somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম টাকা তোলার অভিজ্ঞতা

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৩:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আম্মু আব্বুর সাথে বিভিন্ন ব্যাংকে নানা কাজে নমিনি হলেও নিজের ব্যাংক একাউন্ট বলতে যা বোঝায় তা আমার কখোনোই ছিল না। প্রথম ব্যংক একাউন্ট খোলার দরকার পড়ে আইইউটি তে ভর্তির সময়, কেননা ঔখানে ভর্তির টাকা ছাত্রের নিজের ব্যাংক একাউন্টে জমা দিতে হয়। তখন ব্যাংক একাউন্ট করলেও টাকা জমা ও তোলার সব কাজ আম্মু ও আব্বুই করে দিয়েছিল, আমি শুধু সাক্ষর করেছিলাম। 8-| আসলে তখন আমি ছিলাম বুয়েট এ চান্স না পেলে ঘর থেকে এতগুলো টাকা লাগবে সেই চিন্তাতেই কাতর। |-) যাই হোক সেটি অন্য প্রসঙ্গ।

পরবর্তীতে বুয়েট এ এসে শুনলাম এইখানেও নাকি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে এবং সেখানে নাকি বোর্ড থেকে প্রাপ্ত বৃত্তির টাকা এসে জমা হবে। শুধু একটা একউন্ট খুললেই বৃত্তির টাকা ফাও ফাও নিজের কাছে চলে আসবে এটা ভেবে তখন নিজের ভেতর ব্যাপক পুলক অনুভব করেছিলাম। :) (যদিও ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য পরে যে ঝামেলা পোহাতে হইছিল তাতে সেই পুলক দুই মাসের মাঝেই ঝেড়ে দৌড় দিসিল /:))

এরপর যখন আসলেই ব্যাংক এ টাকা আসল আমাকে আর পায় কে! :D বাসায় যাই হোক না কেন আম্মু কে বলি চিন্তা করোনা আমার টাকা দিয়ে কিনে ফেলব! এভাবে বলে বলে এপর্যন্ত পিসির মাদারবোর্ড থেকে শুরু করে পেন ড্রাইভ কতকিছুই আম্মুর থেকে হাতিয়ে নিয়েছি..টাকার প্রসঙ্গ আসলেই আম্মুকে বলতাম, চিন্তা করোনা, এখন কিনে দাও আমি ব্যাংক থেকে তুলেই তোমাকে দিয়ে দিব। যদিও আম্মু মনে হয় চক্ষুলজ্জায় আমার আমার কাছে টাকা চাইত না, আর আমিও একই ধান্দায় পরবর্তীতে আরও কি কি কেনা যায়, তার প্ল্যান করতে বসতাম.. ;)

যাই হোক, কিছুদিন থেকে মনে হল বিসমিল্লাহ থেকে ব্যাংক থেকে টাকা গুলো তুলেই দেখি কেমন লাগে। যেই ভাবা সেই কাজ। এর পরের দিন হেলেদুলে ব্যাংক এ গিয়ে দেখি প্রতিটা কাউন্টারেই লম্বা লাইন। দেখে তো আমি ভয়ে ঢোক গিলে সেই যে গাড়ি তে উঠলাম, চার দিন আর বুয়েটমুখো হইনি.. :||

পরবর্তীতে গত ১২ তারিখ ছিল আমাদের নতুন লেভেল এ উঠার জন্য ব্যাংক ফি দেবার প্রথম দিন। ভাবলাম আজ টাকা তোলার ১টা ট্রাই দিই! ব্যাংক এ এসে কাউন্টারে লেখা নগদ প্রদান আর নগদ গ্রহন লেখা দেখে কোন টা যে কি, বুঝতে গিয়ে মাথার মাঝে গিট্টু লেগে গেল। B:-) কিছুক্ষন হিসাব নিকাশ করে বুঝলাম টাকা তুলতে হলে আমাকে নগদ প্রদান লেখা বুথে দাঁড়াতে হবে। অবশ্য কপাল ভাল, এইদিন টাকা তোলার লাইন টা হালকা ছিল। যাথারীতি ব্যাংক ফি দেবার টাকা আর এক বন্ধুকে গছিয়ে আমি টাকা তোলার লাইনের পাশ দিয়ে ইতস্ত:ত ঘুরতে লাগলাম। আম্মু পই পই করে বলে দিয়েছিল চেকের কোন অংশে কি লিখে কোথায় কোথায় সাক্ষর দিতে হবে, কিন্তু আমি মানুষজনের ভীড় দেখে সেইসব গেলাম সব ভুলে। :|| মাথায় হাত দিয়ে আবার লাইনের পাশে দিয়ে শুকনা মুখে ঘুরঘুর করছি এমন সময় দেখলাম মেকানিকালের তাসনীম কে। যাই হোক তার কাছ থেকে আবার নিয়মকানুন শুনে ঠিক ঠাক মত সাক্ষর দিয়ে লাইনে দাড়ালাম। ভীড় ঠেলে চেক দেবার পরে কাইন্টারের লোক চেক থেকে ১টা পিচ্চি অংশ ছিড়ে পাশের লাইনে দাঁড়াতে বলল। আমিও চিমশা মুখে পাশের লাইনের পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। দেখি আমার কিছু সামনে অ্যাসেম্বলী কোর্সের ওয়াসিউর রহমান স্যার ! হাই তুলতে তুলতে আমি লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকি আর লাইন ও শম্বুক গতিতে আগাইতে থাকে। এর মাঝে আবার ব্যাংক ফি দিতে আসা পরিচিত পোলাপাইন রা আমাকে টাকা তোলার লাইনে দেখে খাওয়ানোর জন্য আবদার করতে থাকে আর আমিও মনে মনে সুরা ইখলাস পড়ে ঢোক গিলতে থাকি। :| অবশেষে লাইন একটু একটু করে আগাইল, সাথে আমিও আগাইলাম। আমার সামনে আর একজন বাকি। আমি তো খুশিতে ইয়েস ইয়েস করছি, আর কিছুক্ষনের মাঝেই মিশন সাকসেসফুল। কিন্তু ওই লোক মনে হয় অফিসের বেতন তুলতে আসছিল, একসাথে আনসে অনেক গুলা চেক, টাকা গুনে আর সাইন করে দিতে ব্যাংক এর লোক প্রায় পনের মিনিট লাগিয়ে দিল, আর এদিকে আমার ও আর অপেক্ষা যেন শেষ হয় না..

অবশেষে আমি হাতের বাচ্চা চেক টা ফুটা দিয়ে বাড়িতে দিতেই লোক টা চেকের দুইটা অংশের নাম্বার ,টাকার পরিমান, সাক্ষর এইসব অনেকক্ষন ধরে মিলিয়ে দেখল। এর পর ফুটা দিয়ে আমার হাতে ৭টা পাঁচশত টাকার নোট দিল। আমার পাওয়া প্রথম টাকা..এবং অবশ্যই নিজের…Yeeeeee… :P

টাকা গুলো দিয়ে কি করলাম? সেটা না হয় এই বেলা উহ্যই থাক.. B-)
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×