somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিমালয় পর্বত অঞ্চলে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকদের পূর্বাভাস ও বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের করনীয়

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভূমিকম্প বিষয়টি পাঠকদের সহজ ভাবে বোঝানোর জন্য এই লেখাটি নিম্নোক্ত ৫ টি বিষয়ে ভাগ করে আলোচনা করা হলো:
১) হিমালয় পর্বতমালা অঞ্চলে ভূমিকম্প কেন হয়?
২) গত ২৫ শে এপ্রিল নেপালে যে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প হলো তা সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকরা পূর্বে জানত কি না?
৩) বাংলাদেশ কতটুকু ভূমিকম্প ঝুঁকিতে আছে?
৪) ভূমিকম্প যেখানে হয় সেই স্থান থেকে অনেক দূরে কোন স্থানের বাড়ি-ঘড় এর ক্ষতি করে কেন?
৫) ঢাকা ও সিলেট শহরের বিল্ডিং গুলো প্রচণ্ড ভূমিকম্প ঝুঁকিতে আছে এটা কেন বলা হয়?

এই পোষ্টটি অনেক বড় হয়ে যাওয়ায় ৪ ও ৫ নম্বর প্রশ্ন দুইটির উত্তর ভূমিকম্প গবেষকরা কেন বলেন ঢাকা ও সিলেট শহরের অনেক বাড়ি-ঘর প্রচণ্ড ভূমিকম্প ঝুঁকিতে আছে? পোষ্টে আলোচনা করা হয়েছে।

===================================
ভূমিকম্প নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমে আপনাকে পৃথিবীর গঠন সম্বন্ধে জানতে হবে। এটা না জানলে আপনি উপরের প্রশ্ন গুলোর উত্তর বুঝতে পারবেন না। তাই আমি প্রথমে খুব সহজ ভাবে পৃথিবীর গঠন নিয়ে আলোচনা করবো।
===================================

ছোট বেলায় আমরা ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে পৃথিবীর গঠন সম্বন্ধে জেনেছি যে এটি বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত। পৃথিবীর ভূ-অভ্যন্তরকে প্রধানত ৩ টি ভাগে ভাগ করা যায়; ১) কোর ২) ম্যান্টেল ও ৩) ক্রাস্ট।


ছবি ১: পৃথিবীর গঠন

পৃথিবীর সবচেয়ে উপরিভাগের স্তরটিকে বলা হয় ক্রাস্ট। এটি ভঙ্গুর পদার্থ দ্বারা গঠিত। ক্রাস্টের ভঙ্গুর অংশগুলোকে প্লেট বলে।

Physical ও Chemical বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে ক্রাস্টকেও দুই ভাগে ভাগ করা যায়: ১) কন্টিনেন্টাল ক্রাষ্ট (স্থল ভাগ) যেখানে আমরা বসবাস করি (পূরত্ব বেশি ও ঘনত্ব কম) ও ২) ওসানিক ক্রাস্ট, পৃথিবীর উপরিভাগের যে অংশটি সমুদ্রের পানির নিচে থাকে (পূরত্ব কম ও ঘনত্ব বেশি)।


ছবি ২: কন্টিনেন্টাল ক্রাষ্ট ও ওসানিক ক্রাস্ট


ছবি ৩: পৃথিবীর গঠন (কিছুটা বিস্তারিত)

উপরের ৩ নম্বর ছবির বাম দিকের কলামে দেখতে পাচ্ছেন ক্রাষ্টের ঠিক নিচের অংশটিকে বলে ম্যান্টেল। এবারে একি ছবির ডান দিকে তাকান। মেন্টেলের নিচের দিকের অংশকে বলে মেসোসফেয়ার (mesosphere) যা শক্ত ও ভঙ্গুর পদার্থ দ্বারা গঠিত।

ম্যানন্টেলের মধ্যের অংশটিকে বলে আ্যাসথেনোসফেয়ার (Asthenosphere), যা প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ দিয়ে গঠিত। বাংলাদেশ টেলিভিশনে একসময় জাহাজ মার্কা আলকাতরা (বিটুমিন) এর বিজ্ঞাপন দেখাইত মনে পড়ে? যে আলকাতরা গলিয়ে পাথরের সাথে মিশিয়ে পিচ-ঢালা রাস্তা বানানো হয়। নিচের ছবি দেখুন মনে পরে কি না?




