somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাদাখের দিনগুলি: চতূর্থ/শেষ পর্ব

০৭ ই অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১০:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক উপরে নীল নিচে উঁচু নিচু প্রান্তর
নীলিমার সমুদ্রে সাদা মেঘে মেঘে ভরে গেলো এই অন্তুর


ইদানীং সাধু ভাষার প্রতি আমার প্রীতি আশাতীতভাবেই বাড়িয়া গিয়াছে, মনে হইতেছে নৈশচারীর বান্দ্রামীমূলক পোস্ট পড়িবার কুফল। সকল কথাতেই আজকাল আমি সাধু ভাষার ব্যবহার করিতেছি- নিজেকে বেশ সাধুজন মনে হইতেছে ;)B-)। তাই ভাবিলাম, ব্লগ ত্যাগের প্রাক্কালে একখান সাধু ভাষীয় পোস্ট প্রদান করিয়া যাই- আর সেই সুদীর্ঘ লাদাখ ভ্রমণের সমাপ্তি ঘোষণা করি। লাদাখে আমরা ছিলাম সর্বসাকুল্যে চার রজনী ও তিন দিবস- সেই কলকাত্তাইয়া গ্রুপ শুনিয়া অবাক হইল, এত পরিশ্রম এবং কাল ক্ষেপণ করিয়া আমরা মাত্র তিন দিবসে লাদাখ দেখার চিন্তা করিতেছি দেখিয়া- উহারা আসিয়াছে দিন দশেকের পরিকল্পনা করিয়া :-*। এমন কি আমাদিগের সাথেই সেই জার্মানী দেশের ভদ্রমহিলাও তাই। যাহাই হোক, তিন দিনের পরিকল্পনা করিয়া ফেলিলাম, ৪ তারিখ গভীর রাত্তিরে লেহ শহরে পৌঁছাইলেও পরদিন প্রত্যুষেই আমরা লাদাখ দেখিতে বাহির হইয়া গেলাম :)

লাদাখের তিন দিনের চিত্র সমন্বয়ে খোমাবহিতে আমি তিনখান সুবিশাল এলবাম খুলিলেও এক্ষণে সামুতে তিনখান পোস্ট দিয়া আপনাদিগকে বিরক্ত করিতে চাহি না। গুটিকতক চিত্র দিয়া আর স্বল্প ভাষায় তাহার বিবরণ উপস্থাপনা করিয়াই ক্ষান্ত দিতে চাই সামুকে বিদায় জানাইবার এই ক্ষণে।

দিন ১- ট্যাক্সি ভাড়া করিয়া ঘুরিলাম হেমিস গোম্পা, থিকসেয় প্যালেস ও গোম্পা, শেয় স্কুল যেই স্থানে তিন ইডিয়টের সেই চলচ্চিত্রখানির চিত্রধারণ করা হইয়াছিল, শেয় প্যালেস ও গোম্পা। মোটামুটি দৌড়ের উপর এই স্থানগুলি ঘুরিয়া দেখিলাম- আমাদিগের হাতে সময় কম বলিয়া কথা। আমাদের ট্যাক্সি ড্রাইভার নাকি ওই চলচ্চিত্রের শ্যুটিং এর সময়কালে আমির খান ও তাহার সহইডিয়টদের সহিত বিচরণ করিতেন :|


দুই


তিন ও মেঘ বালিকা নিয়ে যাও আমায় তোমার সাথে
ঘুরবো আমি এপার-ওপার সকাল,দুপুর, রাতে...



চার

দিন ২- আমাদিগের গাত্রে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের স্বাক্ষর থাকিবার কারণে সেই বিখ্যাত প্যাঙ্গন লেকে যাইবার অনুমতি পাইলাম না :((, মনের দুঃখে ঘুরিয়া বেড়াইলাম আলচী গোম্পায় আর তাহার পিছনে সিন্ধুনদের পাথুরেবেলায়। আমি আবার আমার সংগীগণ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া গিয়াছিলাম কিয়ৎক্ষণের নিমিত্তে- ইচ্ছা করিয়া নহে।
দিবস শেষে পুরাতন লেহ প্রাসাদে আসিয়া আমাদিগের সকলের হৃদয় খুশীতে বাক-বাকুম করিয়া উঠিল :D, লাফাইয়া বেড়াইলাম প্যালেসের টেরাস হইতে টেরাসে।
এইক্ষণে একখান কথা- প্রথম দিনের ট্যাক্সি ড্রাইভার মির্জা ভাই যতই গম্ভীর ছিলেন এবং ব্যক্তিত্ব বজায় রাখিবার চেষ্টা করিলেন, দ্বিতীয় দিনের চালক রাজা ভাই ছিলেন ততই খোলামেলা এবং বাচাল প্রকৃতিরও একটু। অবাক হইলেন শুনিয়া যে আমাদিগের ভূ-খন্ডে বরফ পতিত হয় না যেইখানে উহাদিগের ডিসেম্বর মাসের তাপমান মাইনাস তিরিশ ডিগ্রী!


