somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্যান ফিকশানঃ ফেলুদা এবং সিরিয়াল কিলার

০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



“কেসটা বোধহয় ক্লোজ করে দিতে হবে সুমন। অথবা ডিবি কিংবা সিআইডিকে দিতে হবে।” সাব ইন্সপেক্টর সুমনকে লক্ষ্য করে কথাটা বলল জিব্রান আহমেদ। এক হাতে কানের লতি চুলকাচ্ছে সে। সুমন কিছুটা অবাক হলো জিব্রানের কথা শুনে।
“এত তাড়াতাড়ি হাল ছেড়ে দেবেন স্যার?”
“হ্যা। দেব। এই কেসে কোন ক্লু নেই, কোন গুরুত্বপূর্ণ লিড নেই। আমি দীর্ঘ পুলিশের জীবনে অনেক কেস দেখেছি। কোন কেস নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়, কোনটা নিয়ে ঘামাতে হয় না, ভালোভাবে জানি।”
সুমন হাত কচলে একটু বিব্রত ভঙ্গীতে বলল-“একটা শেষ চেষ্টা করে দেখবেন নাকি স্যার?”
জিব্রান ভ্রূ কুঁচকে রাগী গলায় বলল-“কি চেষ্টা?”
“আমার পরিচিত এক কনসাল্টিভ ডিটেকটিভ আছে। পশ্চিমবঙ্গে থাকে। যৌবনে প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর ছিল। এখন বয়স হয়ে গেছে। প্রায়ই নিজেদের দেশের এবং বাইরের দেশের পুলিশকেও সাহায্য করে থাকে। খুব ব্রাইট একজন ডিটেকটিভ স্যার।”
“আচ্ছা! কি নাম?”
“প্রদোষ চন্দ্র মিত্র। ফেলুদা নামে বেশি পরিচিত।”
“ও, কখনো শুনিনি নাম। কিন্তু কথা হলো, বাইরের দেশের একজন ডিটেক্টিভকে এই দেশে নিয়ে আসার খরচ এবং সরকারী অথোরাইজেশন তোমাকে কে দেবে? তাছাড়া এই কেসটা সমাধান করারই বা এত আগ্রহ কেন তোমার?”
“আগ্রহ হবার কারণ হলো কেসটা খুব রহস্যময় বলে। এত নাটকীয়, ভূতুরে এবং রহস্যময় কেস আমি আগে দেখিনি স্যার। তাছাড়া খরচের বা অথোরাইজেশনের তেমন ব্যাপার নেই। শুধু স্কাইপিতে আধাঘণ্টা চ্যাট করলেই হলো। ভদ্রলোক আমার বন্ধুমতন, তাই এই কেসে ফি-ও নেবেন বলে মনে হয় না। মাত্র আধাঘণ্টায় কেস সলভ হবে। আর সুনাম আপনার। ভেবে দেখুন স্যার।”
“মাত্র আধাঘণ্টায় কেস সলভ? যে কেসটা নিয়ে আমরা দু’মাস ধরে মাথা ঘামাচ্ছি?”
“হ্যা স্যার। তার বুদ্ধিমত্তা প্রখর।”
“আচ্ছা দেখা যাক। দিলাম তোমাকে আধাঘণ্টা। কাল অফিস আওয়ারে তার সাথে অনলাইন মিটিং ঠিক করো। মনে রেখো, সময় নষ্ট হলে তুমি আমাকে লাঞ্চ করাচ্ছ।”
হো হো করে হেসে উঠল সুমন। বলল-“আপনি প্রদোষ চন্দ্র মিত্রকে চেনেন না স্যার। তার মতো ডিটেকটিভ উপমহাদেশে দ্বিতীয়টি নেই।”
“দেখা যাবে। কিন্তু তুমি বলো তো, তার মতো একজন মাঝবয়সী লোকের সাথে তোমার মতো তরুণের বন্ধুত্ব হলো কি করে?”
