somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আরো একবার কক্স সাহেবের বাজারে-২

২৬ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(শি এর ক্যামেরা থেকে self timer এ তোলা)

আরো একবার কক্স সাহেবের বাজারে-১ এর পর............

দুপুর ২টা ৪০ মিনিট
কক্সবাজার

হোটেলে কোন রকমে গাট্টি বোঁচকা (তেমন কিছু ছিল না অবশ্য ;)) ফেলে আর গায়ে একটু পানি ঢেলেই বীচে দৌঁড়।লি এর আগেই ফোনে কড়া নিষেধ ছিল, সাড়ে চারটার আগে ওদের ডিস্টার্ব করা যাবে না, তাই ম আর মি পুরো দু’ঘন্টা সময় পেয়ে গেল বীচে। কল্লোল পয়েন্ট (লাবণী পয়েন্ট) এ মানুষের গাদাগাদি দেখে অবাক হয়ে যায় ওরা! অফ সীজনে এত মানুষ কেন কক্সবাজারে! সবাই কি ওদের মতো বৃষ্টি দেখতে এসেছে? কিন্তু বৃষ্টি কই? আকাশের ভাবে-সাবে তো মনে হচ্ছে না খুব শীগগিরই বৃষ্টি হওয়ার কোনরকম সম্ভাবনা আছে!





জালটা অনেক সময় প্রজাপতির মতো লাগছিল


মরা মাছ :(




কল্লোল পয়েন্টকে পিছনে রেখে ওরা হাঁটতে থাকল শৈবাল বীচের দিকে, ওপাশে ভিড়টা কম; তেমন কোন মানুষই ছিল না একটা ছোট্ট ছেলে ও তার সাইকেল ছাড়া। মি এর খুব শখ সে সমুদ্রের ধার ধরে মোটর সাইকেল চালাবে, কিন্তু ওই যানটা এখনো চালানো রপ্ত করা হয়ে ওঠে নি। ছোট্ট সাইকেলটা দেখে ওর চকচক করে উঠল। পিচ্চির কাছে জানতে চাইল, ওটা ভাড়া দেওয়া হয় কী না। ছেলেটা ওর ছোট ভাইয়ের সাইকেল নিয়ে বীচে বেড়াতে এসেছে, আর মি এক মুহূর্ত দেরী না করে ওর ক্যামেরাটা ম এর গলায় ঝুলিয়ে দিয়ে সোজা সাইকেলে। বেশ কিছুক্ষণ সাইকেল নিয়ে এ মাথা ও মাথা করল, বাতাসের উলটো দিকে সাইকেল চালানো যাচ্ছিল না, চাকা বসে যাচ্ছিল বালিতে। কিন্তু মি ভয়ানক খুশীতে উত্তেজিত হয়ে ফোন করে ফ কে। প্রচ্চন্ড আনন্দিত হয়ে তা শেয়ার করার জন্য ওর ফ এর কথাই মনে পড়ে, কারণ ফ শুনলেই খুব হিংসা করবে ওকে, ফ ও সাইকেল চালাতে খুব পছন্দ করে।


মুক্তির আনন্দ (ম এর ক্যামেরা থেকে যার নাম ম দিয়েছে freedom)


একাকী একটা কুকুর :(


তখন চলছিল বিশ্বকাপ ফুটবল (পুরো কক্সবাজার আর্জেন্টিনার ফ্যান আর মি ব্রাজিলের X( )


কী নাম এই পোকার জানি না!

বিকাল সাড়ে ৪টা
লি এর ফোন পেয়ে সী-গালে যাওয়ার পথে দুটো কেক দিয়ে ওরা লাঞ্চ সারে, তখন আর ভাত খাওয়ার মতো সময় বা মন কোনটাই ছিল না।চারজন আবার ফিরে আসে বীচে, লি আর শি এর মুখে তখন গত দিন ওদের লাইফে যে ট্রাজেডি ঘটল, তার ফুলঝুরি। সী-গাল হোটেলের সার্ভিসে তারা মহা অসন্তুষ্ট, পছন্দ হয়েছে শুধু সেখানকার সকালবেলাকার ব্যুফে ব্রেকফাস্ট, যা খেয়ে ওরা আজ লাঞ্চও করে নি। মাঝে শুক্রবার রাতের বাসে ঢাকায় ফিরে আসার টিকেট করা আর ডিনারের সময়টুকু বাদে অনেক রাত পর্যন্ত তারা বীচে বসে গল্প করছিল, সী-গালের সামনের শুয়ে থাকার আসনগুলো তখন স্ট্যাক করে রেখেছে একটার উপর একটা। ক্লান্ত লি আর মি ওঠে বসল সেই স্ট্যাক এর উপর, গল্প চলল যতক্ষণ না গার্ড এসে শেষবারের মতো বকা দিয়ে উঠিয়ে না দেয়। প্ল্যান হলো এর পরদিন সকালে সমুদ্র স্নানের পর হোটেল ত্যাগ করে ওরা যাবে হিমছড়ি আর ইনানী বীচে।


