somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আই লাভ পাকিস্তান/ভারত/বাংলাদেশ। [খেলা, রাজনীতি আর যুদ্ধ।]

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি" রবীন্দ্রনাথের এই বানীতেও ঝামেলা আছে। উনি সুস্পষ্ট ধারনা ছারাই এ কথাটি বলেছিলেন। স্পষ্ট ধারনা থাকলে হয়ত তিনি লিখতেন, "সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী, মানুষতো দুরের কথা বাঙালিও করনি"।

খেলা হচ্ছিল আর গ্যালারিতে চলছিল স্নায়ু যুদ্ধ। খেলা হচ্ছিল বাংলাদেশ আর পাকিস্থানের। টিভি স্ক্রিনে পুরো বিশ্ব দেখেছিল গ্যালারিতে দারিয়ে থাকা এক ললনার প্রেম নিবেদন, "আফ্রিদি, ম্যারি মি।" আরেকদিন এক ললনার কভার ফটো জুড়ে ছিল ভিরাট কহুলির ছবি আর ক্যাপসন, "ভিরাট তুই আমার প্রথম প্রেম, আর দ্বিতীয় প্রেম আমার ভোমরা"। আমি তাকে আনফ্রেন্ড করে ব্লক মেরেও পুরপুরি তৃপ্তি পাইনি। সেদিন ত্রিশ লক্ষ শহীদ কেদেছিল বটে। একটা দাবিও জানিয়েছিল শহীদ যোদ্ধারা, "আমাদের রক্তাক্ত শার্টগুলো কি তোমাদের কাছে আছে? থাকলে ওগুলো আমাদের কবরেই চাপা দিয়ে দাও। আরেকটা ইতিহাস লেখ নতুন করে যেখানে আমাদের কনো চিহ্ন রেখোনা"। আর ফেলানি সৃষ্টিকর্তার কাছে জবাব চেয়ে বলেছিল, সৃষ্টিকর্তা আপনি কেন আমাকে বাঙালি করে পাঠিয়েছেন?

২৪ বছর ধরে ধর্ষণ হওয়া এ দেশকে পাকিস্তানের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনার পর ৪৫ বছর ধরে ধর্ষণ করে চলেছে ভারত। আর তুমি ললনা সেই ধর্ষকদেরই বাহাবা দাও। হে মহান ক্ষমাশীল ললনা তুমি অমর হও। তুমিকি অতি মহৎ অথবা মস্তিস্ক বিলুপ্ত?

এরপর শুরু হয় চেতনা বিক্রেতাদের চেতনা বেচার নতুন ইস্যু। তারা দেশেপ্রেম ঢেলে দেন অনলাইনে আর পত্রিকায়। তসলিমা নাসরিনরা বলবেন, " ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে বাঙালিরা কেন মিত্র দেশ ভারতকে রেখে পাকিস্তানকে সমর্থন করে। তিনি একাত্তরের মায়া কান্না দেখাবেন। তিনি বলবেন বাঙালিরা যাখন পাকিস্তানের ছক্কা মারা দেখে উল্লাস করে তখন আনন্দ ধ্বনি শুনে আমার মনে হচ্ছিল এক ধর্ষিতা নারী আনন্দ ধ্বনি করছে তার ধর্ষকের সমর্থনে। তিনি কখনই বলবেননা, বাঙালিরা যখন ভারতের জয়ে উল্লাস করে তখন আনন্দ ধ্বনি শুনে আমার মনে হচ্ছিল এক ধর্ষিতা নারী আনন্দ ধ্বনি করছে তার ধর্ষকের সমর্থনে। তিনি ৪৫ বছর ধরে ভারতের হাতে ধর্ষণ হওয়া বাংলাদেশের গল্প বলবেননা। তি বলবেনা তার আখ্যায়িত করা মিত্র দেশ নামক ভারতের জঘন্য মানুষিকতায় সৃষ্টি ধর্ষণের পর খুন হওয়া কাটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানির গল্প।