ছবি ৪:

ক্রাস্ট ও ম্যান্টেলের সংযোগস্থলে কয়েক কিলোমিটার পুরু পাথরের একটা স্তর থাকে যার নাম Mohorovičić discontinuity, সংক্ষেপে একে Moho বলা হয়ে থাকে। এই Moho হলো ক্রাস্ট ও মেন্টেলের মধ্যকার বাউন্ডারি ওয়াল বা প্রাচীর। ম্যান্টেলের সবচেয়ে উপরের কিছু অংশ (এই অংশও শক্ত ও ভঙ্গুর পদার্থ দ্বারা গঠিত) ও পুরো ক্রাস্ট নিয়ে গঠিত অংশকে বলে লিথোসফেয়ার।


ছবি ৫:

ভূগর্ভস্থ তাপে আ্যাসথেনোসফেয়ার এর আলকাতরা জাতীয় পদার্থ গুলো গলে গিয়ে নিয়মিত ভাবে চলমান থাকে। রাসায়নিক ভাষায় যাকে বলে তাপের পরিচালন।


ছবি ৬: ম্যান্টল কনভেকশন

নদিতে ভাসমান নৌকে তুলনা করা যেতে পারে কন্টিনেন্টাল ক্রাস্টের সাথে আর প্রবাহিত নদীর পানিকে আ্যাসথেনোসফেয়ার সাথে। নদীর পানিতে স্রোত থাকলে যেমন নৌকাকে ভাটির দিকে টেনে নিয়ে যায় ঠিক তেমনি আ্যাসথেনোসফেয়ারের পদার্থ গুলো চলমান থাকার কারণে তার উপরে অবস্থান করা পৃথিবীর স্তর ক্রাষ্টকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্হানন্তর করে।

কন্টিনেন্টাল ক্রাষ্ট অনেক গুলো ভাগে বিভক্ত। প্রত্যেকটা ভাগকে বলে প্লেট। পৃথিবীতে অনেক গুলো প্লেট আছে যে গুলো চলমান। কোন কোন প্লেট খুবই বড় যেমন ইউরেশিয়ান প্লেট। আবার কোন কোন প্লেট অনেক ছোট যেমন ইন্ডিয়ান প্লেট। কোন প্লেট কোন দিকে যাচ্ছে তা নিচের ছবিতে দেখুন তীর চিহ্ন দিয়ে নির্দেশ করা আছে।


ছবি ৭: পৃথিবীর বিভিন্ন প্লেট


ছবি ৮: পৃথিবীর ইঞ্জিন

=======================================
২য় পর্ব : হিমালয় পর্বত মালা অঞ্চলে ভূমিকম্প কেন হয়?
=======================================

উপরের ছবিতে আমরা দেখেছি ইন্ডিয়ান প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেট কোনটি কত বড়। ইন্ডিয়ান প্লেটটিকে একটি গরুর সাথে তুলান করলে ইউরেশিয়ান প্লেট টিকে তুলনা করতে হবে একটি পূর্ন বয়ষ্ক হাতির সাথে (উপরের ৩ নম্বর ছবিতে দেখুন)।

আজ থেকে কেয়েকশ মিলিয়ন বছর পূর্বে সব গুলো প্লেট কাছা-কাছি ছিল। আ্যাসথেনোসফেয়ারে কনভেকশন এর (পরিচালন পদ্ধতিতে তাপের প্রবাহের ফলে) ফলে কন্টিনেন্টাল ক্রাস্টগু বা প্লেটগুলো একটি অন্যটি থেকে আস্তে-আস্তে দূরে সরে গেছে (বৈজ্ঞানিক ভাষায় এই প্রক্রিয়াকে বলে প্লেট টেকটনিকস)। আজ থেকে ৫০ মিলিয়ন বছর পূর্বে ইন্ডিয়ান প্লেট ছিল ভারত মহাসাগরের মধ্যে অবস্হিত একটি দ্বীপ। গত ৫০ মিলিয়ন বছর ধরে এটি ক্রমাগত ভাবে ইউরেশিয়ান প্লেটের দিকে এগোচ্ছে। বর্তমানে ইন্ডিয়ান প্লেট প্রতিবছর ৪ থেকে ৫ সেন্টিমিটার করে ইউরেশিয়ান প্লেটের দিকে এগোচ্ছে। (নিচের ৫ নম্বর ছবি দেখুন)


ছবি ৯: ইনডিয়ান প্লেট এর পথচলা

আমি যদি আপনাকে প্রশ্ন করি যে অল্প গতিতে চলা চাউল ভর্তি ১০ টনি একটা ট্রাকটকে যদি বিপরীত দিক থেকে আসা একটা কার আঘাত করে তবে কি হবে? কারটি কি ট্রাকটিকে রাস্তা থেকে সরাতে পারবে? নিশ্চয় আপনার উত্তর হবে কারটি দুমড়ে-মুচড়ে যাবে। ট্রাকটি যদি একসিডেন্টএর পরেও চলতে থাকে তবে দুমড়ানো-মুচড়ানো কারটিকে ট্রাক সামনের দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকবে এই সময় কারের কিছু অংশ ট্রাকটির নিচে চলে যাবে।

