২০১১ সালের পর সজ্ঞানে কোনদিন কৃকেট(ক্রিকেট) খেলা দেখিনি। আমাকে কৃকেট খেলার সময় হলের টিভি রুমে কেউ কোনদিন দেখছে বলেও মনে হয়না। পৃথিবীতে সবচেয়ে অপছন্দের জিনিসগুলোর একটা কৃকেট। একমাত্র বিরাট কোহলিকে ছাড়া আর কোন কৃকেটারকে সোসাল মিডিয়ায় ফলো করি না। কারণ কৃকেট নিয়ে অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর উন্মাদনার জন্য। কৃকেট নিয়ে লোকজন পাড়ায় পাড়ায় জুয়ার আসর জমায়, কৃকেট নিয়ে ফিক্সিং হয়, স্ক্রিপটেড ম্যাচ হয়। সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে সারাদিন বসে বসে কৃকেট দেখে লোকজন যেভাবে অলস সময় কাটায় এটা আমার সবচেয়ে অপছন্দের।
তাছাড়া কৃকেট আফিমের মতোই কাজ করে কারণ যখন দেখতাম রংপুরের কৃষকেরা ৫০ পয়সা কেজিতে আলু বিক্রি করছে আর ঐ আলু ঢাকাতে ৩০ টাকা কেজি এর প্রতিবাদে রাস্তায় আলু ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ করছে আর এই নিউজ পত্রিকায় ভেতরের পৃষ্টায় ছোট্ট একটা কলামে জায়গা পায় আর সাকিবাল হাসানের কার সঙ্গে অভিমান করছে টাইপের নিউজ ফ্রন্ট পেইজে বড় বড় বোল্ড হরফে জায়গা পায় তখন অনেক কষ্ট পেতাম। একদিন ম্যাচ জিতলে বা হারলে যেভাবে রিঅ্যাকশন হতো পত্রিকায়, টিভিতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবকিছু ভুলে। তখন অন্যকোন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় আর সামনে আসতো না, মানুষকে নেশার মতো বেমালুম ভুলিয়ে দিতো। যেদিন দেখলাম কৃকেটারদের মুক্তিযুদ্ধাদের সঙ্গে তুলনা দেওয়া শুরু হইসে এরপর তো কৃকেটের খোঁজবর নেওয়া বন্ধ করে দিছি। অবশ্য আমার মতো বালছাল কৃকেট দেখলেই কি আর না দেখলেই কি!
ফুটবল খেলা দেখি নিছক আনন্দের জন্য। আমি সময় পেলে যেকোনও দেশের ফুটবল দেখি, ফুটবল আমার সবচেয়ে পছন্দের জিনিসগুলোর একটা। কারণ ফুটবলে নির্মল বিনোদন পাওয়া যায় অল্প সময় খরচ করে। আমি একজন জার্মান সমর্থক, তবে অন্য যেকোনো দেশের ভালো,নান্দনিক খেলা আমার কাছে ভালো লাগে। আমি ক্লাব হিসেবে বায়ার্ন এর সমর্থক। তবে যেকোনো ক্লাবের খেলাই ভালো লাগে যদি সেটা নান্দনিক হয়। বাংলাদেশের খেলা হলে তো ১ ঘন্টা আগে গিয়েই বসে থাকি স্টেডিয়ামে। সারাদিন উত্তেজনা কাজ করে, অন্যকোন কাজ করতে পারি না। স্টেডিয়ামে বসে সবার সঙ্গে বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে চিল্লিয়ে গলা ফাটাই, পারলে দু'একজনকে হল থেকে নিয়েও যাই।
এবারের ইয়োরোর প্রায় সবগুলো ম্যাচই দেখেছি। হাইভোল্টেজ ম্যাচগুলো তো অসাধারণ ছিলোই এর বাইরেও অনেক ছোট ছোট ম্যাচও দারুণ হয়েছে বিশেষ করে ইংল্যান্ড বনাম স্কটল্যান্ডের ম্যাচটা আমার কাছে অনেক জোসস ছিলো, ইউক্রেন, ডেনমার্ক, রাশিয়া, হাঙ্গেরি অনেক দারুণ নান্দনিক ফুটবল খেলেছে। হাঙ্গেরি বনাম জার্মানি কিংবা হাঙ্গেরি বনাম ফ্রান্সের ম্যাচটা তো শ্বাসরুদ্ধকর ছিলো। প্রায় প্রতিটা ম্যাচই অনেক ভালো ছিলো। দেখেও চোখের আনন্দ পেয়েছি।
কিন্তু গতকাল ব্রাজিল আর্জেন্টিনার ম্যাচ দেখে একটুও ভালো লাগেনি যদিও হাইভোল্টেজ ম্যাচগুলো অনেকসময় এমন হয়। তারপরও ওদের তথাকথিত সিজনাল ফ্যানদের চিল্লাফাল্লা, অস্বাস্থ্যকর, অস্বাভাবিক কাজগুলো অনেক বাজে লেগেছে। পাড়ায় পাড়ায় ব্রাজিল আর্জেন্টিনা নিয়ে মারামারি, পতাকা টাঙানো নিয়ে মারামারি এসব লেইম কাজগুলো ওরা করেছে ফুটবলের নামে।
ধন্যবাদ।