বসদের কাজের উপর নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের উন্নতি-অবনতি। বস এবং কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্কের উপর প্রতিষ্ঠানের সাফল্য-ব্যর্থতা অনেকখানি নির্ভর করে। ভাল মানুষ মানেই ভাল বস, কাজ জানেন মানেই আপনি নেতৃত্ব দিতে পারবেন এই ধারণা এখন অচল। ডেডলাইন,পারফরম্যান্স, প্রফিট, উপস্থিতি এসব যেমন প্রতিষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত জরুরী, কর্মীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও ঠিক তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। দেখে নিন, ভাল বস ও মন্দ বসের কিছু বৈশিষ্ট্যঃ
মন্দ বসঃ
১। কর্মচারীদের মানুষ হিসেবে মনে করেনা, মনে করে কার্য সম্পাদনের যন্ত্র হিসেবে
২। কর্মস্থলে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, দরকারী জিনিসপত্র সরবরাহ করেনা। ধরুন, আপনার কাজের জন্য দরকার আই থ্রি জেনারেশনের কম্পিউটার, আপনাকে দিয়া রাখছে, প্রাচীন কালের কম্পিউটার।
৩। কর্মচারীদের ব্যক্তিগত জীবন, ইচ্ছা-আকাংখার কোন মূল্য নেই এই শ্রেণীর বস দের কাছে।
৪। কর্মচারীদের কে তাঁদের কাজের উদ্দেশ্য ও অর্থ জানানোর দরকার মনে করেনা । তিনি এমন একটা সংস্কৃতি তৈরী করেন যেনো কর্মচারীরা আসবে , কাজ করবে আর তাঁদের বেতন নিয়ে যাবে।
৫। নতুন কর্মচারীদের জন্য তিনি ‘সাতরাও নয়তো ডুবে মরো’ নীতি অবলম্বন করেন, নিজে থেকে সাঁতার শিখানোর দরকার মনে করেন না।
৬। এই শ্রেণীর বসেরা প্রায় ই আক্রমনাত্মক হয়ে পড়েন, প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে তারা কর্মীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন এবং অনেক সময় সরাসরি কথা না বলে তার পছন্দের অন্য কাউকে দিয়ে কথা বলান।
৭। তারা প্রায় ই সবদিক বিচার বিশ্লেষন না করে অনুমান নির্ভর সিদ্ধান্ত দেন এবং সেই কাজে ভুলের জন্য কর্মীদের উপর দায়ভার চাপান।
৮। তিনি কখনো জিজ্ঞেস করেন না, ‘আপনি কেমন আছেন?’
ভাল বসঃ
১। এই শ্রেণীর বসেরা আপনাকে একাত্মতার অনুভূতি দিবেন। আপনি প্রতিষ্ঠানের জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে ভাল ধারণা দিবেন।
২। তিনি কর্মীদের কাজের উদ্দেশ্য ও অর্থ পরিস্কার করবেন এবং কর্মীরা বুঝতে পারবে কেনো এবং কি উদ্দেশ্যে তারা কাজ করছে।
৩। তিনি কর্মীদের কাজের স্বীকৃতি দিবেন এবং নিয়মিত ফিডব্যাক দিবেন।
৪। তিনি কর্মীদের পেশাগত বিকাশ ও তা বৃদ্ধির সুযোগ দিবেন এবং তাঁদের কাজের উপর তীক্ষ্ম নজরদারী করবেন। ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে তা থেকে শিক্ষা নেয়ার সুযোগ দিবেন। কর্মীদের মাঝে শেখার আগ্রহ তৈরী করবেন।
৫। তারা কর্মীদের চিন্তা ভাবনা ও পরামর্শকে প্রশ্রয় দিবেন। তাদের অভিজ্ঞতাকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়িত করবেন।
৬। ভাল বসেরা কর্মীদের ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক দায়িত্বকে শ্রদ্ধার সাথে দেখবেন এবং তারা যাতে এসব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ নমনীয় হবেন।
৭। যেকোন কাজ ভালভাবে সম্পাদনের জন্য কর্মী স্বাধীনতা ও অভিজ্ঞতাকে মূল্যায়ন করবেন। কোন কিছু চাপিয়ে দিবেন না।
৮। ‘সবার জন্য আমার দরজা উন্মুক্ত’ এই নীতি নিয়ে চলবেন। যেকোন প্রতিষ্ঠানের ‘পার্সন টু পার্সন’ যোগাযোগের জন্য এটি অত্যাবশ্যক ।
৯। তিনি কর্মীদের সার্বিক উন্নতির জন্য প্রতিদিন পরামর্শক হিসেবে কাজ করবেন। তাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তাদের কাজের সার্বিক তদারকি করবেন এবং ভাল মন্দ ধরিয়ে দিয়ে তাদের কে উজ্জিবিত করবেন।
১০। তিনি তার অধিনস্ত কর্মীদের কাজের ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা দিবেন এবং প্রতিটি কর্মীকে তার নিজের সম্পর্কে, তার কাজ সম্পর্কে এবং প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য যতটুকু তার প্রয়োজন হয় সব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৭