আমরা মুসলিম। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ হবে আল্লাহর তায়ালার আদেশ অনুযায়ী। আমরা যে যেই কাজ করি, তার উচিৎ সেই কাজটা ইসলাম রীতিমতন আদায় করা। যে ব্যবসা করে সে ব্যবসার প্রয়োজনীয় মাসয়ালা জেনে নিবে।
যে মজদুরি করে সেও জেনে নিবে তার প্রয়োজনীয় মাসয়ালা। যেমনি ভাবে আমরা নামায পড়ার আগে নামাযের মাসয়ালা গুলো মোটামুটি জেনে নেই।
কিন্তু একটা বিষয় সম্পর্কে আমরা বড়ই উদাসীন। সেটা হল বিয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা, যেগুলো জেনে নেয়া একান্ত প্রয়োজন।
সেইরকমই একটি বিষয় হচ্ছে
"তালাক" বা বিবাহ বিচ্ছেদ। মানুষ নিজের স্বভাবগত চাহিদা বৈধ ভাবে পূরনের জন্যই বিবাহ করে থাকে। কিন্তু তালাকের বিষয়টি ঠিকমতো না জানার কারণে স্বামী - স্ত্রীর পবিত্র সম্পর্ক হয়ে যায় অবৈধ। আর যারা ধর্ম মানে সে অবশ্যই তালাক মানবে।
তালাক এই বিষয়টি ইসলাম খুবই স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেছে। এই তালাকের শব্দ যে নিজ স্ত্রীকে "তোমাকে তালাক দিলাম" স্পষ্টভাবে যদি কৌতুক করেও বলে তাহলে সেটা ও সত্যি হিসেবেই সাব্যস্ত হবে। রাগের মাথায়, মাতাল অবস্থায়, অথবা জোরপূর্বক বলতে বাধ্য করে তাহলে ও তালাক পতিত হয়ে যাবে। কিন্তু স্বামী - স্ত্রী এখন এত বেখবর যে তালাকের বিষয়টা একদম ছেলেখেলা মনে করে। ঝগড়া - ঝাটির সময়ে স্বামী স্ত্রীকে অনেক সময় বলে ফেলে "তোমাকে তিন তালাক দিলাম" কিন্তু স্বামী বেচারার অনুভূতিও যে এই ছোট্ট কথাটি বলার দ্বারা সে কত সুন্দর সম্পর্কে অবৈধ করে ফেলল। কত সহজ একটি বিষয়কে কত কঠিন বানিয়ে ফেলল।
এরপর কয়েকজন তো কখনো কখনো কোন আলেমের কাছে জিজ্ঞেস করে যে এখন কি করা যাবে? আর কয়েকজন তো এটাকে কোন বিষয়ই মনে করেনা। অনেকে বলতে পারে এত কিছুর কি দরকার? তখন তো তাকে বলা যেতে পারে এটা ইসলামের হুকুম। যদি তা না মানা যায় তাহলে বিয়ের প্রয়োজনটা কোথায়? তার জন্য তো গনিকালয় গুলো পসরা খুলে বসেই আছে।
যাই হোক কথা অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে।
স্বামী বিয়ের মাধ্যমে স্ত্রীর উপর কিছু কর্তৃত্ব অর্জন করে। যেমন তার সাথে সহবাসের অধিকার এবং তাকে তালাক দেয়ার অধিকার। তবে স্ত্রীকে যদি স্বামী তালাক দেয়ার অধিকার প্রদান করে তাহলে সে তালাক দিতে পারে অন্যথায় স্ত্রী অভিভাবকদের মাধ্যমে বা বিচারকের মাধ্যমে স্বামীর থেকে তালাক আদায় করতে পারে যদি কোন যুক্তিসংগত কারণ থাকে।
ইসলাম তিন তালাক দেয়াকে প্রচন্ড ভাবে নিষেধ করেছে। স্বামী যদি তালাক দিতে একান্ত অপারগ হয় তাহলে সে এক তালাক দিবে। আর স্ত্রীর তিনটি ঋতুকাল অতিবাহিত করবে তাহলে তাদের বিবাহ বন্ধন শেষ হয়ে যাবে। স্ত্রীকে যদি ফিরিয়ে নিতে চায়, তাহলে পুনরায় মোহরানা দিয়ে আবার বিবাহ করবে। আর তিন ঋতুকালের মাঝে যদি স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চায় তাহলে স্পর্শ বা চুম্বন বা নিবিড় ভাবে কাছে টেনে নিলেই হবে আর কিছু লাগবেনা।
কিন্তু খোদা না করুক যদি তিন তালাক দিয়ে ফেলে তাহলে আর কোন পথ বাকি থাকে না। আর যেই পথটি থাকে যেটাকে আমরা হিলা বিবাহ বলে থাকি তা খুবই বিশ্রী নোংরা একটি পথ।
মোটকথা : তালাক দিতে হলে এক তালাক। এর বেশি নয়। মাথা যতই খারাপ হোকনা কেন।