হ্যাঁ ঠিক এই ঘটনাটি এখন ঘটতেছে হিমালয় পর্বত অঞ্চলে। নিচের ছবিটি দেখুন কিভাবে ইন্ডিয়ান প্লেট ইউরেশিয়ান প্লেটকে আঘাত করে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে।


ছবি ১০: ইনডিয়ান প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষ

বাস্তব জীবনে কার যে গতিতে রাস্তায় চাউল ভর্তি ১০ টনি একটা ট্রাকটকে আঘাত করে ভূতাত্ত্বিক প্লেট গুলো কিন্তু সেই গতিতে চলে না। আপনি শুনে অবাক হবেন যে ভূত্বাতিক প্লেট গুলো বছরে মাত্র ১ থেকে ৫ সেন্টিমিটার পথ অতিক্রম করে। নেপালের কাঠমুন্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর Department of Mines and Geology বিভাগের গবেষকরা ফ্রান্সের INSTITUT DE PHYSIQUE DU GLOBE DE PARIS এর আর্থিক সহযোগীতায় ১৯৮৫ সাল থেকে Global Positioning System (GPS) বসিয়ে ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান প্লেটের গতিবেগ পর্যবেক্ষন করতেছে। নিচের ছবিটি দেখুন ইন্ডিয়ান প্লেটের কোন অংশ কি গতিতে ইউরেশিয়ান প্লেটের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তার নির্দেশ করতেছে।


ছবি ১১ (ক): ইনডিয়ান প্লেট এর গতিবেগ

ছবি ১১ (খ): ইনডিয়ান প্লেট এর গতিবেগ (বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের শিলং অংশে ইনডিয়ান প্লেট এর গতিবেগ এর জুম ইন মানচিত্র)। ছবি কৃতজ্ঞতা: GPS Velocity Viewer


ছবি ১১ (গ): ইনডিয়ান প্লেট এর গতিবেগের ফলে কোন এলাকায় ভূমিকম্প রিস্ক কেমন তার মানচিত্র

ছবি কৃতজ্ঞতা:১) Global Earthquake Model (GEM) Global Seismic Hazard Map ) ২) GEM Interactive Viewer to explore the Global Seismic Hazard Map; ৩) Global Earthquake Hazard and Risk Model

আ্যাসথেনোসফেয়ারে কনভেকশন এর ফলে ইন্ডিয়ান প্লেট ক্রমাগত ভাবে ইউরেশিয়ান প্লেট এর দিকে এগোতে থাকে ও একসময় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পথ চলা থেমে যায় (এই অবস্হাকে ফল্ট লক বলে) ও দুই প্লেট বিপরীত দিক থেকে একটি অন্যটির উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে ফলে দুটি প্লেটের কন্টাক্ট পয়েন্টে চাপ বাড়তে থাকে (শক্তি সন্বচয়) সময়ের সাথে সাথে (বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় যাকে বলে স্ট্রেস বিউল্ড আপ)। আমরা পদার্থ বিজ্ঞানের বইয়ে পড়েছি কোন বস্তুর উপর চাপ প্রয়োগ করলে তার বিকৃতি ঘটে (ইয়ং এর স্হিতিস্হাপকতার সুত্র)।

আরও সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করি:

বন্যার পানি বাধে আটকা পড়লে বাঁধের দরজার সামনে যেমন পানির উচ্চটা বাড়তে থাকে ঠিক একই ভাবে দুইটি ভূতাত্ত্বিক প্লেটের আটকে পড়া (গিট্টু লাগা) স্হানের ভূমি প্রতিবছর উপরের দিকে বাড়তে থাকে (বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে Uplift বলে)। আমরা বইয়ের পৃষ্ঠায় পড়ি এভারেষ্ট পর্বতের উচ্চতা ৮৮৮৪ মিটার। বর্তমানে এভারেষ্ট পর্বতের উচ্চতা প্রতিবছর ১০ মিলিমিটার (১ সেন্টিমিটার) করে বাড়তেছে। এই হারে বাড়তে থাকলে আগামী ১০০ বছর পরে অর্থাৎ ২১১৫ সালে এভারেষ্ট পর্বত শৃঙ্গের উচ্চতা হবে ৮৮৮৫ মিটার।


ছবি: ১২

ইন্ডিয়ান প্লেটটি পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও গত কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে ইউরেশিয়ান প্লেটের আটকে পড়া স্হান গুলোর ঠিক উপরে হিমালয় পর্বতমালার বিভিন্ন শৃঙ্গ যেমন এভারেষ্ট, অন্নপূর্না, ধওলাগিরি ইত্যাদি এর উৎপত্তি।