কাঁচুমাচু মুখ করে সুমন বলল-“ইয়ে স্যার, ফেসবুকে।” ইচ্ছে করেই পুরো সত্য বলল না সে। আসলে ফেলুদার সঙ্গে একটা কেসের বিষয়ে আলাপ হয়েছিল তার। তবে প্রাথমিক পরিচয়টা ফেসবুকেই হয়েছিল সেটা ঠিক। ওপার বাংলার একটা কেসের সাথে বাংলাদেশের একটা কেস জড়িয়ে গিয়েছিল। তখন ফেলুদা ইন্টারপোলের সাথে যোগাযোগ করে বাংলাদেশে এসেছিল, সুমনের বাসাতেই ছিল দু’দিন। ফেলুদা চেয়েছিল কেসটার কথা গোপন থাকুক। তাই ঘটনাটা চেপে গেল সে।
জিব্রান হেসে বলল-“বাহ, ফেসবুকেই গোয়েন্দাগিরি শুরু করেছ দেখি আজকাল!”

পরদিন সকাল এগারটায় জিব্রান আহমেদের কামরায় রুদ্ধদ্বার অনলাইন বৈঠক হলো ফেলুদার সঙ্গে। জিব্রান আহমেদ দরজা বন্ধ করে দিল এবং বলে দিল আগামী ত্রিশ মিনিটে কেউ যেন তার কামরায় না ঢোকে। সে চায় না অন্যরা জানুক যে এই কেস সলভ করতে সে ফেলু মিত্তিরের সাহায্য নিয়েছে।
সুমন ঘড়ি ধরে ঠিক এগারটায় স্কাইপিতে কল দিল ফেলুদাকে। আগের দিনই তাকে ই-মেইল করেছিল সে। ফেলুদা যে প্রচন্ড মাত্রায় পাঙ্কচুয়াল সেটা সে জানে। তার কথা প্রমাণ করতেই যেন কল করার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে কল রিসিভ করল ফেলুদা।
সুমন অনেক প্রশংসা করায় জিব্রান আহমেদ একটু তাচ্ছিল্য ভাবে নিয়েছিল ফেলুদাকে। কিন্তু ল্যাপটপের স্ক্রিনে যে গম্ভীর সম্ভ্রান্ত চেহারাটা ফুঁটে উঠল, তাতে তাকে বিন্দুমাত্র তাচ্ছিল্য করতে পারল না। ফেলুদার পরনে সাদা পাঞ্জাবী। হাতে একটা চামড়ার ঘড়ি। ঘড়ি কিংবা পাঞ্জাবী কোনটাই খুব বেশি কিংবা খুব কম দামী নয়, কিন্তু ফেলুদার রুচিশীলতা এবং মার্জিত ভাবভঙ্গীর কারণে একটা সম্ভ্রান্ত ভাব চলে এসেছে পুরো সাজপোশাকে। মাথার বামদিকে কিছু চুলে পাক ধরেছে ফেলুদার আর কপালে প্রয়োজনের চেয়ে কিছু বেশি ভাঁজ; বয়সের ছাপ বলতে এতটুকুই। অবশ্য কপালের ভাজগুলো চিন্তা করার অভ্যাস থেকেও হতে পারে, বলা যায় না। ল্যাপটপের সামনে বসেছে কিন্তু চোখে চশমা নেই। এই বয়সেও তার চোখের দৃষ্টি বেশ ভালো বোঝা যায়। বসার ভঙ্গীতেও এক ধরনের ব্যক্তিত্ব ফুঁটে উঠেছে। মেরুদন্ড পুরোপুরি সোজা করে বসেছে। তাচ্ছিল্য ভাব উড়ে গিয়ে রীতিমতো সমীহ চলে এলো জিব্রানের ভেতর। গমগমে, ভরাট গলায়, শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণে সে বলল-
“শুভ সকাল সুমন। অনেক দিন পর দেখলাম তোমাকে। কেমন আছো?”
“ভালো আছি ফেলুদা। তুমি কেমন আছ?”
