somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিমুরাইজ = ৪

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
হিমুরাইজ = ০১

হিমুরাইজ = ০২

হিমুরাইজ = ০৩



হিমুরাইজ = ০৪

আমাকে ঘিরে অনেক মানুষ দাড়িয়ে আছে।সবার একটাই উদ্দেশ্য আমার অটোগ্রাফ নিবে।অটোগ্রাফ দিতে দিতে আমার হাতে ফোসকা পড়ার মত অবস্থা।আমি এখন খ্যাতিমান লেখক।বাংলার যত মজার গালি বইটা লিখে পত্রিকায় প্রকাশ করেছিলাম বইটা নিষিদ্ধ হয়েছে।তাতেই বইটার বিক্রি হু হু করে বেড়ে যায়।আমি রাতারাতি হয়ে যায় খ্যাতিমান লেখক।আমার পরবর্তী বইয়ের নাম রেখেছি,গালি দেই না যে অমানুষ সে।আসলে বইটার মাধ্যমে আমি বোঝাতে চেয়েছি পৃথিবীতে প্রত্যেক মানুষই গালি দেয়।গালি দেয় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর।বরং যে গালি দেয় না সে মানুষই না।গালি ছাড়া মানুষ চিন্তাও করা যায় না।বিভিন্ন চ্যানেল থেকে লোক এসেছে আমার সাক্ষাৎকার নিবে।সাক্ষাৎকার দিতে আমার ভাল লাগে না। বিষেশ করে ক্যামেরার সামনে।কারন এই সাক্ষাৎকারের সময় অনেক মিথ্যা কথা বলতে হয়।কোন সাক্ষাৎকারে হয়তো জিজ্ঞেস করল প্রেম-ট্রেম করেছি কিনা।তখন যদি বলি না করিনি তখন সোমা আমাকে আস্ত রাখবে না।আবার যদি বলি প্রেম করেছি, সাক্ষাৎকারে প্রেমিকার নাম জানতে চাইবে।নাম না বললেও সমস্যা তখন সোমা বলবে,আমাকে ভালবাস আর আমার নামটা বলতে পারলে না।আসলে খ্যাতিমান হয়ে সুখ নেই,বিড়াম্বনাও আছে।এক সাক্ষাৎকারে আমার গলায় ইয়া বড় এক ফুলের মালা পরিয়ে দিল।আমি ফুলের ভারেই বসে পড়লাম।হঠাৎ সজিব ভাই কোথা থেকে এসে ডাকাডাকি শুরু করলেন।আর ভাল লাগে না কাজের সময় যত সব ডাকাডাকি।সজিব ভাই আমার কান ধরে টান দিয়ে বলছেন,এই হাদারাম রাতে কি চুরি করে হাটতে বেরিয়েছিলি যে এত ঘুমাচ্ছিস।ওঠ সোমা ফোন করেছে লাইনে আছে তাড়াতাড়ি যা।আরে এতক্ষন তাহলে আমি সপ্ন দেখছিলাম!
আমি উঠে ফোনের কাছে গেলাম।ফোন কানে নিতেই শুনতে পেলাম সোমা হ্যালো হ্যালো করছে।
কি ব্যাপার চুপ করে আছ কেন?আমি তোমার নিঃস্বাশের শব্দ শুনতে পাচ্ছি আর তুমি চুপ করে আছ!
কি বলব তুমি আমাকে হেলতে বলছ আর এ দিকে আমি তো হেলতে হেলতে প্রায় পড়েই গেছি।
আমার সাথে ফাজলামি করবা না।
আচ্ছা করব না।
শোন বিকালে আমার সাথে পৌরপার্কে দেখা করবে।
জ্বী করব।
আমার কথা যেন মনে থাকে।
জ্বী আপনার কথা আমার মনে থাকবে।
তুমি আমার সাথে আপনি আপনি করছ কেন?
আচ্ছা আপনার সাথে আর আপনি আপনি করব না।
আসলে তুমি একটা রাবিস।
আচ্ছা সোমা তুমি কি এটা আমাকে গালি দিলে?
হ্যা দিয়েছি তোমার মত গাধারামকে গালি দেওয়াই উচিৎ।
একটু আগে সজিব ভাই আমাকে বললেন হাদারাম,এখন সোমা আমাকে বলছে গাধারাম,তাহলে হাদারাম আর গাধারাম কি দুটি মজার গালি?
হ্যালো সোমা এক মিনিট।তুমি লাইনে থাকো প্লিজ।
