somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশকে অবহেলার কিছু নাই

০৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৩১৪ ডলার। যেসব দেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬ ডলার থেকে শুরু করে ৪ হাজার ১২৫ পর্যন্ত সেসব দেশকে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশের তালিকায় রাখা হয়। বুধবার গভীর রাতে (বাংলাদেশ সময়) বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত এ তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ। স্থিতিশীল মোট জাতীয় আয়ের কারণেই বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। আগে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৪৫ ডলার বা তার নিচে ছিল। যে কারণে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে এতদিন নিম্ন আয়ের তালিকায় ছিল।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৩১৪ ডলার। বিশ্বব্যাংকের পদ্ধতি অনুযায়ী তা এখন ১ হাজার ৪৫ ডলারকে ছাড়িয়ে গেছে। এ কারণেই নতুন তালিকায় নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ হতে পেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সঙ্গে কেনিয়া, মিয়ানমার ও তাজিকিস্তানও নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে বলে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের এই তালিকা প্রকাশের পর বাংলাদেশের সর্বত্র বয়ে যায় আনন্দের বন্যা। বিশেষ করে সরকারী মহল উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে। কারণ দেশের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার এ সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টারই ফল- ‘বাংলাদেশ এখন নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ কখনও কোন অবস্থাতেই নিম্ন থাকতে চায় না। সবসময় উঁচুতে উঠতে চায়। উঁচুতে ওঠার জন্য যা যা করণীয় বর্তমান সরকার তা করবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী দু থেকে তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে।’
বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আর বিশ্বব্যাংকের এই মূল্যায়নে খুশি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও। তিনি বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যে সহায়তা পেয়ে আসছিল, তা ’২১ সাল নাগাদ পাওয়া যাবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন, ‘সবাইকে অবাক করে দিয়ে বিশ্বব্যাংকই বলেছে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে।’
বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত তালিকায় বলা হয়, বাংলাদেশের বার্ষিক মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৩১৪ ডলার। প্রতিবছরের ১ জুলাই মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় অনুসারে বিশ্বের দেশগুলোকে চারটি আয় গ্রুপে ভাগ করে বিশ্বব্যাংক। এরমধ্যে যাদের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৪৫ ডলার বা তার নিচে, তাদের বলা হয় নিম্ন আয়ের দেশ। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে এ তালিকাতেই ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান মাথাপিছু জাতীয় ১ হাজার ৩১৪ ডলার। আর এ কারণেই বাংলাদেশ নতুন তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। এখন থেকে নিম্ন মধ্য আয়ের (এলএমআই) দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পাবে বাংলাদেশ। যদিও বর্তমান সরকারও ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর আগে মানব উন্নয়ন সূচকসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের মানদ- অনুযায়ী কোন দেশের মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ৭৩৬ ডলার হলে তাকে উচ্চ আয়ের দেশ ধরা হয়। এ বছর আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, ভেনিজুয়েলা ও সেসেলস উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশ থেকে উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। সবচেয়ে নিম্ন মাথাপিছু জাতীয় আয়ের দেশ হচ্ছে মালাবি ও সর্বোচ্চ মাথাপিছু জাতীয় আয়ের দেশ হচ্ছে মোনাকো। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনৈতিক ভূগোলের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৯৪ সালে যেখানে বিশ্বের ৬৪ নিম্ন-আয়ের দেশে ৩১০ কোটি লোক (বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬৪ দশমিক ১ শতাংশ) বাস করত ২০১৪ সালে সেটি ৩১ দেশে ৬১ কোটি ৩০ লাখ লোকের (বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৮ দশমিক ৫ শতাংশ) মধ্যে নেমে এসেছে।
খুশি অর্থমন্ত্রী ॥ বিশ্বব্যাংকের এই মূল্যায়নে খুশি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তবে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যে সহায়তা পেয়ে আসছিল, তা আরও কয়েক বছর পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ভুটানের অর্থমন্ত্রী লিয়েনপো নামগে দরজির সঙ্গে বৈঠকের পর সচিবালয়ে মুহিতের কাছে বিশ্বব্যাংকের স্বীকৃতির প্রতিক্রিয়া জানতে চান সাংবাদিকরা। তিনি বলেন, এটা তো আমার কাছে খুব খুশি লাগার কথা, আমরা তাদের কাছে বলিও নাই তোমরা রি-কনসিডার করো এই মুহূর্তে, তারা করে ফেলেছে। তবে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিটি জাতিসংঘের কাছ থেকে আসবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। ওটা নেয়ার একটা প্রসেস আছে ইউএন-এ, সেটা তারা শুরু করবে কিছুদিন পরে, সেটা আবার তিন বছরের মতো লাগবে, তারপর জাজমেন্ট দেবে। বিশ্বব্যাংকের ঘোষণায় কী সুবিধা হলো বাংলাদেশেরÑ জানতে চাইলে মুহিত বলেন, সুবিধা হলো, এটি আমাদের একটি স্যাটিসফ্যাকশন, আমরা লিস্ট ডেভেলপড ফর ফরটি ইয়ার্স, এটা থেকে আমাদের একটি প্রমোশন হলো। এতে আমাদের আত্মগরিমা বাড়ে, তার প্রমাণ আমরা নিজেরাই দিচ্ছি। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এত দিন পেয়ে আসা সুবিধাগুলো চলে যাবে কিনাÑ এই প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলডিসি সুবিধা উইথড্র করতে আরও অনেকদিন সময় লাগবে, ইট শুড বি রাফলি থ্রি টু ফোর ইয়ার্স। তিনি বলেন, ইউএন সিডিপি কমিটির ফাইনাল ডিসিশন ২০১৮-১৯ এর আগে আসবে না। এজন্য কোন অসুবিধা হবে না, শেষ হতেও আরও চার বছর লাগবে। ভুটানের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা ভারতে হাইড্রো পাওয়ার রফতানি করছে, আমরাও তাদের কাছে এটি চাচ্ছি। ট্রান্সমিশন লাইন ফাইনাল হয়েছে, নেপাল ইন্ডিয়া টু বাংলাদেশ ভায়া ভুটান হয়ে আসবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বললেন ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে, সেদিন খুব বেশি দূরে নয়। তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে ঘোষণা করেছে বিশ্বব্যাংক।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকরা এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে অনেকে অনেক রকম মন্তব্য করেছিলেন, তখন এই বিশ্বব্যাংকও বলেছিল বাংলাদেশ একটা দরিদ্র দেশের মডেল। মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন, বাংলাদেশ কিছুই না, একটা তলাবিহীন ঝুড়ি, এখানে যতই দেয়া হবে, তলানিতে শেষ হবে। আজকে সে সব লোকজনই বলে বাংলাদেশ উদাহরণ। সবাইকে অবাক করে সেই বিশ্বব্যাংকই বলেছে, বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরে আমরা তিন শ’ মিলিয়ন ডলার রফতানি করতাম, আর এখন ৩১/৩২ বিলিয়ন ডলার রফতানি করি। আমাদের রিজার্ভ ছিল না, এখন ২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। রেমিটেন্স এখন ১৫ বিলিয়নের বেশি। তিনি বলেন, রূপকল্প ঘোষণা অনুযায়ী ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ, বিশ্বব্যাংকের ঘোষণার মধ্যদিয়ে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যাচ্ছি। Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×