কোটা ব্যাবস্থা কাউকে বঞ্চিত করছে না।
সকল যোগ্যতা জিপিএ-্র প্রমান দিয়ে, এরপর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, সেকেন্ডারি।
এরপর ভাইবা দিয়ে ৬ লাখ চাকুরি প্রার্থি থেকে বাছাই হয়ে ১০০ জন প্রাথমিক নির্বাচিত।
ধরুন ১০০ জন সবাই জিপিএ ৫, এমসিকিউ তে ১০০ তে ১০০ নম্বর পাওয়া প্রত্যেকেই সমান। চাকুরি হবে ৪৫ জনের।
ধরেন এই ১০০ জনের ভেতর১৫ জন পঙ্গু, ৩জন আদীবাসি, ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা সন্তা এই ২৫ জনকে অমেধাবী বলা যাবে না কোনভাবেই।
এলফাবেটিক্যাল একটা তালিকা থাকলেও স্কোর নম্বর ও স্ট্যাটাসে সবাই সমান। কেউ কাউকে বঞ্চিত করছে না। এই প্যানেল থাকে যোগ্য তালিকার মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাধিকার মাত্র ৩০%, অন্যান্ন উন্নত দেশে প্রায়োরিটি (অর্থাৎ পঙ্গু, আদীবাসী, প্রাক্তন যোদ্ধা ইত্যাদি) কোটা ১০০% ভাগ।
সেই তরুন কৃষক মজুরদের কেউ যুদ্ধে যেতে বলেনি,
এরপরও তরুণ যোদ্ধারা যুদ্ধে গেছিলো এক কাপড়ে। মুক্তিযুদ্ধে।
বাপ কে না বলে, মা কে ঘুমে রেখে। পায়ে হেটে সীমান্ত পাড়ি। বিনা বেতনে। যুদ্ধকালিন সময়ে ওরা কখনোই কোন বেতন দাবী করে নাই।
(যুদ্ধশেষের দিকে অল্পকিছু হাতখরচ দেয়া হচ্ছিল)। যুদ্ধে যাওয়ার অপরাধে রাজাকাররা ওদের ঘরবাড়ী জালিয়ে দিয়েছিল। পরিবারের উপর মারপিট অত্যাচার হয়েছিল।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন একটি দেশ উপহার দেয়ার পরও ওরা কোন পুরষ্কার, চাকুরী বা বকেয়া বেতন দাবি করেনি। পরে ভিক্কা করে রিকশা চালিয়ে জীবনপার করেগেছে। কোন ভাতা কোন সুবিধা কখনোই দাবী করেনি। ৩০ বছর বন্দুকের নলের মুখে মুক্তিযুদ্ধা বা বঙ্গবন্ধু শব্দটি টিভিতে কেউ উচ্চারন করতে পারেনি।
৩০ বছর পর মুক্তিযুদ্ধপক্ষ ক্ষমতায়। এরপরও কোন মুক্তিযোদ্ধা কোটা ভা ভাতার জন্য দাবী জানায় নি। এসে প্রতিদান দেয়ার ইচ্ছে থাকার পরও কিছু দিতে পারেনি। রাষ্ট্র তখনো আর্থিক সক্ষমতা অর্জন করে উঠতে পারে নি।
এই ৩০ বছর বন্ধুকের নলের মুখে টিভি ও পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধা বা বঙ্গবন্ধু শব্দটি কেউ উচ্চারন করতে পারেনি।
পরে আরো। ৩৪ বছর পরে রাষ্ট্র আর্থিক সক্ষমতা অর্জন করলে সামান্য ভাতা, কিছু সম্মান, আর সরকারী চাকুরিতে অগ্রাধিকার দেয়া শুরু করে। কিন্তু তাদের ও সন্তানদের বয়স ৩০ পার হয়ে গেছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত শিক্ষিত প্রার্থি না পাওয়ায় কেউওই চাকুরি পায়নি।
তাই ৩য় জেনারেশন পর্যাপ্ত শিক্ষিত হলে, পরিক্ষার সকল ধাপ পার হতে পারলেই সুধু বিবেচনা করা হচ্ছিল।
তবে ৩০% কখনোই পায় নি।
৩০% তো দুরের কথা, সুধু বেশিরভাগ ৩% মাঝে মাঝে ৫% শুধু একবার মাত্র সর্বচ্চ ৭% পেয়েছিল।
কোটা ব্যাবস্থা পৃথিবীর সকল সভ্য দেশে চালু আছে, আছে।
আমার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রতেও আছে। কানাডা অষ্ট্রেলিয়াতেও আছে, পাসের দেশ ভারতেও ...
অনেকে বলে জনসংখ্যার ১% মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০% কেন?