এবারে উপরের ছবিটির সাথে নিচের সুমো কুস্তির ছবি দুইটির সাথে মিলান। ছবির মোটা মানুষটি হলো ইউরেশিয়ান প্লেট আর বাচ্চাটা হলো ইন্ডিয়ান প্লেট।




ছবি: ১৩

দুটি প্লেটের সংযোগস্হলকে ফল্ট প্লেন বলে। ইন্ডিয়ান প্লেটটি উত্তর দিকে প্রায় ৪৫ ডিগ্রি এঙ্গেল করে ভূগর্ভের দিকে ঝুকে আছে। ইউরেশিয়ান প্লেটটি ইন্ডিয়ান প্লেটের উপর ঝুলে আছে। এই জন্য ভূত্বাতিক বিজ্ঞানের সংজ্ঞা অনুসারে ইউরেশিয়ান প্লেটটিকে হেংগিং ওয়াল বলে, যেহেতু এটি ঝুলে আছে ইন্ডিয়ান প্লেটের উপরে। অন্যদিকে, ইন্ডিয়ান প্লেটটি যেহেতু নিজের ঘাড়ের উপর ইউরেশিয়ান প্লেটকে ধরে রেখেছে ঠিক মানুষের পা যেমন শরীরকে ধরে রাখে, তাই ইন্ডিয়ান প্লেটটিকে বলে ফুট ওয়াল।


ছবি: ইন্ডিয়ান প্লেট ও ইউরেশিয়ার প্লেটের সংযোগস্হলের পাথর যেভাবে লেগে থাকতে পারে (ভূমিকম্প হলে ইউরেশিয়ান প্লেটের A ও B স্তরের পাথর উপরে উঠে যাবে ও C স্তরের পাথর ইন্ডিয়ান প্লেটের A স্তরের পাথরের মুখো-মুখি চলে আসবে)

ভূত্বাতিক ভাবে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে ইউরেশিয়ান প্লেটটার চাপ ধরে রাখা সম্ভব হয় না ইন্ডিয়ান প্লেটের। বন্যার পানির চাপ প্রচন্ড বেশি হলে যেমন বাধ ভেঙ্গে যায় ঠিক একই ভাবে দুইটি প্লেটের সংযুক্ত স্হলে (ফল্ট প্লেন) ইন্ডিয়ান প্লেটটি চাপ সয্য করতে পারে না তখন ফল্ট প্লেনের কোন স্হানের পাথর ভেঙ্গে যায় ও ইউরেশিয়ান প্লেটটি স্লিপ করে ইন্ডিয়ান প্লেটের উপরে উঠে চলে আসে [upper (hanging) block slides over lower (foot) block]। ঠিক এই সময়ই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়ে থাকে। খবরে প্রকাশ এবারের ভূমিকম্পে কাঠমুন্ড শহরটি দক্ষিনের দিকে ১০ ফুট সরে এসেছে (বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় এটাকে স্লিপ বলে)।


ছবি: ১৪

গত ২০০ বছরে মেগা (৮ কিংবা তার চেয়ে বেশি মাত্রার) ভূমিকম্পগুলোর ফলে কোন স্হানে ইউরেশিয়ান প্লেটটি ইন্ডিয়ান প্লেরটের উপর কত ফুট উঠে গেছে তার নিচের ছবিতে দেখুন। তীর চিহ্নের দৈর্ঘ্য স্লিপ ও তীরের মাথা দিক নির্দেশ করতেছে।


ছবি: ১৫

আরও বেশ কয়েক প্রকার ফল্ট আছে কিন্তু পোষ্ট টিকে ছোট রাখতে গিয়ে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় নি। যারা ভূমিকম্প নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে ইচ্ছুক তাদেরকে আমন্ত্রণ জানাবো ব্লগার রিকি এর নিম্নোক্ত ভূমিকম্পের ইতিকথা, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভূমিকম্প এবং ভূমিকম্পে আমাদের করণীয় পোষ্ট টি পড়ার জন্য।

=======================================
৩য় পর্ব : গত ২৬ শে এপ্রিল নেপালে যে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প হলো তা সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকরা পূর্বে জানত কি না?
=======================================

আপনি প্রশ্ন করতে পারেন যে ভূমিকম্পের পূর্বাভাষ করা যায় কি না?