“এই তো বেশ আছি। তোপসে বিয়ে করে থিতু হবার পর একটু একা হয়ে গিয়েছি এই যা! তবে কাজের মধ্যে ডুবে থাকি বলে টের পাই না।”
“পরিচয় করিয়ে দেই, ইনি হলেন আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জিব্রান আহমেদ। এই কেসের দায়িত্বে আছেন।”
জিব্রানের উদ্দেশ্যে হালকা করে মাথা নোয়াল ফেলুদা। জবাবে বিনয়ে বিগলিত হাসি হাসল জিব্রান আহমেদ। ফেলুদা বলল-“ নাইস টু মিট ইউ মি. জিব্রান।”
“নাইস টু মিট ইউ স্যার।” মুখ দিয়ে ‘স্যার’ বেরিয়ে গেল কেন সে নিজেও বুঝতে পারল না।
“যেহেতু ত্রিশ মিনিট আছে আমাদের হাতে, সময় নষ্ট না করে কেসের ব্যাপারে আলোচনা করি মি. জিব্রান।”
“ঠিক আছে স্যার। আসলে আমাদের কেসটা একটু জটিল। গত দু’মাসে ঢাকার তিন জায়গায় তিনটি খুন হয়েছে। খুনের ধরন দেখে মনে হচ্ছে তিনটি খুন একই খুনির কাজ।”
“সিরিয়াল কিলিং কেস?”
“তা তো বটেই। তবে সিরিয়াল কিলিং এই কেসের একমাত্র জটিলতা নয়।”
“ঠিক আছে, বিস্তারিত বলুন।”
“গত দু’ মাসে তিনটে খুন হয় ঢাকাতে। প্রথমটা কমলাপুরে, দ্বিতীয়টা ধানমন্ডিতে এবং তৃতীয়টা বেইলি রোডে। সাধারণ মানুষ মৃতদেহ আবিষ্কার করে পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশ গিয়েছে, সাংবাদিক গিয়েছে। লাশগুলোকে প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য এম্বুলেন্সে করে পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তার মৃত ঘোষণা করার কিছুক্ষণ পর লাশগুলো গায়েব হয়ে গেছে। স্রেফ বাতাসে মিলিয়ে গেছে বলা যায়। কারণ কেউ দেখেনি কোথায় কখন কিভাবে লাশ চুরি হয়েছে। কিন্তু লাশগুলো চুরি হয়ে গেছে ঠিকই।”
ফেলুদা ভ্রূ কুঁচকে বলল। “স্ট্রেঞ্জ। খুন করে লাশ চুরি, তাও সবার অগোচরে এবং তিন তিন বার।”
“হ্যা, তিন তিন বার। শেষ বার তো লাশ বদ্ধ কামরায় রেখে চারিদিকে পুলিশি প্রহরা বসানো হয়েছিল, কিন্তু তাও লাভ হয়নি। বদ্ধ কামরার ভেতর থেকে লাশ গায়েব। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজেও লাশ চুরি করার কোন ছবি ধরা পড়েনি।”
ফেলুদার চেহারা গম্ভীর হয়ে গেল। বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে পায়চারি করতে করতে একটা চারমিনার ঝোলাল ঠোঁটে। তারপর জিজ্ঞেস করল-“ভিক্টিমদের ট্রেস করা গেছে?”
“নাহ, সেটাও একটা রহস্য। ভিক্টিমের সাথে কোন কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। পত্রিকায় ছবি দিয়েও লাভ হয়নি কোন।”
ফেলুদা চারমিনারে টান দিয়ে একরাশ ধোঁয়া ছাড়ল। তারপর বলল- “একটু বিশ্লেষন করা যাক। প্রথমেই লোকেশনের কথা ধরি। ঢাকায় গিয়েছি আমি একবার। যতটুকু বুঝতে পারছি, এলাকা তিনটের ভেতর তেমন মিল নেই। অর্থাৎ অভিজাত এলাকা, বস্তি এলাকা, মধ্যবিত্ত মানুষের এলাকা সবই পড়ে এর ভেতর। তার মানে নিম্নবিত্ত, উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত যে কোন অর্থনৈতিক অবস্থার মানুষই ভিক্টিম হতে পারে। এর মধ্যে কোন প্যাটার্ন নেই। ঠিক বলেছি?”
