আমি মোজাম্মেল হক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের ২য় বর্ষের একজন ছাত্র। ষষ্ঠ শ্রেনীথেকেই ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে ঘাটাঘাটি করি, সখ ছিল ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার হবো। উচ্চমাধ্যমিক শ্রেনীতে পড়াকালীন সময় থেকেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান লাভ করি। অবশেষে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই সেই ইলেক্ট্রনিক্সে পড়ার, কিন্ত পরিবারের চাপের সম্পুখে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভার্তি হই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে। কিন্তু কিছুদিন পরেই চলে আসতে হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগে। ক্লাস গুলো ভালোই লাগে , ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই সি প্রোগ্রামিং এর অর্ধেক এবং এইচ.টি.এম.এল, সি এস.এস. শেষ করে ফেলি । ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুদিনের ভিতরেই সি ল্যাংগুয়েজ প্রায় শেষ করে ফেলি। ডাইনামিক ওয়েব সাইট তৈরীর জন্য শিখি জুমলা ও ওয়ার্ড প্রেস, প্রায় দশটা মত ওয়েব সাইট মাত্র দুই মাসের মধ্যেই তৈরী করে ফেলি (প্রফেশনাল সাইট) । এবার শিখলাম পি.এইচ.পি, চেষ্টা কররাম আউটসোর্সিং বা ফ্রিলান্সারের কাজ শুরু করার জন্য।কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও ওডেস্ক থেকে কোন কাজ পাইলাম না।এই বছর ফেব্রুয়ারী মাসের থেকে আবার উঠে পড়ে লাগলাম ওডেস্কের পেছনে। আবার ও ব্যার্থ, হতাম হয়ে পড়লাম, আবার দেশীয় কাজের পিছনে লাগলাম, গত ১৪ ই মে বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগেরআয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় আইটি এর জব ফিল্ড এর উপর একটি সেমিনার, সেখানে একজন সফল ফ্রিলান্সারের বক্তব্য শুনে আবারও লেগে পড়ি ওডেস্কের পিছনে, অবশেষে এই বছর মে মাসের শেষে (অর্থ্যাৎ প্রায় এক বছর পর) ওডেস্কে কাজ পাই। কাজ হলো পি.এইচ.টি প্রোগ্রামার। ইংল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ শুরু করি এই পি.এইচ.পি প্রোগ্রামারের পদে। ছয়মাসের জন্য প্রতিষ্ঠানটি আমাকে হায়ার করে সপ্তাহে ৩০ থেকে ৪০ ঘন্টা লিমিটে। প্রতি ঘন্টায় ৭ ডলার রেটে কাজ শুরু করে প্রথম দুই সপ্তাহে পায় ৫৬০ডলার। টাকা উত্তোলনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহন করলাম পেওনার মাস্টার কার্ড। কিন্তু টাকা তুলতে হলো অনেক সমস্যা। নিকটস্থ কুষ্টিয়া শহরের ৫ টি বুথে ট্রাই করলাম, কিন্তু আমার মাস্টার কার্ডটি কোথাও সাপোর্ট করলো না। অবশেষে কুষ্টিয়া থেকে চলে আসার সময় বাস স্ট্যান্ডের পাশের বুথে মাস্টার কার্ড দিতেই আমার নাম দেখাল এবং পাসওয়ার্ড চাইলো, আমার মুখ খুশিতে ভরে গেল, পাসওয়ার্ড দিয়ে ব্যালেন্স দেখলাম, টাকা গুলো তুলে আনলাম। এবার আমার অনেক দিনের সখটি (একটি ল্যাপটপ কেনা) পুরণের পালা, হাতে চল্লিশ হাজার টাকা, বুঝতেই পারছেন একটুও দেরি না করে একটি কোর আই থ্রি এইচ.পি ল্যাপটপ কিনে বাড়ি তে ফিরিলাম হাসি মুখে। দুই বছর যাবৎ ল্যাপটপ কেনার সখ টি পূরণ হলো ফ্রিলান্সিং এর কাজের মাধ্যমে। চল্লিশটি হাজার টাকা এমনিতে তো আর যোগাড় করা আমার পক্ষে সম্ভবও ছিলনা। এখন এই নতুন ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছি, ফ্রিলান্সিং কাজটি থেকে এক সপ্তাহের ছুটি নিয়েছি। খুব আনন্দের সাথে একণন ল্যাপটপ ব্যবহার করছি, এখন আর আমি লোড শেডিংকে ভয় পাইনা। আর আমার কাজটি যদি এই ভাব আরও ছয় মাস চলে তাহলেতো আমার অবস্থ্য বুঝতেই পারছেন, একে বারে লাখপতি।
আমি কোন গল্প লেখক নই, তাই হয়তো ভালভাবে লিখতে পারিনি, তবে আশা করি এই গল্প পড়ে অনেকেই উৎসাহিত হবেন এই ফ্রিলান্সিং এর প্রতি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




