আমাদের অফিস কলিগ জাভেদ ভাই।উনি,ভাবী আর উনার মেয়ে সহ সকাল বেলায় রিকশা করে কোথাও যাবেন।যদি সামান্য ভি আই পি রাস্তা ব্যবহার করা যায় তাহলে গন্তব্যটা কাছাকাছি হয় কিন্তু ব্যাবহার করতে না পারলে অনেক ঘুরে যেতে হবে।এখন জাভেদ ভাই রিকশা ওয়ালাকে বল্লেন ভাই আমার সময় কম আপনি ভি আই পি রাস্তার দিক দিয়ে যাবেন।এখন রিকশাওয়ালা বলে তাহলে পুলিশ কে দুইটাকা দিতে হবে।জাভেদ ভাই বলেন সমস্যা নেই।কিছু দূর যাওয়ার পরে যাবেদ ভাই পড়লেন বিপদে।পকেটে দুই টাকা নেই,পাচ টাকা ও নেই।দেখেন সর্বনিম্ন নোট ২০ টাকা।কিন্তু যেখানে রিকশা ভাড়াই ২০ টাকা সেখানে পুলিশকে ২০ টাকা দেয়ারতো কোন মানেই হয় না।রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলেন উনার কাছে দুই টাকা আছে নাকি।রিকশা ওয়ালা এক গাল হেসে বল্লেন উনার কাছে কোন টাকাই নেই।সকাল বেলায় উনি খালি পকেটে বের হয়েছেন।এখন পুলিশ তো ঘুষ ছাড়া ছাড়বে না।এখন উপায়?যা হোক যথারীতি ভিআইপি রাস্তায় উঠার আগেই পুলিশ রিকশা কে থামার ইশারা দেয়।
জাভেদ ভাই অনেক আগে থেকেই খেয়াল করেছেন পুলিশ কনষ্টেবলরা খোলা রাস্তায় এই সামান্য টাকা ঘুষ নেয়ার সময় কখনোই টাকার দিকে তাকায় না।আপনি টাকা মুঠের ভিতরে রাখবেন।মুঠ করে দুই টাকা পুলিশটির মুঠের ভিতরে দিয়ে দিবেন।পুলিশ ওই টাকা সোজা তার পকেটে রাখবে।কখনোই সে কত টাকা দিলো খেয়াল করে না।আর দুই টাকার দিকে সে খেয়াল করবেই বা কি?তাছাড়া পুলিশের চোখ থাকে সাধারণ মানুষের দিকে।তারা দেখে সাধারণ মানুষ কে কিভাবে তাদের এই কাজটার দিকে তাকিয়ে আছে।তাই নিজের হাতে কি সেটা দেখার সময় কই?যত দ্রুত সম্ভব সেটা পকেটে চালান দিয়ে পরের শিকারের অপেক্ষায় থাকেন।
বিপদে পড়ে জাভেদ ভাইয়ের এই গবেষণা মাথায় আসলো।।তাই যেই পুলিশ উনাদের রিকশাকে থামার ইশারা দিলো তখনি তিনি পুলিশকে ইশারায় নিজের মুঠো করা হাত দেখিয়ে দিলেন।পুলিশও বুঝলো।রিকশাকে যেতে ইশারা দিয়ে নিজের মুঠো হাত জাভেদ ভাইয়ের দিকে বাড়িয়ে দিলেন।এই পর্যন্ত সব ঠিক।
এখন শীতের সকাল।জাভেদ ভাইয়ের নাকে সর্দি।নাক মোছার জন্য হাতে ছিলো টিস্যু পেপার।সেটাই মুঠোতে রাখা।সেই টিস্যু পেপারটিকে উনি পুলিশের মূঠোতে ধরিয়ে দিলেন।পুলিশও টাকা মনে করে সেটা তার পকেটে চালান করে দিলো।পাশের আরেক পুলিশ জাভেদ ভাইয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলো।তাকে ইশারা করে বল্লেন ওই যে আমি উনাকে টাকা দিয়েছি।পরে ভাগ করে নিয়েন।
যাক ভালোয় ভালোয় জাভেদ ভাই গন্তব্যে পৌছালেন।পুলিশকে টিস্যু ঘুষ দিয়ে উনি অমর হয়ে গেলেন ইতিহাসের পাতায়।