পৃথিবীতে কোথাও জনসংখার অনুপাতে কোথাও কোটা রাখা হয় না, কোটার কোন নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজও থাকে না। সবসময় সবর্চ্চ অগ্রাধিকার। সেটা ১০০% ভাগ। অর্থাৎ পদ খালী, যোগ্যতা, ড্রাগটেষ্ট, ব্যাকগ্রাউন্ড চেক আর নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তির্ন হলেই প্যানেলে ১০ জন উত্তির্ন প্রার্থির ভেতর ৩-৪ জন প্রায়োরিটি(অর্থাৎ পঙ্গু, আদীবাসী, প্রাক্তন যোদ্ধা ইত্যাদি) থাকলে এই ৩-৪ জন প্রায়োরিটি প্রার্থি অগ্রাধিকার পাবে ।
তবে সব পরীক্ষায় উত্তির্ন হতে হবে। পরীক্ষায় পাস নেই তো কোটাও নেই।
আমাদের দেশে লাখ লাখ আবেদনকারি। কোটা ননকোটা একই প্রশ্নপত্র। অভিন্ন মুল্যায়ন পদ্ধতি।
আবেদনের যোগ্যতা জিপিএ-৫, এরপর প্রিলিমিনারি পরিক্ষা, সেকেন্ডারি।
এরপর ভাইবা দিয়ে ৬ লাখ থেকে বাছাই হয়ে ১০০ জন প্রাথমিক নির্বাচিত।
এই ১০০ জন সবাই জিপিএ ৫, এমসিকিউ তে ১০০ তে ১০০ নম্বর পাওয়া প্রত্যেকেই সমান। চাকুরি হবে ৪৫ জনের।
ধরেন এই ১০০ জনের ভেতর১৫ জন মেয়ে, ৭ জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। হিসেবে সবাই সমান মেধাবী
এলফাবেটিক্যাল একটা তালিকা থাকলেও নম্বর ও স্ট্যাটাসে সবাই সমান। কেউ কাউকে বঞ্চিত করছে না। মুক্তিযোদ্ধাদের মাত্র ৩০% দেয়া হচ্ছে, যেখানে অন্যান্ন উন্নত দেশে ১০০% অগ্রাধিকার।
কোটা রাখা হয় সাধারনত পিছিয়ে পরা, আদিবাসি জনগোষ্ঠির জন্য, অনুন্নত রিমোট এলাকার জন্য। পঙ্গু ডিসএবেলদের জন্য তো আছেই। আর প্রাক্তন যুদ্ধফেরত যোদ্ধাদের (ভেটারেনস) জন্য।
চাকুরি বাজারে এসব বেনিফিসারিরা সংখায় ১% হলেও এদের কোটা ১০০%, চাহিবা মাত্র চাকুরি।
ধরেন ১০টা পদ খালী, বিভিন্ন পরিক্ষায় ১০ জন নির্বাচিত। এদের ভেতর ২ জন ভেট্রেন ১ জন রেডইন্ডিয়ান, ১জন ডিসেবেল।
কম্পানী নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তির্ন এই ৪জনকেই আগে নিবে, ১০০% অগ্রাধিকার। না নিলে কম্পানীর লাইসেন্স বাতিল হবে।
সরকারি বেসরকারি সব সেক্টরেই। যে কোন আদিবাসি, পঙ্গু বা প্রাক্তন যোদ্ধা পর্যাপ্ত যোগ্যতা থাকলে এই ৪ জনের চাকুরি আগে হবে ১০০% ভাগ কোটা। উন্নত বিশ্বে এভাবেই চলছে।
পঙ্গুরা পর্যাপ্ত আউটপুট দিতে পারেনা এরপরও তাকে ডেকে চাকুরি দেয়া হয়, কেন দেয়? প্রথমত নিয়োগ পরিক্ষায় পাস করেছে। কম্পানীর কিছু সুবিধাও এম্পয়েআর ট্যাক্স রেয়াত পায়, কানাডাতে কোন পঙ্গু নিয়োগ হলে সেই কম্পানীর পঙ্গুর ৯০% বেতন সরকার দেয়। আমেরিকাতেও স্টেট ভেদে কমবেশী রেয়াত দিচ্ছে।
কম্পানীরা উম্মুখ হয়ে থাকে কোটা বেনিফিসারিদের চাকুরি দিতে।
কেউ তো কখনো বলে না জনসংখার ১-২% মানুষ দেশের ৯৮% মেধাবী নাগরিকদের চাকুরি সব লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে!
কেউ তো বলে না বিশেষ অংশকে সুবিধা দিতে গিয়ে বৃহত্তর অংশকে বঞ্চিত করে দেশের সর্বনাশ করা হচ্ছে!
ভেটারেনসরা আমেরিকায় অত্যন্ত সম্মানি নাগরিক।
আমি নিজে দেখে যাচ্ছি
তাদের ক্যাপে ও গাড়ীতে লেখা থাকে "প্রাউড ভেটারেন"
আমেরিকায় ২য় মহাযুদ্ধ ফেরত সৈনিক, ভিয়েতনাম ফেরত যোদ্ধাদের ও তাদের পোষ্যদের উচ্চহারে কোটা ও অন্যান্ন সুবিধা চালু আছে। ভেটরেনসদের জন্য থাকে আলাদা কাউন্টার আলাদা লাইন। পার্কিং স্পেস, সরকারি পার্কিং চার্জ ফ্রী। রেশন, বাস কন্সেশন, ট্রেনভাড়া ফ্রী! বুড়ো হয়েগেলেও তাদের পরিচর্যার জন্য লোক রাখা হয়।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বীর গুর্খা সৈনিকদের ৩য় ৪র্থ প্রজন্মদের এখনো বিশেষ সুবিধা, ভাতা দিয়ে যাচ্ছে বৃটেন সরকার।
আর আমাদের দেশে কিছু অসভ্যরা নিজেদের বেশী মেধবী দাবি করে হতভাগ্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য অধিকার বঞ্চিত করতে রাস্তায় লাফালাফি করছে।
মুক্তিযোদ্ধার কোটার পরিধি আরো বাড়ানো উচিত বলে মনে করি।
নিহত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বেসরকারি খাতেও মুক্তিযুদ্ধ কোটা আরোপ করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০২৪ ভোর ৪:০২