ফোন রেখে আমি ছুটলাম সজিব ভাইয়ের লেখার ঘরে কাগজ আর কলম আনতে।গালি গুলো নোট করে নিতে হবে তা না হলে পরে ভুলে যাব।ইদানিং কিছুই মনে রাখতে পারছি না।বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের স্মৃতি শক্তিও যে লোপ পেতে শুরু করে এখন তা বুঝতে পারছি।কাগজ খুঁজে পেয়েছি কিন্তু কলম খুজে পাচ্ছি না।আসলে কাজের সময় কিছুই খুজে পাওয়া যায় না।সজিব ভাই এখন হয়তো রান্না ঘরে নতুন কোন রেসিপি তৈরী করছেন।সজিব ভাইয়ের অনেক গুলি হবির মধ্যে নিত্য নতুন রেসিপি তৈরী করা তিনার একটি অন্যতম হবি।আর আমি যে দিন সাথে থাকব সে দিন তো এক রকম নয় কম করেও তিন চার পদের ভিন্ন আইটেমের রেসিপি তৈরী করবেন।মজা না হলেও আমি খুব মজা করে খাই।যতই হোক সজিব ভাই কষ্ট করে রান্না করেন মজা করে না খেলে তিনি আবার কষ্ট পাবেন।কলম খুঁজে পেতে আমার তিন মিনিট!হ্যালো সোমা লাইনে আছ?ধন্যবাদ তোমাকে।
থাক আর ধন্যবাদ দিতে হবে না।মনে করে বিকালে আসবে কিন্তু।
আসব মনে করেই আসব।না মনে করে কি কেউ আসে?
এখন লক্ষী সোনার মত বলত তুমি আমাকে কি যেন গালি দিয়েছিলে।
ও হ্যা মনে পড়েছে,রাবিস।আচ্ছা সোমা এই রাবিস গালিটির অর্থ ও উৎপত্তি কোথা থেকে প্লিজ একটু বলবে।আমি নোট করে নেব।
তুমি একটু থামবে নীল।ফান করা আমার একদম পছন্দ না।
আমি ফান করছি না সোমা তুমি শুনলে খুশি হবে যে আমি মজার মজার গালির উপর একটা বই লিখছি।বইটার নাম বাংলার যত মজার গালি।
তুমি আমাকে এই বইটা লেখার ব্যাপারে হেল্প করতে পারবে?
একটু আগে সজিব ভাই আমাকে বললেন হাদারাম তুমি আমাকে বলেছ গাধারাম এ দুটিও কি মজার গালি?
খট করে শব্দ হল,মনে হচ্ছে সোমা রাগ করে লাইন কেটে দিয়েছে।বেচারি আমাকে নাকি ভালবাসে।তার ভালবাসার মানুষ একটি বই লিখতে চাইছে অথচ সে কোন হেল্প করবে না।হেল্প চাইলাম বলে রাগ করে লাইন কেটে দিল।আপাতত সোমার সাথে বিকালে দেখা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিলাম।
ইউরেকা পেয়েছি আমি এত চিন্তা করছি কেন।বইটা কোন ভাবে লিখতে পারলে হল প্রকাশ করা নিয়ে ভাবতে হবে না।কারন সজিব ভাই তো রাত্রে বলেছেন,তিনি খুব শিঘ্রই একটা প্রকাশনা খুলবেন।আমি তিনার কাছের মানুষ সেই হিসাবে তিনি নিশ্চয় আমাকে একটা সুযোগ দিবেন।কিন্তু সমস্যা হল বইটার কথা সজিব ভাইয়ের সাথে বলতে পারছি না।
নীল খাবার রেডি তাড়াতাড়ি খেতে আয়।
খাবার টেবিলে গিয়ে দেখি চার পদের রেসিপি।কোনটা কি রেসিপি ঠিক বুঝতে পারছি না।তবে ভাল একটা ঘ্রান নাকে আসছে।খেতে মজাই লাগবে হয়তো।
শোন নীল আজ তৈরী করেছি কলার খোসার চপ,কাঠালের বিচির সুজি,টাকি মাছ ভর্তা ও লাবড়া।আমি মজা করে সব রেসিপি একটু একটু করে খাচ্ছি।মাথার মধ্যে চলছে সোমার বলা সেই গালি, রাবিস ।
কিরে নীল কি ভাবছিস?
না ভাইয়া কিছু ভাবছি না।
আমি দিব্যি দেখছি তুই কিছু ভাবছিস আর আমার সাথে মিথ্যা বলছিস।
