somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজাদ সমাচার

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাদের সাথে আমার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব, আজাদ অন্যতম। সব কিছু ছাপিয়ে বর্তমানে তাঁর প্রধান পরিচয় কবি। কবি আজাদের লেখাকে মূল্যায়ন করার দু:সাহস আমার নেই। কেননা, আমার ধারণা কবি হতে হলে ভীষণ অনুভূতিপ্রবণ হতে হয়, তীক্ষ্ম পর্যবেক্ষণক্ষমতা থাকতে হয়, স্মৃতিশক্তি হতে হয় সুতীব্র; সর্বোপরি নিজের অনুভূতিকে, নিজের চিন্তাশক্তিকে ভাষায় রূপান্তরিত করার সক্ষমতা থাকতে হয়। এগুলোর কোনোটাই আমার নেই; বিস্ময়করভাবে আজাদের মধ্যে সবগুলো গুণেরই দারুণ সমন্বয় রয়েছে। আরো যুক্ত হয়েছে তাঁর অনন্যসাধারণ শব্দভাণ্ডার এবং স্যাটায়ার করার সহজাত প্রবৃত্তি। তাই তাঁর লেখালেখিকে মূল্যায়ন করার যোগ্য মানুষ নিজেকে মনে করছি না; বরং বন্ধু হিশেবে আজাদ সম্পর্কে লেখার সুযোগটা আমি হাতছাড়া করতে চাইনা।

কারো সম্পর্কে লিখতে হলে নাকি তাঁর গুণগান গাইতে হয় বেশি। তবে আমি সে পথ মাড়াচ্ছি না। বরং আমি যতটুকু ওকে চিনি, অনুভব করি, সেটুকু বলি। যে কথাটা অসংখ্যবার সবার কাছে বলেছি তা হলো, আমার সময়ে দেখা সবচেয়ে মেধাবি মানুষ আজাদ। আমি সৌভাগ্যবান যে, একজন 'সুকান্ত'কে আমার বন্ধু হিশেবে পেয়েছি। তাঁর সততা প্রশ্নাতীত, যা আমাকে আকৃষ্ট করে। যখন যা অনুভব করে, নির্দ্বিধায় বলে ফেলার এক আশ্চর্য গুণ আছে ওর! এমনকি আমার অপ্রিয় অনেক বিষয়ও আমাকেই মুখের উপর বলে বসে! সে যা বলে সবই যে আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়, তা নয়! কিন্তু ওর যে ভণিতাহীন প্রকাশের দুরন্ত সাহস, সেটার তারিফ না করার সুযোগ নেই। ওর আরেকটি সহজাত গুণ আছে। স্যাটায়ার। স্কুল জীবনে আজাদের স্যাটায়ারের হাত থেকে ক্লাশমেট-শিক্ষক নির্বিশেষে কারো মুক্তি মিলেছে কিনা সন্দেহ আছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেও প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে একজন শিক্ষককে তাঁর সামনেই স্যাটায়ার করার দু:সাহসিক ঘটনার জন্ম আজাদ দিয়েছে।

আজাদ এখন ভীষণ জনপ্রিয় একজন লেখক। আমার ধারণা ওর তিনটি গুণের কারণে মানুষজন ওর লেখা পছন্দ করে। প্রথমত, নিজস্ব ভাবনাকে প্রকাশ করার সঙ্কোচহীন দু:সাহস। দ্বিতীয়, সহজাত স্যাটায়ারের মাধ্যমে লেখাকে উপভোগ্য করে তোলা। তৃতীয়ত, সমৃদ্ধ শব্দভাণ্ডার; বিশেষত নতুন শব্দ সৃষ্টির ক্ষমতা লেখার মাণকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ।

আজাদের কী কোনো নেতিবাচক দিক নেই? আছে। অন্যতম হলো বদমেজাজ বা যাকে বলে শর্ট টেম্পার। আরেকটি নেতিবাচক দিক আছে যেটা আমার কাছে ক্ষমার অযোগ্য মনে হয়। সমালোচনা সহ্য করতে না পারা। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি কারো সমালোচনা কেন যেন ওকে বিচলিত করে তোলে! কিন্তু একজন লেখকের যদি সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা না থাকে, তাহলে কীভাবে চলবে!

আর হ্যাঁ, আজাদের আরেকটি কাণ্ডকে আমি 'বিপ্লব'ই বলি। সেটির কথা না বললেই নয়; ওর যাবতীয় ফেসবুকিং/ লেখালেখি খুব সাধারণ একটি মোবাইল থেকে। ওর জীবনকেও বদলে দিয়েছে সম্ভবত ফেসবুক। আজাদ একজন ভীষণ ভালো বক্তা এবং উপস্থাপক। ইদানিং গানের লিরিক লেখাও শুরু করেছে। ফিল্মের জন্য সেসব গান রেকর্ড করাও হয়েছে। ক্রমেই আমরা বহুমাত্রিক আজাদকে আবিষ্কার করছি।

আজাদের তথ্যগত কিছু বিষয় বোধহয় একান্তই জানানো প্রয়োজন। ১৯৮৮ সালে বরগুনাতে আজাদের জন্ম। বরগুনা জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পড়াশুনা শেষ করেছে যথাক্রমে ২০০৪ ও ২০০৬ সালে। উচ্চশিক্ষা শেষ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০১১ সালে।

আজাদ সম্পর্কে আরো অনেক কিছু লেখা যায়। কিন্তু সেসব থাক এখন। যদি কখনো সুযোগ হয়, অন্যকোনো দিন, অন্যকোনে সময়ে। আজাদের জন্য সর্বদাই শুভ কামনা রইল।

(লেখাটি আজাদের বইয়ের প্রকাশিতব্য বইয়ের ফ্ল্যাপের জন্য লেখা হয়েছিলো। কিন্তু আজাদের পছন্দ না হওয়ায় আর প্রকাশ করা হয়নি। আজাদের মতে, ফ্ল্যাপে এতখানি লেখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×