“জ্বী, ঠিক বলেছেন।”
“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, লাশগুলো কেন চুরি করা হয়েছে, কিভাবে করা হয়েছে সেটা নয়।” এতটুকু বলে ল্যাপটপের স্ক্রিনে সুমনের দিকে তাকাল ফেলুদা। “সুমন, ধরো তুমি একজন খুনি। খুন করার পর লাশগুলো কেন লুকোতে চাইবে তুমি?”
সুমন একটু ভাবল। উজ্জ্বল হয়ে উঠল তার চেহারা। “কারণ ফেলুদা, লাশগুলো থেকে নিশ্চয়ই এমন তথ্য পাওয়া যেত, যা থেকে খুনিকে ধরে ফেলা যায়।”
“তাই যদি হবে, তাহলে খুন করার পর লাশগুলো সে ফেলে রাখল কেন? প্রথম বারেই তো গায়েব করে দিতে পারত। ফেলে রেখে পুলিশের দৃষ্টিগোচর করার মানে কি?”
“তা ঠিক।”
জিব্রান বলল-“এসব কারণেই তো কেসটা ছেড়ে দিয়েছি আমরা। ডেড বডি নেই, ক্লু নেই, এভিডেন্স নেই...”
ফেলুদা মাথা নাড়ল-“উহু! খুনের প্যাটার্ন জানা আছে। সিরিয়াল কিলারকে ধরতে এর চেয়ে বেশি কিছু জানার প্রয়োজন নেই। আচ্ছা বলুন তো, কজ অফ ডেথ কি ছিল লাশগুলোর?”
“সেটা জানার জন্য তো পোস্টমর্টেম করার দরকার ছিল, তার আগেই তো চুরি হয়ে গেল লাশগুলো। তবে কারো শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।”
“ভিক্টিমদের মধ্যে কোন মিল পাওয়া গেছে?”
“নাহ, তবে সবার বয়স কাছাকাছি ছিল। ৩০-৩৫ বছরের মধ্যে। সবারই স্বাস্থ্য মোটামুটি ভালো ছিল। এতটুকুই।”
“এতটুকু যথেষ্ট নয়, পৃথিবীর ৪০% মানুষই এই ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে... কোন বিশেষ মিল চোখে পড়েছে?”
“নাহ, পড়েনি।”
“আচ্ছা!” বলে ফেলুদা চিন্তায় ডুবে গেল। চারমিনারের ধোঁয়ায় ভর্তি হয়ে গেছে ততোক্ষণে ঘর।
জিব্রান আহমেদ হাত ঘড়ি দেখল। ২৪ মিনিট হয়ে গেছে। ৩০ মিনিট হতে বেশি বাকী নেই। সে সুমনের দিকে তাকাল, তবে ব্যঙ্গাত্মক দৃষ্টিতে নয়, উদ্বিগ্ন দৃষ্টিতে। ফেলুদা কেসটা সমাধান করতে না পারলে তারও খারাপ লাগবে।
ফেলুদা পায়চারী করতে করতে বিড়বিড় করছে-“তিনটে খুন...লাশ চুরি...কেউ কিচ্ছু দেখল না, সিসিটিভিও না...তিনটে তিন ধরনের এলাকায়...উহু কোন মোটিভ পাওয়া যাচ্ছে না...তারপর...তারপর...কজ অফ ডেথ জানা নেই, ভিক্টিমের পরিচয় জানা নেই...কজ অফ ডেথ, ভিক্টিমের পরিচয়...লাশ ফেলে রেখে পরে চুরি... কজ অফ ডেথ...জুরিখ কেস...ইউরেকা!! ইউরেকা!!! আহ কি স্যু রপিড আমি! প্রথমেই বোঝা উচিত ছিল।”
জিব্রান চকচকে চোখে জিজ্ঞেস করল-“কিছু বুঝতে পারলেন স্যার?”
