পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দুই হাজার ৪০০ টাকার বেশি দিতে রাজি হচ্ছে না মালিকপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকপক্ষ চাইছে, ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা। এ অবস্থায় কাল সোমবার মজুরি কমিশনের শেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভাতেই নিম্নতম মজুরিও চূড়ান্ত করা হবে এবং ২৯ জুলাই তা ঘোষণা করা হবে।
আজ রোববার সংসদ ভবনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির এক সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রীপোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দুই হাজার ৪০০ টাকার বেশি দিতে রাজি হচ্ছে না মালিকপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকপক্ষ চাইছে, ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা। এ অবস্থায় কাল সোমবার মজুরি কমিশনের শেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভাতেই নিম্নতম মজুরিও চূড়ান্ত করা হবে এবং ২৯ জুলাই তা ঘোষণা করা হবে।
আজ রোববার সংসদ ভবনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির এক সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেন এ কথা জানান। কমিটির সভাপতি ইসরাফিল আলমের সভাপতিত্বে এ সভায় পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে রাখার সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক শেষে শ্রমমন্ত্রী মোশারফ হোসেন মন্ত্রণালয়ে আবারও পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজেএমইএর নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। এ সভাতেও সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইসরাফিল আলম উপস্থিত ছিলেন। এতে মালিকপক্ষ ন্যূনতম মজুরি দুই হাজার ৪০০ টাকার বেশি দিতে রাজি হয়নি।
ইসরাফিল আলম প্রথম আলোকে বলেন, মালিকপক্ষ গ্যাস, বিদ্যুৎসমস্যার কথা উল্লেখ করে ন্যূনতম মজুরি দুই হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে রাখার দাবি জানায়।
খন্দকার মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মজুরি কমিশন সোমবার বৈঠক করে পোশাকশ্রমিকদের বেতনকাঠামো চূড়ান্ত করবে। তিনি বলেন, ‘মালিকপক্ষ তাদের আগের অবস্থান থেকে অনেকটা সরে এসেছে। আশা করি, তারা আরেকটু এগিয়ে আসবে।’
প্রসঙ্গত, বর্তমানে পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি এক হাজার ৬৬২ দশমিক ৫০ টাকা। ২০০৬ সালে এ মুজরি নির্ধারিত হয়েছিল। এরপর বর্তমান সরকার গত ১৪ জানুয়ারি পোশাক খাতের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণে বোর্ড গঠন করেছে। বোর্ডের কয়েক দফা সভায় শ্রমিক প্রতিনিধিরা ন্যূনতম মজুরি কমপক্ষে ছয় হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণের দাবি করেছিলেন। তবে মালিকপক্ষ দিতে চায় সর্বোচ্চ মাত্র দুই হাজার ৪০০ টাকা। প্রথমদিকে মালিকপক্ষ এক হাজার ৯০০ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল। এরপর কয়েক দফা বৈঠকের পর তা বেড়ে এখন দুই হাজার ৪০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
সংসদীয় কমিটিকে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গবেষণা অনুসারে বাংলাদেশে ধারাবাহিক শ্রমিক অসন্তোষের মূলে রয়েছে কম মজুরি। ফলে গোটা পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পোশাকশিল্পে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত কয়েক বছরে শতাধিক শ্রমিক অসন্তোষ এবং অনেক কারখানায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর হয়। বাংলাদেশে পোশাকশ্রমিকদের বেতন বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে কম বলে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়।
শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতনকাঠামো সম্পর্কে শ্রমমন্ত্রী বলেন, মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকার মালিকদের চাপ দিতে পারে না। আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য বেতনকাঠামো করতে পারে। যাতে মালিক-শ্রমিক সবাই বাঁচে। তিনি বলেন, পোশাকমালিকদের ভাবতে হবে, তারাই এ সেক্টরের সবকিছুর মালিক না। এই শিল্পে শ্রমিকদের অবদানও অনস্বীকার্য। তাঁদের বঞ্চিত রেখে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
মন্ত্রী বলেন, সোমবারের সভায় পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত করবে মজুরি বোর্ড। এরই মধ্যে এ ব্যাপারে ১২টি বৈঠক করেছে তারা। তিনি জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ২৮ জুলাই পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরিকাঠামো ঘোষণার কথা থাকলেও সরকারি ছুটি হওয়ায় এক দিন পর তা ঘোষণা করা হতে পারে
প্রথম আলোর সৌজন্যে
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