পাঁচ


ছয় পাহাড়ের উপর আমার বাড়ী
মেঘের সাথে গল্প,আড়ি
নীলের মাঝে স্বপ্ন আঁকি
কষ্টগুলো বুকে রাখি
নীল ক্যানভাস,আমার সুখ-দুঃখের ইতিহাস...........



সাত রঙ্গিন স্বপ্ন মিশিয়ে দিলাম নীল সাগরে


আট


নয় আধো রো্দ আধো ছায়া
আহ! জীবন কি মায়া..........


দিন ৩- এই দিবসটি নির্ধারিত ছিল প্যাংগন লেকে যাওয়ার নিমিত্তে- যেই হেতু যাওয়া হইল না আমরা দ্বিধাবিভক্ত হইয়া গেলাম- gender কে ভিত্তি করিয়া division হইল। আমরা তিন পুরুষ (!)- শিশির ভাই, রেজা ভাই এবং আমি (এহেম!- আমার কোনরকম দোষ নাই, উহারা তাহাই মনে করিয়া থাকে!) গমন করিলাম ট্রেকিং করিয়া লেহ প্যালেস এবং তাহার চাইতেও বিশাল উচ্চতার tsemo castle আর temple এ - বাকী নারীকূল কাশ্মীরি শাল কিনিতে লেহ শহরে অবস্থান করিল।আমরা এক রাস্তায় ট্রেকিং করিয়া উপরে উঠিয়া ভিন্ন রাস্তায় নামিলাম। বৈকালে চান্স পাই (আমরা ভাবিয়াছিলাম নদী) গেলাম- উহা প্রকৃতপক্ষে একখানি রাস্তার নাম। :P


দশ নীল আকাশ মিশে যায়, ঐ দূর সীমানায়


এগার


বার


তের


চৌদ্দ


পনের এক চিলতে রোদ্দুর আসে আমার পানে হেসে
হৃদয় কথা জমিয়ে রাখি তাকে ভালোবেসে



ষোল

লাদাখের তিনটি দিবস স্বপ্নের মতোন মনে হইতেছিল- চারিদিকে এত সৌন্দর্য! আমাদিগের ছয়জনের সকলের মুখে কেবল একটি কথাই ফিরিতেছিল- এত সুন্দর কিসের লাগিয়া? এত সৌন্দর্য যে আমাদের সহিবার ক্ষমতা নাই! যিনি এত সুন্দর কে সৃষ্টি করিয়াছেন তাহার নিকটে লাখ লাখ শুকরিয়া যে সেই সৌন্দর্য উপভোগ করিবার সুযোগ এবং শক্তি উভয়ই পাইলাম।


সতের একের উপর এক, গড়ি স্বপ্নের শুরু। উপরের নীলিমা ছোঁয়ার প্রত্যাশা বুকে নিয়ে


আঠার


ঊনিশ তপ্ত রোদে পুড়ে যাওয়া পিঠ
তবুও দাঁড়িয়ে আছি ঠিক
বৃষ্টির প্রতীক্ষায়............
আয় বৃষ্টি আয়,ঝুম বৃষ্টি আয়



বিশ


দৃষ্টি সুদূর...........
ইচ্ছে অসীম
(ছবিটা আমরীন আপু তুলিয়া দিয়াছিল :))

(ছবির ছন্দময় ক্যাপশনগুলো সত্যবাদী মনোবট এর লেখা মন্তব্য হিসাবে আমার ফেসবুক এলবামে :); অশেষ ধন্যবাদ তাহাকে।)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ২:০৮
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×