গতকাল রাত বারোটায় ব্লগার স্বাধীন আমাকে ফোন দিল।
- মোজাম্মেল ভাই, খবর শুনছেন ? একটা শোক সংবাদ।
ওর কণ্ঠ ভীষণ ভারি শোনাচ্ছিল। আমি ভয়ে আতকে উঠছিলাম। আবার কার মৃত্যুর খবর শুনবো ? আমাদের কাছের বন্ধুবান্ধব কিংবা খুব পরিচিত কেউ ? তা না হলে ওর কণ্ঠ এভাবে ধরে আসবে কেন ?
আমি কোন রকম তোতলাতে তোতলাতেই জানতে চাইলাম
-এই কী হয়েছে ?
ও প্রায় কান্না কণ্ঠে বললো
- হুমায়ূন আহমেদ স্যার আর নেই।
আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। কাকতালীয় ভাবেই সাথে সাথে লোডশেডিং দেখা দিলো। আমার রুম অন্ধকার। সেই সাথে অন্ধকার হয়ে এলো বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্যের বিশাল এই বদ্বীপ ও।
দুই.
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর বাংলা সাহিত্যে আর কে নোবেল পুরস্কার পাবেন ? এই তর্কটা আমরা বন্ধুরা প্রায়ই করতাম। কোন কারণ ছাড়াই আমি বলতাম হুমায়ূণ আহমেদের নাম। বন্ধুরা দাঁত কিলিয়ে হাসতো। হুমায়ূন স্যারকে টিটকারী করে নয়, ওরা হাসতো আমার মূর্খতা দেখে। কী আছে তাঁর লেখায়? জানতে চাইতো। আমি বলতাম, কিচ্ছু নেই। শুধু রক্ত মাংসসহ কিছু চরিত্র আছে। বোধগম্য সহজ সাবলিল ভাষা আছে। হুমায়ূন আহমেদ স্যার অত্যন্ত সহজ ভাষায় লিখে বাংলা সাহিত্যকে নতুন এক মাত্রা উপহার দিয়েছেন। তার উপন্যাসের প্রত্যেকটি চরিত্রকেই রক্ত মাংসে গড়া জীবন্ত দুপেয়ে মানুষ বলে মনে হয়।
তিন.
হুমায়ূন আহমেদ স্যারের অবস্থার অবনতি হচ্ছে, তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে, এরকম একটি নিউজ যখন দু'একদিন আগে বিভিন্ন পত্রিকায় দেখলাম- তখন থেকেই ভাবছিলাম, স্যারের রোগমুক্তির জন্য দোয়া ও শুভকামনা চেয়ে একটি স্মারক প্রকাশ করবো। এই টাইপের একটি ঘোষণা আজ ব্লগে দিব বলে ভাবছিলাম গতকালকেই।
আজ ব্লগে পোস্ট দিলাম। তবে রোগমুক্তির জন্য নয়। স্যারের পরবর্তী অনন্তকালের জন্য শুভকামনা চেয়ে।
বিদায় স্যার। অন্যভূবনে অত্যন্ত স্বার্থপরের মত সুখে থাকুন। ভালো থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১:২৫