somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উত্তরণ কেজিওয়ারেলে নাকি দুই বেগমের হাতে

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হুট করে এখন একটা নির্বাচন দিয়ে দিলেই যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে তা নয়। নির্বাচন দিলে কি হতে পারে?

১। বিএনপি ক্ষমতায় আসবে।
২। তারা পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবে।
৩। আগামী পাঁচ বছর উন্নয়নের চেয়ে বিরোধীপক্ষকে দমনেই ব্যস্ত থাকবে বিএনপি।
৪। চার বছর পর থেকেই আবার উত্তপ্ত দেশ, জনগণের জীবন নিয়ে আবার খেলা।

তবে এসবের সম্ভাবনা ক্ষীণ করে দিয়েছে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার। তারা নির্বাচন দিতে চাই না। অনেকে এটাকে বলছে গণতন্ত্রের মোড়কে একনায়কতান্ত্রিক আচরণ, আমিই সেটাই মনে করি। কেননা, সাধারণ সভা-সমাবেশের অধিকারও অনেক নিকৃষ্টভাবে হরণ করা হয়েছে। তবে শুধু এই সরকার নয়, একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন, বাংলাদেশে অতীতের সব সরকারই একনায়কতন্ত্র কায়েমের বাসনা রেখেছিল। '৭১-এর পরে জাসদ দমন, জিয়াউর রহমানের সামরিক অভ্যুত্থান, এরশাদের সামরিক অভ্যুত্থান, এছাড়া '৯১-এর পরে 'দুই বেগম'-এর ক্ষমতার লড়াই। এর আগে বিএনপি কর্তৃক নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে যে ঝামেলা হয়েছিল সেটাও কিন্তু ছিল খালেদার একক আধিপত্য লাভের চেষ্টা। সর্বশেষ ২০১৪ নির্বাচনও একক আধিপত্য লাভের আকাঙ্ক্ষার ফল ছাড়া কিছু নয়। যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে স্বৈরতান্ত্রিক সরকার দেখা থেকে আমরা আর বেশি দূরে নেই। এই 'দুই বেগম'-কে জনগণ এতটাই ঘৃণা করে যে, এই দুইজনের বিকল্পে সামরিক শাসনকেও বা ১/১১-এর প্রেতাত্মাকেও সমর্থন করতে দ্বিধাবোধ করে না।

তাদের এমন অজনপ্রিয়তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের জনগণ কেন বার বার তাদের নির্বাচিত করে এই প্রশ্নের উত্তর এখন স্পষ্ট, সেটা হলো, বাংলাদেশে কোন কেজিওয়ারেল নেই। এবার প্রশ্ন হলো, কেন নেই? কেননা, বাংলাদেশের তরুণ সমাজের রাজনৈতিক চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছে। ছাত্রসংগঠনগুলোকে বানানো হয়েছে মাস্তানদের আখড়া। এছাড়া এদেশের মিডিয়া ছাত্র রাজনীতিকে এত নিকৃষ্টভাবে উত্থাপন করে যে, তরুণ সমাজেরা রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ হারিয়েছে। এজন্য এ সময়ে অনেক প্রতিভাবান তরুণ থাকা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর মতো কোন নেতা বেড়িয়ে আসছে না। আসলে তরুণ সমাজের আরো বেশি পরিমাণ লোকের উচিৎ ছিল রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হবার, যাদের চেতনা থাকা উচিৎ ছিল স্বচ্ছ গণতন্ত্র। শেখ মুজিব কিংবা জিয়াউর রহমানের আত্মা যদি এখন দেশে এসে একবার ভ্রমণ করে, তবে সেই আত্মা যে বিব্রত হবে তা নিশ্চিত।

তবুও আমাদের দেশে কেজিওয়ারেলের মতো নেতার হুট করেই উত্থান সম্ভব এবং তা যে আসন্ন তা বোঝা যাচ্ছে। এভাবে দেশটাকে ছিন্ন-ভিন্ন হতে দেখতে চাই না দেশের কোন জনগণ। মানসিকভাবে এই জাগরণ ইতিমধ্যে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষই রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে উঠেছে, বিগত কয়েক বছরে। শুধুমাত্র বাকি আছে জনগণের মাঠে নামার। জনগণ আসলে একজন নেতার জন্য অপেক্ষা করছে যিনি শেখ হাসিন, খালেদা জিয়া, জয় অথবা তারেক রহমান নয়; নতুন কেউ, তরুণ কেউ।

তবে এই মূহুর্তে জনবিচ্ছিন্ন দেশের প্রধান এই দুই দল যদি একটি কাজ করে তাহলেই তাদের জনপ্রিয়তা ফিরে আসতে পারে। সেটা অবশ্যই সংলাপ। সংলাপ ছাড়া সমাধান হতে পারে না। তবে সংলাপের এজেন্ডা হওয়া উচিৎ নির্বাচন নয়,

বরং সংলাপের মাধ্যমে প্রথমত প্রতিজ্ঞা করা উচিৎ তারা হিংসাত্মক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসবে । দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া উচিৎ এবং নির্বাচন কমিশনাররা যদি রাজনৈতিক আঁতাত করে তবে তাদের কড়া শাস্তি দেওয়া উচিৎ।

আসলে এই কাজটি করতে দেশের বিচার বিভাগ হওয়া উচিৎ একদম নিরপেক্ষ, যেটাও সুগণতন্ত্র বাদে সম্ভব নয়। এককথায় যতদিন না স্বচ্ছ বিচারবিভাগ এবং স্বচ্ছ নির্বাচন কমিশন এদেশে প্রতিষ্ঠিত না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আমাদের এদেশের কেজিওয়ারেলের আশায় বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। কেননা এই দুই পরিবার ছাড়া এখন যারা রাজনীতিতে আছেন, তাদের প্রতিও দেশের জনগণ বিশ্বাস পায় না।
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×