উত্তরটা হবে যায় তবে একটা কিন্তু আছে। সেই কিন্তুটা হলো ভূমিকম্পের পূর্বাভাষ ঠিক দৈনন্দিন আবহাওয়ার পূর্বাভাষের মতো না। কোন এলাকায় ভূমিকম্পের সম্ভাব্যতা খুবই বেশি তা বৈজ্ঞানিকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত করেই বলতে পারে। তবে ভূমিকম্প সংগঠিত হওয়ার সময়টা নির্দিষ্ট করে বলার মতো সক্ষমতা এখনও অর্জন করতে পারে নি বৈজ্ঞানিকরা। কোন স্থানে ভূমিকম্প একটা নির্দিষ্ট সময় পর-পর হয়ে থাকে যাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলে রিটার্ন ইন্টারভাল। পেলিওসাইসমিক তথ্য বিশ্লেষণ করে কোন স্থানে ভূমিকম্পের রিটার্ন ইন্টারভাল সম্বন্ধে কাছা-কাছি একটা সময় নির্ধারণ করতে পারে বৈজ্ঞানিকরা।

গত ১৬ শে এপ্রিল নেপালে যে স্থানে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প হলো তা সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকরা পূর্বে জানত কি না?

উত্তরটা হবে হ্যাঁ জানত ও এই তথ্য সবাইকে জানিয়ে আসিতেছিল গত ২০ বছর ধরে। নিম্নে বিশ্বের ৫ টা নামকরা গবেষণা প্রবন্ধ থেকে প্রমান দিচ্ছি:

১ম গবেষণা প্রবন্ধে (SCIENCE, VOL 293, 24 AUGUST 2001) বৈজ্ঞানিকরা কি বলেছেন:

"Several lines of evidence show that one or more great earthquakes may be overdue in a large fraction of the Himalaya, threatening millions of people in that region. [source 1: R. Bilham and P. Molnar]. The amplitudes of long period seismic waves causes the major damages of the structure.

A wealth of geophysical evidence demonstrates that south of the Himalaya, the top surface of India’s basement rock flexes and slides beneath the Himalaya—not steadily but in lurches during great earthquakes.

Second, Global Positioning System (GPS) measurements show that India and southern Tibet converge at 20 ± 3 mm/year (4). Two meters of potential slip in earthquakes thus accumulate each century. Earthquakes must therefore release most, if not all, of India’s 2 m per century convergence with southern Tibet.

Despite the diverse quality of data in the past two centuries, we can be sure that we are not missing any great event since 1800. This permits us to estimate the minimum slip potential that has accumulated along the Himalaya since the last great earthquake (see the figure).

We divide the central Himalaya into 10 regions, with lengths roughly corresponding to those of great Himalayan ruptures (~220 km). With a convergence rate of 20 mm/year along the arc, six of these regions currently have a slip potential of at least 4 m—equivalent to the slip inferred for the 1934 earthquake. This implies that each of these regions now stores the strain necessary for such an earthquake. Moreover, the historic record (20 22) has no great earthquake throughout most of the Himalaya since 1700, suggesting that the slip potential may exceed 6 m in some places.

we cannot rule out the possibility that parts of the Himalaya have not ruptured in major earthquakes for 500 to 700 years and will be associated with slip exceeding 10 m."

তাদের চূড়ান্ত মন্তব্য ছিল "The capital cities of Bangladesh, Bhutan, India, Nepal, and Pakistan and several other cities with more than a million inhabitants are vulnerable to damage from some of these future earthquakes."

এবার নিচের ছবিটি দেখুন যেখানে উপরে উল্লেখিত সম্ভব্য ভূমিকম্প প্রবণ ১০ টি অবস্থান ও কোন স্থানে ভূমিকম্প হলে সেই স্থানে একটি প্লেট অন্যটির উপরে কত টুকু স্লিপ করতে পারে তার নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছে জিপিএস ও অন্যান্য বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে।



২য় গবেষণা প্রবন্ধে (JOURNAL OF GEOPHYSICAL RESEARCH, VOL. 109, 2004) বৈজ্ঞানিকরা কি বলেছেন:

A major earthquake along the seismic gap extending from Kathmandu area to Dehra Dun is highly plausible (সূত্র ২ : Bolinger et al. 2004 Stress Buildup in the Himalaya)



৩য় গবেষণা প্রবন্ধে (Geophysical Research Letters, ১৯৯৫) বৈজ্ঞানিকরা কি বলেছেন:

"The central Himalaya of Nepal, between N79E and 85 E of longitude, was not activated during this period and thus stands as a potential location for the next large Himalayan earthquake.

Intense microseismicity and frequent medium-size earthquake tend to cluster beneth the topographic front of the Higher Himalaya. This 10-20 km deep seismicity also correlates with a zone of localized uplift that has been evidenced from geodetic data. Both microsesimic and geodetic data indicate strain accumulation on a mid-crustal ramp that had been previously inferred from geological and geophysical evidence. This ramp connects a flat decollement under the Lesser and Sub-Himalaya with a deeper decollement under the Higher Himalaya and probably acts as a geometric asperity where strain and stress build up during the interseismic period. The large Himalayan earthquake could nucleate there and probably activate the whole flat-and-ramp system up to the blind thrust of the Sub-Himalaya." [সূত্র ৩: Panday et al. 1995]

চতুর্থ গবেষণা প্রবন্ধে (GEOLOGY, December 2012; v. 40 ) বৈজ্ঞানিকরা কি বলেছেন:

"Techtonic uplift is negligible beneth the Lesser Himalaya and increases northward beneth the higher Himalaya."

