কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছি ২৬ জুলাই ২০১৩ সালে। আমার রাজকন্যার কে স্বর্ণের চুড়ি দেওয়ার জন্য তার দাদা ছোট কালে বলেছিলো আমাকে । ভিবিন্ন সমস্যার ভেড়াজালে কেনা হয়নি বুকে লালন করা এক জোড়া স্বর্ণের চুড়ি । মুমতাহিনা জাহান এখন পুরোপুরি কথা বলতে জানে ,রাগ অভিমান সবেই এখন সে বুঝে। আমি প্রবাসে থাকি মেয়ে তেমন কথা বলে না আমার সাথে । বাবা বিদেশে থাকে এটি ভালো ভাবে জানে । আমি যখন কন্যার মা'কে কল দেই , তার মায়ের সাথে কথা গুলো শুনতাম । আমিও স্বপ্ন দেখতাম মেয়ে কে এক স্বর্ণের চুড়ি কিনে দিবো আল্লাহ যদি তোফিক দেয় ।
জুলাই ২০২১ আমার রাজকন্যা একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যাবে তার নানার বাড়ীতে ছিল । সে বাড়ীতে তার সম বয়সী খালাতো বোন বলে কিরে মুমতাহিনা তোর চুড়ি নেই? আমার নেই, তোর আছে তুই লাগা। মেয়ের মন্তব্য যখন শুনলাম চোখের কোনায় অশ্রু এসে যায় । মেয়ের মা কে বুঝতে দেইনি ।
গত দুই বৎসর ধরে আমি টাকা জমা করতে ছিলাম চুড়ি কেনার উদ্দেশ্য । সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পেলাম , ডয়েরে জমানো পয়সা টোটাল মিলিয়ে জেদ্দা বালাদ স্বর্ণের মার্কেটে গেলাম। বুকে লালন করা মেয়ের জন্য স্বর্ণের চুড়ি দেখলাম যে গুলো পছন্দ হয় , বাজেটে মিলে না। দুই ঘন্টা ঘুরে বাসায় চলে এসেছি ।
পরের দিন আবার বের হলাম, কান্দারা স্বর্ণের মার্কেটে ঘুরে পছন্দ না হওয়ায় আবার ও বালাদে গেলাম কয়েক দোকান দেখে পছন্দ করে সাড়ে ১১ গেরাম এক ছোড়া স্বর্ণের চুড়ি কিনে নিলাম। আমার বাজেট কম হওয়ায় সাথে থাকা মাকসুদ ভাই ১ হাজার রিয়াল হাওলাত দিয়েছিলো ।
পরের দিনেই আমার ভায়রা ভাইয়ের কাছে দিয়ে দিলাম । কয়েকদিন পরে মেয়ে হাতে পেয়ে যায়। কিন্তু অনেক বড় । তবুও আমারা রাজকন্যা অনেক খুশী। কারণ এখন তার স্বর্ণের চুড়ি আছে।
একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়ার পর, কন্যা সন্তানটি তার বাবার আদরের এক মাত্র পরী হয়ে থাকে। একজন কন্যা সন্তান সব থেকে বেশি আদর, স্নেহ, ভালোবাসা তার বাবার থেকেই পেয়ে থাকে। একদিন অন্যের ঘরে চলে যায় বাবার আদরের মেয়েটি।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:৫২