সুত্র : প্রথম আলো
ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কে হঠাত্ কয়েকটি ছাগল চলে এল ঢাকাগামী একটি বাসের সামনে। বাসের চালক ছাগলগুলোকে চিনলেন। তিনি এদের বাঁচাতে যাত্রীদের মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলে বাসের স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে নিলেন। বাসটি মূল সড়ক থেকে ছিটকে গিয়ে ধাক্কা দিল সড়কের পাশ দিয়ে সাইকেলে করে বাড়ি ফেরা এক যুবককে। ছাগলের দল বাঁচল ঠিকই কিন্তু প্রাণ হারালেন সেই যুবক। আজ মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার সালন্দর চৌধুরীহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দীপু (১৯) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কচুবাড়ি গ্রামের যামিনী চন্দ্রের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল পৌনে নয়টার দিকে দীপু (১৯) সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।
পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা বাবলু এন্টারপ্রাইজ নামের ঢাকাগামী বাসটি মহাসড়কের সালন্দর চৌধুরীহাট এলাকায় পৌঁছালে আচমকা কয়েকটি ছাগল বাসের সামনে চলে আসে। এ সময় চালক বাসের স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে নিলে বাসটি সড়কের পাশের স্তূপ করে রাখা কাঠের গুঁড়িতে আছড়ে পড়ে সাইকেল আরোহী দীপুকে ধাক্কা দেয়। এতে দীপু ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাসচালক এ সময় মহাসড়কেই বাসটিকে আড়াআড়ি রেখে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার প্রতিবাদে ও সালন্দর চৌধুরীহাট এলাকায় গতিরোধকের দাবিতে ঘণ্টাখানেক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এবং মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেয় এলাকার লোকজন। এদিকে ঠাকুরগাঁও জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি আবদুল খালেকের মধ্যস্থতায় ২৮ হাজার টাকার বিনিময়ে নিহতের বাবার সঙ্গে বিষয়টির মীমাংসা হয়।
এ প্রসঙ্গে নিহত দীপুর বাবা যামিনী চন্দ্র বলেন, ‘ছেলে মারা গেছে, মামলা করলে তো আর ছেলে পাওয়া যাবে না। তা ছাড়া মামলায় বহু ঝামেলা। তাই শ্রমিক ইউনিয়নের প্রস্তাব মেনে নিয়েছি।’
ঠাকুরগাঁও জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি আবদুল খালেক বলেন, কোনো চালক ইচ্ছা করে কোনো প্রাণীকে মারতে চান না। ছাগলের দল বাঁচাতে একটি মানুষ মারা গেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাই বিষয়টি মীমাংসার জন্য নিহত দীপুর বাবাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘শুনেছি স্থানীয় পর্যায়ে বিষয়টির মীমাংসা হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান চালকদের যোগ্যতা সম্পর্কে বলেছিলেন, গরু-ছাগল চিনতে পারলেই কোনো চালক লাইসেন্স পেতে পারেন।