somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্রদলের গৌরবউজ্জ্বল(!) রাজনীতির ইতিহাসঃ পর্ব-১ (১৯৭৮-১৯৯২)

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১/ এনামুল করিম শহীদ-জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক এবং প্রথম সভাপতি।রাজনৈতিক মহলে দক্ষ পল্টিবাজ হিসেবে স্বীকৃত।নিজের দল বিএনপিতে সুবিধা করতে না পেরে যোগ দেন জাতীয় পার্টিতে,কিন্তু সেখানেও অচ্ছুত থেকে আবার পল্টি নেন বিএনপিতে। ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারী দৈনিক জনকণ্ঠকে আক্ষেপ করে বলেছিলেন,'জিয়ার দলে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মূল্যায়ন নেই,আছে শুধু দুর্নীতিবাজদের।খালেদা জিয়া যোগ্যদের অবমূল্যায়ন করেছেন।

২/ গোলাম সারওয়ার মিলন ১৯৮০ সেশনে ছিলেন ছাত্রদলের আহবায়ক, ১৯৮১-৮৩ সালে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন,কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার ঠাই হয়নি মূল দল বিএনপিতে,যোগ দেন জাতীয় পার্টিতে।পরে জাতীয় পার্টি থেকেই মন্ত্রী ছিলেন।


৩/ সারোয়ার মিলন কমিটির সাধারণ সম্পাদক,পরের কমটির আহবায়ক,তারও পরের কমটির সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী।তিনিও বিএনপিতে অচ্ছুত হয়ে যোগ দেন জাতীয় পার্টিতে।


৪/ আবুল কাশেম চৌধুরী যখন সভাপতি তখন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হন জালাল আহমেদ।এর পর শামশুজ্জামান দুদু কমিটিরও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।পরবর্তীতে জালাল-বাবলু কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনিও পূর্বসূরীদের মত শেষ পর্যন্ত মূলদল বিএনপিতে টিকতে পারেননি,যোগ দেন জাতীয় পার্টিতে।


৫/ ১৯৮৬-১৯৮৭ সেশনে প্রথমে জালাল আহমেদ এবং পরবর্তীতে আসাদুজ্জামান রিপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মাহবুবুল হক বাবলু। মুহসীন হলে এক বোমা বিস্ফোরণে মারা যান।অভিযোগ রয়েছে নেতৃত্বের পথ পরিষ্কার করতে এর পরের কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং তার পরের কমিটির আহবায়ক আমানউল্লাহ্‌ আমান মুহসীন হলের তৎকালীন ভিপি রফিককে দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান।


৬/ ১৯৮৭ সালের মাঝামাঝি থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত দুই টার্মে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃত্বে ছিলেন আমানউল্লাহ্‌ আমান, একবার সাধারণ সম্পাদক এবং পরের বার আহবায়ক। তার বিরুদ্ধে তৎকালীন নেতাদের প্রধান অভিযোগ,এরশাদের এজেন্ট হিসেবে ছাত্রদলকে দুর্বল করে দেয়া।ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম-খুনের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। ১৯৮০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে এই দেশের মেধাবী প্রজন্ম ধ্বংসের সর্বনাশা খেলার সূচনা তিনিই করেছিলেন।অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে তার আপন চাচাত ভাই শরিফুলকে দিয়ে প্রক্সি দেওয়ান। ৯১ সালে মন্ত্রী হয়ে তিনি ব্যপক দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন।

তখন থেকেই একটা প্রবাদ আছে 'খালেদা জিয়ার কামান আমান উল্লাহ আমান , দুহাতে শুধু টাকা কামান আর কামান'

ছাত্রদলের রাজনীতিতে নিরুকে কোণঠাসা করতে প্রথমে তিনি ইলিয়াস আলীকে এবং পরবর্তীতে রতনকে ব্যবহার করেন ইলিয়াস আলীকে কোনঠাঁসা করতে।অবশ্য পরবর্তীতে নিজের প্রয়োজনেই মোসাদ্দেক আলী ফালুর সাথে মিলে ইলিয়াস আলীকে জেলে পাঠানো হয় এবং রতনকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়।

২০০৮ সালের নির্বাচনে নিজে মনোনয়ন না পাওয়ায় নিজ আসনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

৭/ সানাউল হক নীরু, ১৯৯০ সাল গঠিত ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক। বোমা বিস্ফোরণে নিহত মাহবুবুল হক বাবলুর আপন ভাই তিনি।আমানউল্লাহ্‌ আমানের সাথে বিরোধে জড়িয়ে তিনি মুলত আলোচনায় আসেন।তার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ,ক্যাডার রাজনীতি।

নীরুও তলে তলে এরশাদের ঘাটের জল খেয়েছেন।টিএসসিতে ডা.মিলন হত্যাকাণ্ডের পর সেই সময়ের দুই কুতুব গোলাম ফারুক অভি এবং সানাউল হক নীরুর ভূমিকা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ!অনেকেই মনে করেন,সেই সময়টাতে তারা এরশাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন।পরিস্থিতি নাকি এমন ছিল,জনতা অভি-নীরুকে যেখানে পাবে সেখানেই গণপিটুনি দিয়ে মারবে।

৯০এ নীরুর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের মনেও সন্দেহের প্রভাব অনেক বাড়িয়ে তুলেছিল।সম্ভবত সেই কারণেই,৯০ এর পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত নীরু অনেকটা আত্মগোপনেই ছিল। ২০০৬ সালে বদরুদ্দোজা চৌধুরী 'বিকল্পধারা বাংলাদেশ' গঠন করলে নীরু এই দলে যোগ দেন।কিন্তু,দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে তিনি অনেকটা ভ্যালুল্যাস হিসেবে গন্য হন।এখন অবশ্য মূলদল বিএনপির সাথে কাজ করছেন,তবে এখনো তিনি অচ্ছুত।

(চলবে)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×