দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য পশ্চিমবঙ্গ। ওয়ান ইলেভেনের পর তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে আশ্রয় নেয়। ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর ঢাকাসহ দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের আরো কিছু সন্ত্রাসী রাতারাতি সীমান্ত টপকে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে যায়। কলকাতা নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট, স্লট লেক, দমদম ছাড়াও সীমান্ত শহর বনগাঁ, বশিরহাট, হাবড়া, বারাসাত, নদিয়া, মসলন্দপুর, বেলঘড়িয়া, গোবরডাঙা এলাকা হচ্ছে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। নিউ মার্কেট এলাকায় সন্ত্রাসীরা আবাসিক হোটেলগুলোতে বোর্ডার হিসেবে থাকে। কলকাতার দাদাদের সঙ্গে ওইসব সন্ত্রাসীর যোগাযোগ রয়েছে। পুলিশ বিশেষ অভিযানে নামলে সন্ত্রাসীরা কলকাতা ছেড়ে আশপাশের জেলাগুলোতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে।
সম্প্রতি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আইএসডি কলের ক্ষেত্রে আড়িপাতা শুরু করেছে। ফলে সন্ত্রাসীরা একের পর এক সিম পরিবর্তন আর স্থান পরিবর্তন করে কলকাতার আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। অনেকে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, ওয়ান ইলেভেনের পর বাঘা বাঘা সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, জয়, শাহাদৎ, শহীদ, বাবু ফিরোজ, কালা সোহেল পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে পুলিশ জয় আর সুব্রত বাইনকে আটক করে। ওই দুজনই পরে জামিনে মুক্ত হয়ে কলকাতায় অবস্থান করছে। আর নির্বাচনের পর কলকাতা থেকে দেশে ফেরার পথে ১৯ জানুয়ারি শার্শা সীমান্ত থেকে সিআইডি পুলিশ ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা সোহেলকে আটক করে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বর্তমানে জেএমবির হাফেজ সাইফুল, মওলানা ইউনুছ, হাফেজ ইস্রাফিল কলকাতায় পালিয়ে রয়েছে। সম্প্রতি মুফতি হান্নানের ভাই ইব্রাহিমকে কলকাতা পুলিশ আটক করেছে। এছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের আন্ডারওয়ার্ল্ডের জনযুদ্ধের ক্যাডার চুয়াডাঙ্গার আজিজ, কুষ্টিয়ার হাদুসহ চরমপন্থী দলের ক্যাডাররা পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে রয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর স্থানীয় সন্ত্রাসীরা সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে। এর মধ্যে কলকাতার গড়িয়া থেকে গাজীপুরের এমপি আহসানউল্লাহ মাস্টারের পাঁচ খুনিকে পুলিশ আটক করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কয়েকজন সন্ত্রাসী দেশে ফিরেছে। সন্ত্রাসী জঙ্গি আটকের জন্য লালবাজার পুলিশ বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।