-তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?
-কেন, কোনো সন্দেহ আছে?
-তা বলছি না।
-তাহলে?
-ভালোবাসো কি না সেটা বলো।
-এই যে আমি বেঁচে আছি, এটাই বড় প্রমাণ।
-বেঁচে আছো সেটা তো আমিই জানি। পৃথিবীতে এখন সাতশত পঞ্চাশ
কোটি মানুষ বেঁচে আছে, তারা কি সবাই ভালোবাসে?
-সবাই ভালোবাসে কি না আমি জানি না তবে...
-তবে আবার কী?
-তোমাকে ভালোবাসি বলেই তো বেঁচে আছি।
-আমি তো এভাবে শুনতে চাইনি, আমার কথার সরাসরি উত্তর দাও।
তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?
-হ্যাঁ ভালোবাসি।
-তাহলে তার প্রমাণ দাও।
মবিন তার মুখটি সাবিহার মুখের কাছে নিয়ে দুগালে দুটি চুমু দিয়ে বলল,
‘এই তার প্রমাণ।’
সাবিহা লজ্জায় যেন লাল হয়ে গেল। ওপরের চোখের পাতা আস্তে আস্তে নিচের চোখের পাতার সাথে মিলিয়ে গেল। বুকের ভেতর আটকে থাকা সকল ভালোবাসার দুয়ার খুলে নাচতে লাগল। এরপর সেই লজ্জামাখা মুখটি অন্যদিকে ঘুরিয়ে কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে বলল, ‘অসভ্য কোথাকর।’ মবিন হাত দিয়ে সাবিহার মুখটি সোজা করল। এরপর একদৃষ্টিতে সাবিহার দিকে তাকিয়ে রইল। চারদিকে অন্ধকার, তবে রেললাইনের ওপরে অন্ধকার অনেকটাই কম। চাঁদের আলো রেললাইনের ওপরে পড়াতে অনেকটা আধো-আলো আধো-ছায়ার মতো অবস্থা। সাবিহার মুখের ওপরেও পড়েছে চাঁদের সেই আধো-আলো আধো-ছায়া। আর সেই চাঁদনিমাখা রাতে মবিন সাবিহার মাঝে খুঁজছে ভালোবাসার ছায়া। যে ছায়ায় মাথা লুকিয়ে কাটিয়ে দিতে চায় বছরের পর বছর যুগের পর যুগ। সাবিহা মবিনকে একটু ভ্রুকুটি করে বলল, ‘আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে কী দেখো। আমার লজ্জা করছে তোমার বেহায়া চোখ দেখে। তুমি একটা অসভ্য।’ এ কথা বলতেই সাবিহার মনে পড়ে গেল মবিনকে বলা সেই পুরোনো কথা, “আমি চাই না তুমি সভ্য হয়ে যাও, তোমার চোখদুটি সভ্য হয়ে যাক। আমি চাই তোমার চোখদুটি অসভ্যই থাকুক। যেদিন তোমার ঐ চোখদুটি সভ্য হয়ে যাবে সেদিন বুঝে নেব আমার প্রতি তোমার আর কোনো ভালোবাসা নেই।”
উপন্যাসঃ অপেক্ষা-৩
আসছে একুশে বইমেলা ২০২০ এ
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৫৪