“পুরোটাই বুঝতে পেরেছি। আসলে কোন খুনই হয়নি জিব্রান সাহেব। এখানে কোন খুনি নেই, কোন ভিক্টিম নেই। পুরোটাই একজনের সাজানো নাটক।”
“মানে?”
“মানে হলো, যে তিনজন ভিক্টিম মারা গেছে তারা আসলে একই ব্যক্তি। একই মানুষ বিভিন্ন ছদ্মবেশে বিভিন্ন এলাকায় মৃত সেজে পড়েছিল। পুলিশ এসেছে। ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেছে। তারপর ঠিক ঠাক উঠে ছদ্মবেশ খুলে পালিয়ে গেছে। যেহেতু সবাই লাশ সহ একজন চোরকে খুঁজছে, তাই জীবিত মানুষকে বেরিয়ে যেতে দেখে কিছু সন্দেহ করেনি। বদ্ধ কামরার জানালা টপকে পেরোতে তার কোন সমস্যা হয়নি। কারণ সবার নজর ছিল লাশ চোরের দিকে। লাশ নিজেই চোর সেটা আশা করেনি কেউ।”
“কিন্তু কি করে মৃত সেজে থাকা যায়?”
“থাকা যায়। সুইৎজারল্যান্ডের জুরিখে এই ধরনের একটা কেসের কথা শুনেছিলাম। একটি আফ্রিকান ঔষধ আছে, বেশ প্রাচীন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হতো এমন একটি আধুনিক এনেস্থেশিয়ার প্রাচীন ভেষজ সংস্করণ এই ঔষধ। মানুষের হৃৎপিন্ডকে আক্ষরিক অর্থেই সাময়িকভাবে অচল করে দেয়া যায় এই এনেস্থেশিয়ার মাধ্যমে। এই জিনিস খুব বিরল, বিপজ্জনকও। কিভাবে জোগাড় করল সে, কে জানে! তবে এটাই একমাত্র গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা।”
“এমন একটা কাজ সে কেন করবে?”
“এটেনশন সিকার সাইকো ছিল সে। এই রোগের সাইকোলজিক্যাল নাম হলো হিস্ট্রিওনিক পার্সোনালিটি ডিজর্ডার। পুলিশের, মিডিয়ার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হতে চেয়েছিল সে। পেরেছেও।”
“আশ্চর্য! এখন কি করা যায় বলুন তো?”
“অপেক্ষা। পরবর্তী খুনের অপেক্ষা করুন। খুন হলে ভিক্টিম না খুঁজে লাশটাকে হাজতে পুরুন। তারপর জ্ঞান ফিরলে সাইকিয়াট্রিক ট্রিটমেন্টের জন্য পাঠিয়ে দিন। কাজ শেষ! যেহেতু সে কোন খুন করেনি, কাজেই নো ক্রাইম, নো ভিক্টিম, নো ক্রিমিন্যাল। কেস ডিসমিসড!”
সুমনের ঘড়িতে মৃদু এলার্ম বেজে উঠল। ৩০ মিনিট পার হয়েছে। জিব্রান মুগ্ধ এবং বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইল ফেলুদার দিকে।
(সমাপ্ত)

সত্যজিৎ রায় আমার অন্যতম প্রিয় লেখক। কৈশোরের দিনগুলোতে ফেলুদার সঙ্গে প্রচুর ভালো সময় কেটেছে আমার। তার জন্মদিনে ফেলুদাকে উৎসর্গ করে একটা ছোটগল্প লেখার ইচ্ছে ছিল। জন্মদিনের কয়েক দিন পর লিখলাম যদিও! দেরীতে হলেও, সত্যজিৎ রায়ের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৪৯
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×