তোকে না বলেছি আমার সাথে মিথ্যা বলবি না।তুই বলতে পারতিস হ্যা কিছু ভাবছি কিন্তু তোমাকে বলা যাবে না।
না মানে রাবিস।
রাবিস তো একটা গালি।
হ্যা গালি তবে রাবিস এর অর্থ কি তা খুজে পাচ্ছি না।
রাবিস অর্থ অপদার্থ।হঠাৎ রাবিসের অর্থ জানতে চাইছিস ব্যাপার কি বলত?
সোমা আমাকে রাবিস বলেছে।
কথাটা শুনে সজিব ভাই হো হো করে অট্ট হাসি দিয়ে উঠলেন।এই অট্ট হাসি আমার মোটেও ভাল লাগল না।আসলে অট্ট হাসি কেউ পছন্দ করে না।সবাই পছন্দ করে ইসমাইলিং অর্থাৎ মুচকি হাসি।মুচকি হাসি দেওয়া আমাদের নবী ( সাঃ ) পছন্দ করতেন।রাবিস অর্থ সজিব ভাই বললেন অপদার্থ।কিন্তু আমি এই অর্থটা মেনে নিতে পারছি না।
রা-বিষ,আমার মনে হয় এটা কোন জাতীয় বিষের নাম হতে পারে।পৃথিবীতে তো ভিন্ন নামে কত রকমের বিষ আছে তার ঠিক নাই যেমন,নগস,থায়োডিন,ড্যাফোলিল,অক্সার আরও কত কি।তেমনই রা এক ধরনের বিষের নামই হবে হয়তো।না আর ভাবতে পারছি না।বেশি ভাবলে ইদানিং মাথার ভেতরে কেমন জানি করে।মাথাটা একটু ধরেছে মনে হয়।নাস্তা খাওয়া শেষ।সজিব ভাইয়ের রেসিপি গুলো ও অসাধারন।তবে চাটা ভাল হয় নি।এখন বিল্টু ভাইয়ের চায়ের দোকানে গিয়ে এক কাপ কড়া লিকারের দুধ চা না খেলে মাথা ঠিক হবে না।আমি বাইরে যাচ্ছি সজিব ভাই তুমি যাবে?
নারে আমি একটু পরে যাব।একটা নতুন বিষয়ে অনুকাব্য লেখার আইডিয়া পেয়েছি দেখি পারি কিনা।
ঠিক আছে দেখো আমি তাহলে গেলাম।
চায়ের দোকানে আজ কদর এসেছে তো।একদিন কদরদের বাসায় যেতে হবে।ওর সৎ মাকে আচ্ছা করে বলে আসব যাতে করে মহিলা যেন আর কোন দিন কদরে উপরে অত্যাচার না করে।বাইরে বেরিয়ে আকাশের হাব ভাব দেখলাম।না আকাশে তেমন মেঘা নেই।বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম।এখন আষাঢের প্রায় শেষ দিক অথচ বৃষ্টির কোন দেখা নেই।বৃষ্টি না এলে আমারই ভাল।মনের সুখে রাস্তায় হেটে বেড়ানো যায়।মাথাটা বেশ ধরেছে।জ্বর হবে কিনা বুঝতে পারছি না।হঠাৎ গত রাতের তিন টেংরি বান্দরের এক বান্দরকে দেখলাম।আমাকে দেখেই অন্য রাস্তায় চলে গেল।এদের কাছে আসলে নরম ভাব দেখানো যাবে না তাহলে আরও পেয়ে বসবে।বিল্টু ভাইয়ের চায়ের দোকানে পৌছে গেছি।কদরের শরীর মনে হয় ভাল হয়ে গেছে সেও চলে এসেছে।আমি কদরকে কাছে ডেকে বললাম,গতকাল তোদের ওদিকে হাটতে গিয়েছিলাম এটা যেন ফাঁস করিস না।তুই বলবি আমি তোকে দেখতে গিয়েছিলাম।
ঠিক আছে ভাইজান।কদর ওর কাজে লেগে গেল।আমি এখন অপেক্ষা করছি কড়া লিকার দেওয়া এক কাপ দুধ চায়ের জন্য।খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিল্টু ভাই আমার কাছে তা পৌছে দেবেন।তবুও কেন যেন আমার এক সেকেন্ডও অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করছে না।ভিশন বিরক্ত লাগছে।অপেক্ষা করা কেন যে এত বিরক্তিকর বুঝি না।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০৩
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×