এবারে নিচের ছবিটি দেখুন। ছবির বাম দিকের বক্সের ভিতর ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে কোন স্থানের ভূমির উচ্চতা কতটুকু বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছবির সাথে সংযুক্ত লেখা গুলো পড়ুন: সাদা বৃত্ত নির্দেশ করতেছে ভূমিকম্প; আর ত্রিভুজ গুলো নির্দেশ করতেছে ৭ হাজার ২০০ মিটার এর বেশি উঁচু বিভিন্ন পর্বত শৃঙ্গ। একই ছবিতে দেখুন ৩ টি ফল্ট লাইনের অবস্থান ৩ টি শব্দ সংক্ষেপ MFT, MCT, MBT দিয়ে নির্দেশ করতেছে। একটি বিষয় লক্ষ করুনতো: ঐ ৩ টি ফল্ট লাইন যে স্থানে দক্ষিণ দিকে যত বেঁকে গেছে তার সামনে তত বেশি উঁচু বিভিন্ন পর্বত শৃঙ্গের উৎপত্তি হয়েছে কি না?


ছবি: ১৬

উপরের ছবির ডান দিকের বক্সে যে বৃত্ত গুলি দেখা যাচ্ছে সেগুলো হলো উপরে উল্লেখিত ২১ টি GPS স্টেশন এর অবস্থান যা হিমালয় পর্বতের উপর নির্দিষ্ট দূরত্বে বসানো হয়েছে প্লেটের মুভমেন্ট মাপার জন্য।


ছবি: ১৭

আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি যে ভূগর্ভের কোন স্থানের ২ টি প্লেট লক হয়ে গেলে সে স্থানের ঠিক উপরে ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। যে স্থানের ভূমি যত দ্রুত উঁচু হতে থাকবে সেই স্থানে তত বেশি ছোট-ছোট ভূমিকম্প হতে থাকবে ও যে কোন সময় বড় ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা ঠিক তত বেশি হবে। এবারে নিচের ছবিটি দেখুন যে স্থানে ২৬ শে এপ্রিল ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে ও এর পরে গত কয়েক দিনে আরও অনেক গুলো বিভিন্ন মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।


ছবি: ১৮

উপরের ১, ২ ও ৩ নম্বর ছবির গুলোর উপর ৪ নম্বর ছবি হতে ২৬ শে এপ্রিল ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি বসানোর চেষ্টা করুন। কি দেখা গেল? বৈজ্ঞানিকরা যে স্থানে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলেছিল ঠিক সেই স্থানেই ভূমিকম্পটি হয়েছে।


ছবি: ১৯

এবারে আপনি প্রশ্ন করতে পারেন উপরে নেপালের ভূমিকম্প ঝুঁকির কথা বলেছে বাংলাদেশ নিয়ে তো কিছু বলে নাই? তাই আমি বলতে চাই ভাই উপরের অংশতো পড়লেন এবার নিচের অংশটা পড়েন:

৫ম গবেষণা প্রবন্ধে (NATURE, VOL 410, 12 APRIL 2001) বৈজ্ঞানিকরা কি বলেছেন:

এবারে নিচের ছবিটির দেখুন:


ছবি : ২০

উপরের ছবিতে দুটা বড় শূন্য স্থান (একটা ১৮০৩ ও ১৮৩৩ সালের মধ্যবর্তী ও অন্যটা ১৯৩৪ ও ১৯৫০ সালের মধ্যবর্তী) দেখা যাচ্ছে যেখানে ১৮০০ সাল থেকে কোন বড় মাপের ভূমিকম্প হয় নাই। আপনাদের অনেকেই হয়ত ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন ১৮০৩ ও ১৮৩৩ সালের মধ্যবর্তী শুন্য স্হানটি পূরণ হয়ে গেছে। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন ২৬ শে এপ্রিল ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি ঐ স্থানেই হয়েছে। তাহলে অবশিষ্ট থাকলো কোন স্থান? হ্যাঁ ঠিকই চিন্তা করেছেন !!! ১৯৩৪ ও ১৯৫০ সালের মধ্যবর্তী স্থান; যে স্থানটি ঠিক বাংলাদেশের মাথার উপরে অবস্থান করতেছে ইতিহাস বলে ১৭০০ সালের পরে থেকে ঐ স্থানে বড় মাপের কোন ভূমিকম্প হয় নাই।

১৯৩৪ ও ১৯৫০ সালের মধ্যবর্তী স্থানের ঠিক নিচেই আর একটা ফল্ট আছে যা ডাউকি ফল্ট নামে পরিচিত।


