‘পূর্ব (বাংলাদেশ) সীমান্তে পরিস্থিতিটাই ব্যতিক্রমী। একই বিএসএফ সদস্য পাকিস্তান সীমান্তে অনেক দিন কাজ করেও গুলি চালান না। কিন্তু যখন তিনি বাংলাদেশ সীমান্তে আসেন, তখন তাকে গুলি চালাতে হয় বা বলপ্রয়োগ করতে হয়। পরিস্থিতির জন্যই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে।’
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের মৃত্যু নিয়ে নতুন করে শুরু হওয়া বিতর্কের প্রোপটে দিল্লিতে বিএসএফের প্রধান কার্যালয়ে বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন বাহিনীর মহাপরিচালক ইউ কে বানসাল। বিবিসি বাংলার অনলাইন সংস্করণে গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ৬ মিনিটে এটি প্রকাশ করা হয়।
বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ কেন গুলি চালাচ্ছে এবং মানুষ মারা যাচ্ছে -এ প্রশ্নে ইউ কে বানসাল বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তের পরিস্থিতি বিচিত্র এবং ব্যতিক্রমী। তাহলে কি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি কখনই বন্ধ হবে না? এ প্রসঙ্গে বিএসএফ প্রধান বলেন, যতদিন সীমান্তে অপরাধমূলক কাজ চলতে থাকবে, ততদিন গুলি চালানো বা বলপ্রয়োগ পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়।
‘বিএসএফের দায়িত্ব অপরাধীদের আটকানো, তাই অপরাধ যতণ চলবে, বিএসএফকে ব্যবস্থা নিতেই হবে। ভারত সরকারের সার্বভৌম দায়িত্ব তার সীমানা রা করা, সেই দায়িত্বটাই বিএসএফ পালন করছে।’ প্রসঙ্গে ইউ কে বানসাল আরো বলেন, সীমান্তে অপরাধ বন্ধে বাংলাদেশের সহযোগিতা খুবই জরুরি।
‘বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডসের কাছে বারবার সাহায্য চাওয়া হচ্ছে যাতে তারা কড়া পাহারার ব্যবস্থা করে। তাহলেই দুষ্কৃতিরা সীমান্ত পেরুতে পারবে না। আর যদি কেউ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের দিকে না আসে, তাহলেই বিএসএফকে আর গুলি চালাতে হবে না।’
সীমান্তে কেউ গেলেই কেন ধরে নেয়া হবে যে তিনি অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত? বিবিসি বাংলার এই প্রশ্নে বানসাল বলেন, ‘রাতে সীমান্তে ১৪৪ ধারা অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকে এবং কোনো নিরপরাধ ব্যক্তির সেই সময়ে সীমান্ত পেরুনোর কথা নয়। ওই সময়ে যদি কাউকে সীমান্ত পেরুতে দেখা যায়, তাহলে ধরেই নেয়া হবে যে তিনি অপরাধমূলক কাজ অথবা দেশদ্রোহী কোনো কাজ করতে গেছেন। তখনই বিএসএফের দায়িত্ব এসে যায়। বাহিনীর সদস্যরা সেই দায়িত্বটাই পালন করছেন।’
বিএসএফের সদস্যরা এক বাংলাদেশী সন্দেহভাজন গরুপাচারকারীর ওপরে অত্যাচার চালাচ্ছেন -এরকম একটি ভিডিও সম্প্রতি ফাঁস হওয়ার পর তা নিয়ে ভারতীয় সীমান্তরী বাহিনীকে দেশে বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিএসএফ প্রধান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং তার বাহিনী কখনোই এ ধরনের আচরণ বরদাস্ত করবে না। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং ঘটনাটিকে কখনোই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে না।’
বানসাল বলেন, বিএসএফের সদস্যরা ভারতীয় আইন অনুযায়ী চলবে। সেই নিয়ম অনুযায়ী ঘটনার সাথে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে স্টাফ কোর্ট অব এনকোয়ারি চলছে। তারপরে চার্জ গঠন হবে এবং বিচার চলবে।’
‘এতে দোষীদের বাহিনী থেকে অপসারণ থেকে শুরু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। তাই কোনো মানবাধিকার সংগঠনের এ রকম ভাবা উচিত নয় যে ওই ভিডিওর ঘটনায় যুক্তদের কোনো রকম ছাড় দেয়া হবে।’
সূত্র : বিবিসি বাংলা

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




