্ট্র (http://www.bangarastra.net) লিখেছেঃ
"'অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১১'কে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে যেভাবে বইয়ের দোকান বরাদ্দ করা হয়েছে সেটা নিঃসন্দেহে বাংলা একাডেমীর বর্তমান কর্তৃপক্ষের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ২০১১-এর ২১শে গ্রন্থমেলার একটি মূলনীতি ছিল ২০১০ সালে ২০টি করে বই প্রতিটি প্রকাশন থেকে প্রকাশকদের বের করতে হবে। কিন্তু তারা তাদের নিজেদের কথার নিয়ম মেনে কাজ করেন নাই। ব-দ্বীপ প্রকাশন এ বছর ২৬টা বই প্রকাশ করেও দোকান বরাদ্দ পায় নাই। ব-দ্বীপ প্রকাশনের বইগুলির মধ্যে বিভিন্ন লেখকের লেখা ১) আর্যজন ও সিন্ধু সভ্যতা, মার্কসবাদের সংকট ও বিপ্লবের ভবিষ্যৎ, ২) আস্তিকতা-নাস্তিকতার দ্বন্দ্ব, ৩) জিহাদঃ জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও দাসত্বের উত্তরাধিকার, ৪) বাঙ্গালী মধ্যবিত্তের উত্থান, ৫) বাঙ্গালী জন-চরিত্রঃ কিছু নমুনা বিশ্লেষণ ইত্যাদি বই গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত হবার দাবী রাখে। এই গ্রন্থগুলি যদি বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষ কথিত ‘সৃজনশীল সাহিত্য, বিজ্ঞান ও গবেষণাধর্মী’ গ্রন্থের তালিকার মধ্যে না পড়ে তবে কোন গ্রন্থগুলি এই তালিকাভুক্ত হতে পারে? এটা স্পষ্ট যে বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষ বিশেষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়েই ব-দ্বীপ প্রকাশনকে দোকান বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করেছে।

অথচ এমন অনেক প্রতিষ্ঠানকে এবার দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যারা বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত কোন শর্তই পূরণ করে নাই। আমাদের জানা একটি প্রতিষ্ঠান ২০১০ সালে একটি বই প্রকাশ না করেও দোকান বরাদ্দ পেয়েছে। আরেকটি পরিচিত সম্পূর্ণ নূতন একটি প্রতিষ্ঠানের কথা জানা আছে যে সর্বসাকুল্যে পাঁচ-ছয়টি বই প্রকাশ করেই দোকান বরাদ্দ পেয়েছে। বাংলাবাজারের আর এক ব্যক্তির কথা জানা আছে যিনি বইয়ের ব্রোকার মাত্র। অর্থাৎ প্রকাশকদের নিকট থেকে বই নিয়ে বিভিন্ন বইয়ের দোকানে সরবরাহ করে কমিশন গ্রহণ করেন। তিনিও এবার প্রকাশক হিসাবে গ্রন্থমেলায় বইয়ের দোকান বরাদ্দ পেয়েছেন। এই হচ্ছে একুশে গ্রন্থমেলাকে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমীর বর্তমান কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ডের কিছু নমুনার বিবরণ।

ব-দ্বীপ প্রকাশনকে জায়গা বরাদ্দ না দিবার কোনও যুক্তি কি বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষের আছে? এ সংক্রান্ত যেসব যুক্তি তাদের কর্তাব্যক্তিরা বিভিন্ন জনকে শুনিয়েছেন সেগুলি নেহায়েতই হাস্যকর। দেশের বিদ্যমান সার্বিক নৈতিক অবক্ষয় যে বাংলা একাডেমীকেও তার আয়ত্তের বাইরে রাখে নাই এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সেই সত্যেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আমরা এই মুহূর্তে বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষের অনৈতিক ও স্ববিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছি।"

আমার ধারণাঃ ব-দ্বীপ প্রকাশনের কয়েকটি বই নাস্তিক্য-সংশয়বাদি ধ্যান-ধারণাকে শুভ আলোকপাত করেছে; কয়েকটি ইসলামের উপর সত্যনিষ্ঠ গবেষণার ভিত্তিতে রচিত -- যে কারণে তারা বাংলা একাডেমীর দ্বারা বইমেলায় স্টল বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ব-দ্বীপ প্রকাশনের অন্যান্য বইগুলো দেখুন এই লিংকে:
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৩৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×