১০


১১


১২


১৩


১৪ শি এর প্রতিবিম্ব


১৫ ম, লি আর শি

রাত ১২টা
মি সমুদ্রের কাছে এসে ভোরে সমুদ্র দেখবে না তা কখনো ভাবতেই পারে না, তাই যতই ক্লান্ত থাকুক ও বদ্ধপরিকর রইল সকাল ৬টায় সমুদ্র দেখতে যাবে। সকাল আটটায় নাশতার সময় দেখা হবে এটা ঠিক করে যে যার রুমে ঘুমুতে চলে গেল।

২ জুলাই ২০১০
অনেক মজার মজার ঘটনা ঘটলেও আমার এখন তার কিছুই লিখতে ইচ্ছে করছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে আমি চির-পরিচিত কক্সবাজারে দুই দিনের ঘটনাকে চিউইংগামের মতো টেনে লম্বা করে ফেলছি। তাই শুধু ছবি দেখুক সবাই।


১৬


১৭


১৮


১৯

সারসংক্ষেপ হলো, সকালে রুদ্রমূর্তি সমুদ্রে স্নান, ঢেঊ এর সাথে পাল্লায় জিততে না পারা (শি পারল তার বিশাল লম্বা শরীরের ওজনে) আর বলের মতো কুন্ডলী পাকিয়ে ম আর মি কে ঢেউ এর ছুড়ে ফেলা; ব্যাটারীচালিত যানে হিমছড়ি আর ইনানী ভ্রমণ; মাঝরাস্তায় ব্যাটারীর চার্জ শেষ হয়ে যাওয়া, কাঠফাটা রোদে ইনানী বীচ আর তারপর বিকেলের শান্ত আবহাওয়ায় হিমছড়ির বাঁধে বসে থাকা; সন্ধ্যায় বার্মিজ মার্কেটে ঘোরাঘুরি, লি আর শি এর শুটকী কেনা, মি এর একা একা সমুদ্রের মাঝে হারিয়ে যাওয়া; মার-মেইড ক্যাফেতে লাঞ্চ কাম ডিনার সারার পর অন্যবারের মতো এবারও শেষ মুহূর্তে বাস ছাড়ার একটু আগে মি এর সমুদ্রের কাছ থেকে ফিরে আসতে না চাওয়া, রাতে সোহাগের বাসে ভ্রমণের সমাপ্তি।


২০


২১


২২


২৩


২৪


২৫


২৬

৩ জুলাই ২০১০
সকালে ঢাকায় পৌঁছেই সরাসরি ডিপার্টমেন্টে; মিটিং আছে। লি আর শি এর কালো হওয়াটা সবাই বুঝতে পারলেও ম আর মি কেন কালো হয়ে গেল এমন একদিনেই তা বুঝতে পারল না কেউ। কিছুদিন পর সবাই যখন সবকিছু জানতে পারল- মি এর নামের সাথে এস আলমের বাসের নাম যুক্ত হয়ে গেল; সবাই ওকে জিজ্ঞেস করে এর পর ও এস আলমে চড়ে আর কোথায় ট্রিপ দিচ্ছে, শিমলা কি যায় এস আলম (ঈদের ছুটিতে শিমলা যাওয়ার প্ল্যান :P)!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১:১৩
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ড্রেনেই পাওয়া যাচ্ছে সংসারের তাবৎ জিনিস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫০



ঢাকার ড্রেইনে বা খালে কী পাওয়া যায়? এবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) একটি অভুতপূর্ব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে ঢাকাবাসীদের রুচিবোধ অথবা পরিচ্ছন্নতাবোধ বড় বিষয় ছিল না। বড় বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×