কুমিল্লায় ছাত্রলীগের এক কর্মীকে পায়ের রগ কাটার পর মাথায় গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় কোন্দলের জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর দক্ষিণ উপজেলার শামবক্সি চৌমুহনী এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহত রাসেল খন্দকার (ছোট রাসেল) একটি হত্যামামলার প্রধান আসামি। রাসেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্ত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদকারী নূরুল ইসলাম আপেলকে গত বছরের ২৫ জুলাই কুমিল্লা সরকারি কলেজে হত্যা করেন তিনি। আপেল হত্যামামলায় গত ১৮ জানুয়ারি কোতোয়ালি থানা পুলিশ রাসেলকে গ্রেপ্তার করছিল। তবে জামিনে বেরিয়ে আসার পর তিনি হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হলেন।
স্থানীয়রা জানায়, রাসেল তার এক বন্ধুকে নিয়ে শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে শামবক্সি চৌমুহনীতে বল্লভপুর সড়কে ওঁৎ পেতে থাকা ৮/১০ জন তাদের আটকায়। রাসেলকে ছুরিকাঘাতের পর গুলি চালিয়ে হামলাকারীরা মোটর সাইকেল ও সিএনজি অটো রিকশায় চড়ে চলে যায়। গুলিবিদ্ধ রাসেল আধা ঘণ্টা সড়কে পড়ে থাকলেও ভয়ে স্থানীয় কেউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। তারা পুলিশে খবর দেয়। সদর দক্ষিণ মডেল থানার উপপরিদর্শক ইমাম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাসেলকে জীবিত অবস্থায় কাতরাতে দেখি। ওই সময় সে রক্তাক্ত ছিল।” রাত পৌনে ৮টার দিকে রাসেলকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সদর দক্ষিণ উপজেলার চাষাপাড়া গ্রামের খন্দকার বাড়ীর মৃত মেজবাহ উদ্দিন খন্দকারের ছেলে রাসেল। তার কোনো আত্মীয়-স্বজনকে রাতে হাসপাতালে দেখা যায়নি। সদর দক্ষিণ থানার ওসি জসীম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েক জনের নাম জানা গেছে। তবে এজাহার দেওয়ার আগে নাম বলা যাচ্ছে না।” স্থানীয়রা জানায়, ছাত্রলীগের পরিচয়ে থাকা রাসেলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের বহু অভিযোগ রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানিতে তার সংশ্লিষ্টতারও অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে অন্য একটি পক্ষের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। ওসি বলেন, “রাসেলকে দেড় মাস আগেও চৌয়ারা এলাকায় একবার আটক করেছিলাম। তখন সে বলেছিল, আপেল হত্যামামলায় সে জামিনে আছে।”
২০১১ সালের ২৫ জুলাই কুমিল্লা সরকারি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের সামনে বাণিজ্য বিভাগের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করা হলে তার স্বামী নূরুল ইসলাম আপেল ঘটনাস্থলে গিয়ে তার প্রতিবাদ করে। সেদিন বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা আপেলকে ক্যাম্পাসেই ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। ওই ঘটনায় মামলায় রাসেলকে প্রধান আসামি করা হয়েছিল।
Click This Link