somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিংস্র জানোয়ার খাবলে ধরেছে প্রিয় মাতৃভূমিকে। আসুন রুখে দাঁড়াই।

১৭ ই মে, ২০১২ রাত ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ (১৬-৫-২০১২) দুপুরের পর টিভিতে ব্রেকিং নিউজ দেখাচ্ছে: মির্জা ফখরুলসহ ১৮ দলের ৩৪ নেতার জামিন নামঞ্জুর; কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ।

আমার অফিসের একজন কলিগ, আওয়ামী সমর্থক, ব্রেকিং নিউজ দেখে খুব হতাশ গলায় বললেন, আওয়ামীলীগ এইটা কী করতেছে? হাসিনারে তো এখনই থামানো দরকার, তা নাহলে দেশের অবস্থাতো বারোটা বাজিয়ে ফেলবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কারাগারে নেওয়ার পর, তখনও বিএনপি দেশব্যাপী হরতাল ঘোষণা করেনি। উত্তর বঙ্গের চার জেলায় হরতাল ঘোষিত হয়েছে মাত্র। একজন কলিগ, কোন দল সমর্থন করেন না, খুব বিপন্ন এবং ক্ষ্যাপাটে গলায় বললেন, সারা দেশব্যাপী হরতাল ঘোষণা করা উচিত; এখনও কেন ঘোষণা করতেছে না? অন্য এক কলিগ বলল, আরে হরতাল দেওয়া ঠিক না। এতজন নেতাকে একসাথে ধরেছে; বিএনপি আর হরতাল দেওয়ার সাহস পাবে না। আগেরজন জোর গলায় বললেন, লিখে রাখেন এক ঘন্টার মধ্যে দেশব্যাপী হরতালের ঘোষণা আসবে; আসবেই।

রিক্সায় বাসায় ফিরছি। রিক্সাওয়ালা বললেন, স্যার আওয়ামীলীগের যদি দ্যাশের প্রতি মায়া থাকতো; তবে হ্যারা এই সব কাজ করতো না। হিসাব অনুযায়ী বিএনপি অনেক নরম সরম, দেশের কথা এট্টু হইলেও ভাবে।

সব মিলিয়ে আশে পাশের মানুষের মধ্যে কেমন একটা বিপন্ন ভাব লক্ষ্য করছি। এই সব মানুষ ভেতরে ভেতরে ফুঁসে উঠছেন। দেশের এমন অবস্থা তারা কল্পনাও করেননি। বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরোধী দলের এতজন প্রথম সারির নেতাকে এক সাথে গ্রেফতারের ঘটনা আর ঘটেনি। আজকের এত বদলে যাওয়া সময়ে এমন ঘটনা আমাদের শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষের একেবারে ভেতরটা কাঁপিয়ে দিয়েছে। এখন বিস্ফোরণের অপেক্ষা। একেতো চারিদিকে সীমাহীন নৈরাজ্য - দুর্নীতি, লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, গুম, খুন, সরকারি সন্ত্রাস, দলীয়করণ, বিপন্ন সার্বভৌমত্ব, বাকশালের কালো থাবা - সব মিলিয়ে এত বাজে সময় খুব কমই এসেছে আমাদের জাতীয় জীবনে।

বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনাবাহিনী এবং বিডিআরের কোমর ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে; শেয়ার বাজার লুটের মাধ্যমে মধ্যবিত্তদের জমানো টাকা প্রতারণা করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে; বিচার বিভাগকে দলীয়ভাবে ব্যবহার করে ন্যায় বিচারের সম্ভাবনা নষ্ট করা হয়েছে। কুইক রেন্টালের নামে দেশের শক্তি সরবরাহ ব্যবস্থাকে একবারে ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। একটি অপকর্ম ঢাকার জন্য, পাবলিকের মনোযোগ অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য ক্রমাগত একের পর এক অপকর্ম করা হচ্ছে। বিদেশী দখলদার ছাড়া কোন দেশপ্রেমী সরকার দেশের মানুষের সাথে এমনটি করতে পারে না।

অলিতে গলিতে যেখানে মিছিল বা শ্লোগান সেখানেই লাঠিয়াল পুলিশ বাহিনী (আসলে গুণ্ডাবাহিনী) বেপরোয়াভাবে লাঠিপেটা করছে মিছিলকারীদের। গতরাতে পুলিশের লাঠির আঘাতে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক শহীদ হয়েছেন। আমাদের মধ্যে মত বিরোধ আছে, গণতান্ত্রিক সমাজে তা থাকবেই। তাই বলে এমন অযোগ্য সরকার, জনগণের সমস্যা সমাধানের দিকে মনোযোগ না দিয়ে প্রতিবাদকারীদের কণ্ঠ স্তব্ধ করার জন্য যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তা দেখে শংকিত না হয়ে পারা যায় না।

রাত দশটার এটিএন বাংলার খবর দেখছিলাম। আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের উপর পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটা দেখে আমার সাড়ে তিন বছরের ছেলে আমাকে জিজ্ঞেস করে, আব্বু এভাবে ওদেরকে মারছে কেন? আমি উত্তর দেই না; আসলে দিতে পারি না। ছেলে বারবার একই প্রশ্ন করে। তার চোখে মুখে বিস্ময় এবং আতংক। আমার মাথা হেঁট হয়ে আসে; অবোধ আক্রোশে আমি কথা হারিয়ে ফেলি। আমি চ্যানেল বদলে দেই। আপাত নিরীহ এই আমিও ধীরে ধীরে প্রতিবাদী হয়ে উঠি। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ আমাদের চোখের সামনে নিকষ অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে। এই জনবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারী সরকারকে যে কোন মূল্যে থামাতে হবে। দলমত নির্বিশেষে এ এক গণদাবী আজ। আসুন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হই; এই জানোয়ারদের হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমিকে বাঁচাই।

(আমাকে দল অন্ধ ভেবে গালি দেবেন না। আজ আওয়ামীলীগের জায়গায় বিএনপি এমনটা করলেও আমি একই লেখা লিখতাম। আমি দেশের পক্ষে, আমি রাজনীতি সচেতন; কোন দলের প্রতি অন্ধ নই।)
১৬টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নেতানিয়াহুও গনহত্যার দায়ে ঘৃণিত নায়ক হিসাবেই ইতিহাসে স্থান করে নিবে

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৮

গত উইকেন্ডে খোদ ইজরাইলে হাজার হাজার ইজরাইলি জনতা নেতানিয়াহুর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
দেখুন, https://www.youtube.com/shorts/HlFc6IxFeRA
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহুর এই হত্যাযজ্ঞ ইজরায়েলকে কতটা নিরাপদ করবে জনসাধারণ আজ সন্দিহান। বরং এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×