৪০ শতাংশ পাকিস্তানি পাইলটই ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে বছরের পর বছর বিমান চালাচ্ছিলেন।
খবরটা গত মাসের। কিন্তু কোন বাংলাদেশী বড় মিডিয়াতে এই খবরটা দেখা যায় নি। সোশাল মিডিয়াতেও দেখা যায় নি।
এমন ঘটনা ভারতে বা বাংলাদেশে ঘটলে অবস্য ভিন্ন রকম হত।
জনসংখার বড় একটি অংশ বাংপাকি। এদের চটিয়ে টেলিভিশন ইটিপি, পত্রিকা বিক্রি বিজ্ঞাপন, পাঠক দর্শক হারানোর ঝুকি কোন শালা নিবে?
যে ভাবে জানা গেল।
গত ২২ মে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। পিআইএ একটি এ-৩২০ মডেলের বিমান করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরনে করতে ব্যার্থ হয়ে একটি আবাসিক এলাকার ওপর বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানটিতে থাকা ৯৯জনের ভেতর ৯৭ আরোহী নিহত হন।
বিমানে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না এবং পাইলটরাও সুস্থ ছিলেন। বিদেশি বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত প্লেনের ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তা থেকে জানা গিয়েছে, এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারের তরফে পাইলটেদের তিনবার জানানো হয় যে অবতরণের জন্য উড়ানের উচ্চতা অনেকটাই বেশি। কিন্তু ককপিটের পাইলটরা করোনা নিয়ে খোসগল্প করছিলেন। একসময় পাইলট বলেন, তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। রানওয়ের পাঁচ নটিক্যাল মাইল আগে ল্যান্ডিং গিয়ার বন্ধ করে (চাকা উঠিয়ে ফেলা) দিয়েছিলেন পাইলটরা। পরে অবস্য সংশোধোন করেছিলেন, যা বিপদজনক আনাড়িপনার শাক্ষ্য বহন করে।
দির্ঘ তদন্তে পাকিস্তানের পাইলটদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পাইলটদের সার্টিফিকেট ও লাইসেন্স নিরিক্ষা করে দেখা যায় ২ পাইলটই ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে বিমান চালাচ্ছিলেন। এরপর সকল পিআইএ পাইলটের (৮৬০ জন) লাইসেন্স চেক করে ২৬২ জন পাইলটই ভুয়া লাইসেন্স প্রমানিত হয়।
ঘটনা জানাজানি হলে এভিয়েশন জগতে বেশ আলোড়োন শৃষ্টি হয় প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য সংসদে দাবি উঠে।
এরপর তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকাশের সময় পাকিস্তানের এভিয়েশন মন্ত্রী গুলাম সারওয়ার জানান, তার দেশের ৪০ শতাংশ (৮৬০ জনের মধ্যে ২৬২) পাইলটই ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে বিমান চালাচ্ছিলেন।
পাইলটদের জাল লাইসেন্স ইস্যুতে এরপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ছে পাকিস্তানি পাইলট ও পাকিস্তান এয়ারলাইন্সের বিমানগুলো।
ইউরোপীয় ইউনিয়নকে দিয়ে শুরু। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাভিয়েশন সেইফটি এজেন্সি (ইএএসএ) সদস্য রাষ্ট্রগুলো পিআইএ পাকিস্তানি পাইলট চালিত বিমানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে (পিআইএ) ফ্লাইট ও পাকি পাইলট চালিত বিমানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দফতরের পক্ষ থেকে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ভিয়েতনাম মালয়েশীয়া ও যুক্তরাজ্যের বিভন্ন এয়ারলাইন্সে কর্মরত পাকিস্তানি পাইলটদের গ্রাউন্ডেড /সাসপেন্ড করে রাখা হয়েছে। কাতার আমিরাত সৌদিয়া ইত্যাদি এয়ারলাইন্সেও অনেক পাকি পাইলট আছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব পাকি পাইলটই গ্রাউন্ডেড। পাকিস্তানের জিও নিউজের প্রতিবেদনেও পিআইএ ফ্লাইট ও পাকি পাইলটদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফেডারেল আভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের(এফএএ) পাকিস্তানের পাইলটদের সার্টিফিকেট নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর নিরাপত্তার কারনে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:২৯