somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্র শিবিরের দেশপ্রেম এবং বর্তমান যুদ্ধাপরাধ বিচার পরিস্থিতি

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারত যখনই সীমান্তে কুত্তার মত মানুষ মারে, অথবা পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে, দেশকে মরুভূমিতে পরিনত করতে সীমান্তের ওপারে বাধ নির্মাণ করতে চায় বা রপ্তানি পণ্যে বিভিন্ন অশুল্ক বাধার মাধ্যমে আমাদের রপ্তানিকে ঠেকিয়ে রাখে অথবা আমাদের সমুদ্রসীমা তাদের বলে দাবী করে তখন মানসিক বিকারগ্রস্ত পাবলিক ছাড়া কমবেশি সকলেই এর প্রতিবাদ করে বা করতে চায়। ছাত্রশিবিরও তাই করে , অন্তত এই ব্লগে এর অজস্র প্রমাণ রয়েছে। (শুধু ভারত ছাড়া অন্য যেকোন দেশ আমাদের সাথে এই ধরনের আচরন করলে মানুষ তাই করতো বলে আমার ধারনা।) তবে কিছু সুশীল পাবলিক বলে রাম ছাগল এগুলো এড়িয়ে চলতে পছন্দ করে বা উল্টো ভারতের পক্ষ নিয়ে মন্তব্য করে থাকে।
যারা এদেশে জন্মেছে তারা জন্মসূত্রে এদেশেরই নাগরিক। প্রতিটি মানুষেরই দেশকে ভালবাসার অধিকার রয়েছে, সে ছাত্রলীগেরই হোক , বা ছাত্রশিবিরেরই হোক অথবা আমার মত আম জনতাই হোক। আমার দেশের বিরুদ্ধে অন্য যেকোন দেশের অযাচিত হস্তক্ষেপ কিছু মানুষ বাদে আর কেউই তা মানতে পারেনা। দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।
আমাদের দেশে মাতৃভাষা দিবসে,স্বাধীনতা দিবসে, বিজয় দিবসে সকলের মত ছাত্রশিবিরও বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নেয়, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করতে চায়। মাতৃভুমিকে ভালোবেসে এগুলো তারা করতেই পারে,এদেশের নাগরিক হিসেবে সেগুলো করার অধিকার তাদের রয়েছে ( আমার মত কিছু মূর্খ মানব এগুলো নিয়ে ঠাট্টাবিদ্রুপ করে মাঝে মাঝে, যদিও করা উচিৎ নয়)। তারপরও জানি, অনেক সুশীল সেদিন ঘরে বসে হিন্দি ফিলিম দেখে সময় কাটায়, আর সূচী অনুযায়ী ভাষন দিয়ে তালি পায়।
একটি জায়গায় এসে কিছু একটা পরিবর্তন হয়ে যায়। সে ব্যাপারে পরে আলোচনা করবো। তার আগে “ধরা যাক” দিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর খুজি-
ধরি আপনি ছাত্রশিবির করেন, এখন নিম্নোক্ত ক্ষেত্রগুলোতে আপনার ভ’মিকা কি হবে সেটা আমি জানতে আগ্রহী
১. একদিন রাতের বেলা ঘুমন্ত অবস্থায় কিছু সন্ত্রাসী (ধরেন ছাত্রলীগ) আপনার বাড়ীতে এসে আপনার আব্বা এবং আদরের ছোট ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করলো। আপনি বাড়ীতে না থাকায় আপনি বেচে গেলেন।
২. একদিন সকালে আপনার একমাত্র বোনকে কিছু সন্ত্রাসী তুলে নিয়ে ধর্ষন করে ছেড়ে দিল, সে এসে আত্মহত্যা করলো। আর এই মহান কাজে আপনারই চাচাতো ভাই তাদের সহায়তা করেছিল।
৩. আপনার বাড়ীটা দখল করতে না পাড়ায় স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোক আপনার বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দিল। এবং একদিন বাড়ীটা ঠিক দখলই করে ফেলল।
৪. আপনার সাথে এক ছাত্রলীগের কোন এক কর্মীর সাথে ঝগড়ার কারনে আপনার পরিবারের সবাইকে এক কাতারে দাড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে মেরে ফেলল
আর এত কিছু করার পর যখনই আপনি তাদের বিচার চাইতে গেলেন, তখনই ছাত্রলীগের কর্মীরা মন্ত্রী, সাংসদ, চেয়ারম্যান এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্মতৎপড়তায় রাষ্ট্রপতি তাদের ক্ষমা করে দিলেন। এখন আপনি কি করবেন? মানবেন রাষ্ট্রপতির এই বিচার ? আপনার হাতে একটি একে ৪৭ রাইফেল দেওয়া হলো, আরো কিছু কি আপনাকে বলে দিতে হবে?
৭১ এ যাদের উপর ধর্ষন হত্যা অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে তারা কি কখনো তাদের ক্ষমা করবে? শেখ মুজিবর রহমান ক্ষমা করে দিলেও কি আমরা তাদের ক্ষমা করবো? কখনই না। যারা এই বর্বর কাজ গুলো করেছে বা করতে সহায়তা করেছে তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি দাড় করাতে হবে। আপনি যদি ছাত্র শিবির ও করেন, তাহলেও আপনাকে তাদের বিচার চাইতে হবে। নয়তো আমরা ধরেই নেব আপনি মানুষ নন , আপনি ঐ জানোয়ার যে কিনা তার আপন জনকে হত্যা করার পরও স্বেচ্ছায় হত্যাকারীর শুক্রানুতে গর্ভধারন করেন।
কেউ কেউ হয়তো বলবে, বঙ্গবন্ধু তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছে। আসল সত্য আমরা জানি, আর কে এসে তাদের মুক্তি করে দিয়েছিল তাও জানি। আর যারা বঙ্গবন্ধুর ক্ষমার কথা বলেন, তাদেরকে ক্ষেত্রে যদি উপরের উল্লেখিত অপরাধ গুলো করা হয় সেক্ষেত্রে তাদের ভ’মিকা কি হবে? জানতে বড়ই মন চায়।
যারা ছাত্রশিবির করে শুধু তাদেরই নয়, প্রত্যেকেরই ক্ষেত্রেই উল্লেখিত অপরাধের জন্য নিজ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। বিএনপি বা ছাত্রদলের অনেকেই রাজনৈতিক স্বার্থে হয়তো উল্টাপাল্টা অনেক কিছুই বলে থাকে, সেটা যে তারা ভুল বলে সেটা তারা নিজেরাও জানে। এই সংকীর্ন মনমানসিকতা কাটিয়ে উঠা একান্তই প্রয়োজন। যারা ছাত্রশিবির করে তারাও জানে, তারা একটি কার সাথে ঘর করছে। আমি আহ্বান জানাই তাদেরকে, অন্তত একজন খুনীকে , একজন ধর্ষনকারীকে , একজন অগ্নিসংযোগ কারীকে অথবা তাদের সহায়তা কারীকে বিচারের মুখোমুখি দাড় করাতে এগিয়ে আসবে। প্রয়োজনে তারা জামায়াতে ইসলামী দলের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে এই কাজে শরিক হবে। কেন বর্তমান প্রজন্মের ছাত্র-শিবির জামায়াতে ইসলামী নেতাকর্মীদের অনেকে অপরাধের দায়ভার বহন করবে?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১১:০২
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×