করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের শুরুতেই দেশের আত্মীয় স্বজনরা আমাকে চলে আসার জন্য বলেছিল।আমি চিন্তা করে দেখেছিলাম আমাদের দেশের চেয়ে এখানে আরো বেশী ভাল মেডিকেল সুযোগ সুবিদায় থাকতে পারবো। যদিও যারা দেশে আছে তাদের জন্য খারাপ লাগছিল। বিশেষ করে একটা কথাই মনে এসেছে যদি মরতে হয় তবে সবাই একত্রেই মরে যাওয়া শ্রেয়। এই পরিস্থিতিতে আমার অবস্থা খুবই বেদনাদায়ক, মেয়ে থাকে কানাডা, ছেলেরা বাংলাদেশে আর আমি সৌদি আরবে!!!!
একসময় করোনার ভয়াভহ আগ্রাসী রুপ দেখে মেয়েকে বলেছিলাম চলো আমরা সবাই দেশেই ফিরে যাই। মরতে হয় প্রিয় মাতৃভুমিতে গিয়েই মরবো। কিন্তু ইতালী প্রবাসীদের হজ্জ্ব ক্যাম্পের ঘটনা টেনে মেয়ে কিছুতেই রাজি হলোনা দেশে ফিরে আসতে। আমিও আর ফিরলামনা।
অতঃপর কি ঘটছে আমার প্রিয় বাংলাদেশে?
১।প্রবাসীদের নিজের এপার্টমেন্টে যেতে বাধা, গ্রামে যেতে বাধা,ব্যাংকে যেতে বাধা, এমনকি দোকানে যেতেও বাধা দেয়া হচ্ছে !
২।করোনা রোগী সন্দেহে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে বাধা, আবার সেই রোগী তার নিজ বাসায় ফিরে আসতেও বাধা দেয়া হচ্ছে !!
৩।করোনা রোগীর মৃতদেহ কবরস্থানে দাফনে বাধা দেয়া হচ্ছে !!!.
৪।এমনকি করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতাল নির্মানেও বাধা দেয়া হয়েছে!!!!
কোয়ায় হারিয়ে গেল আমাদের মানবতা? আমরা প্রবাসীরা আজ নিজ দেশে অগ্রহণীয় অপাংক্তেয়।কোন এক গ্রামে দেখলাম প্রবাস ফেরতের বাড়ী ভেঙে দেয়া হচ্ছে। কি বিভস্য কাজ, বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে এটা একটা সত্যি ঘটনা।
আবার নিজ আত্মীয় অসুস্থ হলেও ছোঁয়াচে অজুহাতে অগ্রনীয়। তার নিকটতম আত্মীয়রা খোঁজ নিতেও আসেনা।
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেই বা কি বলবো! মরণপর রোগী হলেও সরকারী হাসপাতালে ভর্তি নিচ্ছে না এমনকি রোগী সনাক্তও করছেননা।অথচ ভিয়াইপি বা সরকারদলীয় এমপি মন্ত্রীরা অসুস্থ না হয়েও রোগ সনাক্তকরন পরীক্ষা করছে দেদারছে।
ডাক্তাররা পিপিই না পেলেও ব্যাংক ম্যানেজার ও সরকারী অফিসাররা পিপিপিই পরে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে।
এমতবস্থায় আমরা কোথায় ছুটে চলছি একমাত্র আল্লাহ্ জানেন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:১৭