ছবি: ২১

উপরের ছবিতে যে কাউ-বয় হ্যাট দেখিতেছেন ঐ স্থানে ১৮৯৭ সালে ১২ ই জুন ৮ দশমিক ১ মাত্রার একটি প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প হয় ঐ ডাউকি ফল্টে যার ফলে শিলং প্লাটিউ স্লিপ করে ১০ মিটার উপরে উঠে যায়।

ডাউকি ফল্ট নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত গবেষনা জার্নাল "Nature 410, 806-809 (12 April 2001)" প্রকাশিত প্রবন্ধে বৈজ্ঞানিকরা মন্তব্য করেছেন

"The >300-km length of the Dauki fault has not slipped recently, but were it to slip in a single earthquake its potential maximum magnitude (M greater than or equal to 8) would constitute a significant seismic threat to nearby densely populated regions of Bangladesh, and to the very large city of Dhaka less than 150 km to the south"

ঐ ছবির কাউ-বয় হ্যাট ও ঐ কালারের যে অংশটা দেখিতেছেন ঐ এলাকার কোন মন্দির, মসজিদ, ও প্যাগোড়ার কোন গম্বুজ অবশিষ্ট ছিল না। এর পরে যে কালারের এলাকা দেখিতেছেন সেই এলাকার বড়ি-ঘর চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল (মার্সে-লি স্কেলে ৯ মাত্রার ইন্টেনসিটি বা তীব্রতা অনুভূত হয়েছিল)। চলুন জেনে নেই মার্সে-লি স্কেলে ৯ মাত্রার তীব্রতা কেমন ক্ষতি করে:

"Damage considerable in specially designed structures; well-designed frame structures thrown out of plumb. Damage great in substantial buildings, with partial collapse. Buildings shifted off foundations."

বিজ্ঞানী রজার বিলহাম ২০১৮ সালের আর একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন যে প্রবন্ধে হিমালয় পর্বত অঞ্চলের ৫০০ বছরের ভূমিকম্পের ইতিহাস বিশ্লেষণ করে ১৫ টি অঞ্চলে ভাগ করেছেন। সেই ১৫ টি অঞ্চলের মধ্যে ১০ টি অঞ্চল সনাক্ত করেছেন যে স্থান গুলোতে ৮ এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টির জন্য পর্যপ্ত পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

[সুত্র: Himalayan earthquakes: a review of historical seismicity and early 21st century slip potential,Geological Society, London, Special Publications, 483, 423-482, 5 February 2019]


আমরা কথা কথায় বলি "দিল্লী অনেক দূর"। উপরের ছবিতে ৩ নম্বর যে কালার দেখিতেছেন যা দিল্লী পর্যন্ত বিস্তৃত; উপরের ভূমিকম্পের ফলে সেই পর্যন্ত ঘর-বাড়ি লইরা-চইরা উঠেছিল।

গত ২০০ বছরের ভূমিকম্পের ভৌগলিক চিত্র সাক্ষ্য দেয় এই অঞ্চলে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প গুলো শূন্য স্থান পূরণ এর সূত্র মেনে চলতেছে অর মাত্র একটা শুন্য স্হান অবশিষ্ট আছে।

অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষের মাথার উপর দ্বিগুণ ভূমিকম্প ঝুঁকি ঝুলিতেছে ঠিক নিচের ছবির মানুষটির মাথার উপর যেমন গিলোটিনের ব্লেড ঝুলিতেছে।



পোষ্ট টি ইতিমধ্যে অনেক বড় হইয়া গিয়াছে তা পাঠকদের কথা চিন্তা করিয়া শুরুতে উল্লেখিত ৪ ও ৫ নম্বর বিষয় দুইটি ২য় একটি পোষ্টে আলোচনা করা হলো। অনুগ্রহপূর্বক নিচের লিংকে খোঁচা মেরে পরের পষ্টে চলে যান।

ভূমিকম্প গবেষকরা কেন বলেন ঢাকা ও সিলেট শহরের অনেক বাড়ি-ঘর প্রচণ্ড ভূমিকম্প ঝুঁকিতে আছে?