এরপর উঠে দারায় মস্তিষ্কহীনরা। বলে, ভাই থামেন খেলাকে রাজনীতির সাথে জরাতে যান কেন? আরেকজন বলে উঠে, ভাই এটা খেলা যুদ্ধ নয়। আমি বলি ভাই আমি নতুন করে রাজনীতি আর খেলা একসাথে করতে চাইনা। এই দুইটা জিনিস জন্মলগ্ন থেকেই একসাথে জরিত। আর কে বলেছে এটা যুদ্ধ নয়? বরং এটা ভয়াবহ যুদ্ধ। আর আপনারা দেশদ্রোহী। এখন হয়তো আমাকে গালি দিচ্ছেন ভারত বা পাকিস্তান প্রেমিরা। দেশদ্রোহী বলার কারন বুঝিয়ে বলছি। পৃথিবির প্রতিটি যুদ্ধের সৃষ্টিই দেশের অধিকার আর আত্ত্ব-সম্মান বোধ রক্ষা করতে গিয়ে হয়েছে। আর যখন কনো ব্যাপার দেশের সম্মানের সাথে জরিয়ে যায় তখনি সেটা দেশের রাজনীতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। আর যুদ্ধতো রাজনীতিরই একটা অংশ। তখন শুরু হয় স্নায়ু যুদ্ধ। এ যুদ্ধে আপনি পাকিস্তান/ভারতের দলে কাজ করেছেন। সে অর্থে আপনি বড় রকমের দেশদ্রোহী। তাছারা প্রত্যেক দেশের সরকার তাদের টিমকে এগিয়ে নিতে, টিমের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন, অর্থায়ন করেন, লবিং করেন আইসিসি তে নিজেদের ক্ষমতা জোরদার করতে। যেখানে সরকারের প্রত্যেক্ষ হস্তক্ষেপ থাকে। এখনোকি এটাকে আপনারা রাজনীতির বাইরে ভাববেন? গত ভারত-বাংলাদেশ সিরিজে বাংলাদেশ সিরিজ জিতেছিল। তখন ভারতের প্রধান মন্ত্রি নরেন্দ্র মদি ভারতের ক্রিকেট দলের উদ্দেশ্যে টুইটারে লিখেছিলেন, "সুসম্পর্ক বজায় রাখা আমাদের কার তোমাদের নয়। সেম অন ইউ"। এর পরও কি আপনার বোধগম্য হয়না যে খেলা রাজনীতির বাইরে নয় কারন এখানে দেশের আত্ত্ব-সম্মান জড়িয়ে আছে।

আরেকদল বাঙালি আছে যারা বলে "বাংলাদেশের পর আমি পাকিস্তান/ভারতের সমর্থন করি"। তাদের নিয়ে বেশী কিছু বলতে চাইনা। শুধু বলতে চাই দেশপ্রেম দ্বিতীয়তম হয়না। দেশদ্রোহিতায় দ্বিতীয়তমর বসবাস রয়েছে। যেহেতু খেলা একটি যুদ্ধ সেহেতু প্রতিপক্ষ কখনই সমর্থিত হতে পারেনা দেশপ্রেমিক দারা। যেহেতু রাজনীতি আর খেলা একসাথে জরিত সেহেতু ভারত/পাকিস্তানকে বাংলাদেশের পরে সমর্থন করার মানেও আপনি তাদের অন্যায় গুলোকে সমর্থন করছেন। আমি কখনো শিনিনি বা দেখি কোনো ভারতীয় বা পাকিস্তানি বলেছে যে আমি ভারত বা পাকিস্তানের পর বাংলাদেশকে সমর্থন করি। তবে আপনারা ক্যান তাদের প্রেমে মশগুল?

সময়ের দাবি।
কিছুদিন আগে মোস্তোফা সারোয়ার ফারুকি ভাইর রকটা টক শো দেখেছিলাম। তিনি দুই রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন "একদল আরেকটি দলকে বলে তারা ভারত পন্থি, আবার আরেকদল তাদের বলে তারা পাকিস্তান পন্থি। তাহলে বাংলাদেশ পন্থি কারা"। হ্যা আমি আমিও তার সাথে সহমত। আমি শুধু দুই রাজনৈতিক দলকে নয়, আমি চাই এমন একটা জাতি যারা মনে প্রানে বাংলাদেশ পন্থি। এর মানে হল এমন একটা জাতি যারা বাংলাদেশের সাথে জরিত সকল কিছুতেই বাংলাদেশ পন্থি।
তবেই আমাদের বাঙালি অস্তত্ব টিকে থাকবে নয়ত একশ বছর পর পৃথিবিতে বাঙালি জাতির আলাদা কনো উদাহরন থাকবেনা।
আজ বাংলাদেশ বনাম ভারত এর এশিয়া কাপ ফাইনাল খালে। বাংলাদেশের জন্য শুভ কামনা রইল। জিতলেও বাংলাদেশের সাথে আছি হারলেও বাংলাদেশের সাথে আছি।

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৪৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×