===================================
উপরের লেখার নিম্নলিখিত তথ্য সূত্র ব্যবহার করা হয়েছে:
===================================
প্রথম ৬ টি গবেষনা প্রবন্ধ থেকে সরাসরি উদ্ধৃত করা হয়েছে। অবশিষ্ট গুলো হতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বিশ্লেষণের জন্য।

১) Himalayan Seismic Hazard by Roger Bilham,Vinod K. Gaur, Peter Molnar, SCIENCE, VOL 293, 24 AUGUST 2001

২) Stress buildup in the Himalaya by L. Bollinger, JOURNAL OF GEOPHYSICAL RESEARCH, VOL. 109, 2004

৩) Interseismic Strain Accumulation on the Himalayan Crustal Ramp (Nepal), M. R. Pandey and R.P. Tandukar, GRL, 1995)

৪) Long-term growth of the Himalaya inferred from interseismic InSAR measurement by Raphaël Grandin et al. 2012 GEOLOGY, December 2012; v. 40

৫) Plateau `pop-up' in the great 1897 Assam earthquake
Roger Bilham & Philip England, NATURE, VOL 410, 12 APRIL 2001

৬) Future Earthquakes on the Indian Subcontinent: Inevitable Hazard, Preventable Risk (Roger Bilham and Susan Hough, 2006)

৭) Characterizing the Main Himalayan Thrust in the Garhwal Himalaya, India with receiver function CCP stacking Warren B.Caldwell et al., Stanford University , Earth and Planetary Science Letters 367 (2013) 15–27

৮) Rupture zones of great earthquakes in the Himalayan region, Proc. Indian Acad. Sci. (Earth Planet. Sci.), Vol. 98, No. 1, April 1989, pp. 61-70.

৯) MOUNTAIN BUILDING, EROSION,AND THE SEISMIC CYCLE IN THE NEPAL HIMALAYA by JEAN-PHILIPPE AVOUAC, Californian Institute of Technology, ADVANCES IN GEOPHYSICS, VOL. 46

১০) Le cycle sismique en Himalaya by Jean-Philippe Avouac C. R. Acad. Sci. Paris, Sciences de la Terre et des planètes / Earth and Planetary Sciences 333 (2001) 513–529

১১) One-Dimensional Reference Velocity Model and Precise Locations of Earthquake Hypocenters in the Kumaon–Garhwal Himalaya by P. Mahesh, Bulletin of the Seismological Society of America, Vol. 103, February 2013

১২) INSTITUT DE PHYSIQUE DU GLOBE DE PARIS

http://www.ipgp.fr/en/node

১৩) Nepal’s Earthquake: Mapping its ripple effect across Asia

http://www.washingtonpost.com/graphics/world/nepal-earthquake/

১৪) Himalayan earthquakes: a review of historical seismicity and early 21st century slip potential, Geological Society, London, Special Publications, 483, 423-482, 5 February 2019

জনপ্রীয় ব্লগার @সায়েম মুন ভাই এর ভূমিকম্প ও সুনামি নিয়ে মার-মার কাট-কাট পোষ্ট আছে সেটির লিন্ক যোগ করে দিলাম। আশাকরি আপনাদের ভাল লাগবে

ভূমিকম্প--সুনামী--বাংলাদেশ--সম্ভাব্য পরিণতি!

The National Geographic article:

How Humans Are Causing Deadly Earthquakes

******************************************************************************************************

আমি বর্তমানে আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে পিইচডি গবেষনা করলেও ভূমিকম্প বিষয়ে আমার একাডেমিক পড়া-লেখা নেহায়েত কম না। The Abdus Salam ICTP: International Centre for Theoretical Physics এ ভূমিকম্প বিষয়ে যে গ্রাজুয়েট লেভেলের কোর্স গুলো পড়েছিলাম ও যে অধ্যাপকরা কোর্সগুলো পড়িয়েছিল তা নিম্নরুপ:

1) Seismology taught by Prof. Fabio Romanelli of the University of Trieste, Italy
2) Mechanics of Earthquake and Tectonophysics Prof. Abdelkrim Aoudia of The Abdus Salam ICTP: International Centre for Theoretical Physics, Trieste, Italy
3) Introduction to the Physics of the Earth System (Geophysics part) Prof. Giuliano F. Panza of University of Trieste, Italy
4) Nonlinear Dynamics Prof. Vladimir Soloviev, International Institute of Earthquake Prediction Theory and Mathematical Geophysics, Russian Academy of Sciences
5) Earthquake Prediction by Prof. Alexander A. Soloviev, International Institute of Earthquake Prediction Theory and Mathematical Geophysics, Russian Academy of Sciences
6) Earthquake Modeling Prof. Franco Vaccari of University of Trieste, Italy
7) Wavephysics Prof. Fabio Romanelli of University of Trieste, Italy


=====================
পরিশিষ্ট:
=====================
এই লেখায় কেউ তথ্যগত কোন ভুল পেয়ে থাকলে তা জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো। আর একটা অনুরোধ, লেখাটা অনেক পরিশ্রম করে লিখতে হয়েছে। তাই লেখাটি কিংবা লেখার কোন অংশ নিজের নামে চালিয়ে দিয়েন না। তবে নাম উল্লেখ পূর্বক প্রকাশে কোন বাধা নাই।
=====================
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫১
৬৩টি মন্তব্য ৬৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×