somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এম আর তালুকদার
আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস, আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্নিশ। আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনা চিৎকার, বুকের ব্যাথা বুকে চাপিয়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার। এক মুঠো সুখের সন্ধানে ঘুরে বেড়াই অবিরত…

সামাজিক অসঙ্গতির বিরুদ্ধে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরন (পর্ব - ০১)

১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দীর্ঘ দিন যাবৎ ভাবছি লিখবো কিন্তু লিখতে বসলেই হাজারো দুঃচিন্তা মাথায় ঘোরপাক খায় আর সেই জন্যই এমন শিরোনামে লেখা শুরু করলাম। আমার এই লেখাটি পড়ে কেউ আমাকে বলবে নাস্তিক, কেউ বলবে মহা পন্ডিৎ, কেউ বলবে গন্ডমূর্খ এছাড়াও নানা প্রকার মন্তব্য আসতে পারে সে জন্য মন্তব্যের ঘর উন্মক্ত আছে।

এবার শুরু করতে যাচ্ছি আলোচনা তবে প্রথমে আলোচনার বিষয়বস্তু উল্লেখ করতেছিঃ

* ধর্ম ব্যবসাসী
* মূর্খদের মুখে জ্ঞানীদের সমালোচনা
* সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিষর্যন


আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু ধর্ম ব্যবসাসী

যেহেতু আমাদের দেশে মুসলিম সংখ্যগরিষ্ট (আমিও মুসলিম) সেহেতু সংখ্যলঘুদের নিয়ে টানাটানি না করে সংখ্যগরিষ্টদের নিয়েই কিছু লিখতেছি তবে দয়া করে আমার কথাগুলো একটু মনোযোগ দিয়ে পড়ে আমার ভুল হলে সুধরে দিবেন। আমাদের দেশ যেহেতু মুসলিম প্রধান সেহেতু অসংখ্য মসজিদ থাকবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু এর ভিতরে কিছু অস্বাভাবিক দিক রয়েছে আজ তাই নিয়ে কথা বলবো।

ক। মসজিদ ব্যবসা
খ। মাহফিল ব্যবসা
গ। ফতোয়া ব্যবসা

ক। মসজিদ ব্যবসা

১। বলা হয় মসজিদ আল্লাহর ঘর। আসলেই কি আল্লাহ ঘর ? নাকি আমরা তার উপাসনা করার জন্য এই ঘর নির্মান করি !

২। বর্তমানের অনেক মসজিদের ভিতরে লেখা থাকে মসজিদে দুনিয়াবী কথা বলা নিষেধ, নবী (সঃ) এই ঘরে বসে বিচারকার্য করতেন। তাহলে যার মাধ্যমে ইসলাম প্রচার হল তার থেকেও কি আমরা এক ধাপ বেশি এগিয়ে গেলাম ?

৩। বর্তমানে মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ করে এক মসজিদের খানিক দূরে আরেক মসজিদ নির্মান করা হচ্ছে তারপর তার উন্নতির জন্য শুরু হচ্ছে চাঁদা তোলা বা ভিক্ষাবৃত্তি। বলা হচ্ছে আল্লাহর ঘরের জন্য দান করে যান। আমার আল্লাহ কি হত দরিদ্র যে তার জন্য তার সৃষ্টি মানুষের ঘর তৈরি করে দিতে হবে !? আপনারা কিভাবে কেমন মসজিদ তৈরি করে তার সিজদাহ করবেন এটা নিতান্তই আপনাদের ব্যাপার এখানে আল্লাহকে টেনে লাভ কি ?

৪। মসজিদ কমিটি একটা অতি দায়িত্বপূর্ন এবং ইহকালীন ও পরকালীন জবাবদিহিতামূলক কমিটি কিন্তু অনেক মসজিদ কমিটি এই মসজিদকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলেছেন নিজেদের অর্থ উপার্জনের বিরাট উৎস হিসেবে।

৫। মসজিদের উন্নতি হচ্ছে বাড়ছে সৌন্দর্য কিন্তু শেষ হচ্ছে না মসজিদের দরিদ্র অবস্থা। এই প্রসঙ্গে একটা বাস্তব উদাহরন দিচ্ছি -
নারায়নগঞ্জরে এক মসজিদে গত রমজানে নামাজ পড়তে গিয়ে সিজদাহ দিতে গিয়ে দেখি নিজের চেহারা দেখা যাচ্ছে এবং এসির বাতাসে ঠান্ডা লাগতেছে তবুও নামাজ শেষ পড়লাম। নামাজের মধ্যে ইমাম সাহেব জানালেন মসজিদের উন্নয়ন কাজ চলতেছে এবং রমজান শেষে ইমাম মুয়াজ্জিনের বেতন দরকার তাই আল্লাহর ঘরের জন্য যে যা পারেন মুক্ত হস্তে দান করুন শুনে খুব খারাপ লাগলো কারন দানের টাকায় চাকচিক্য হচ্ছে ! নামাজ শেষে একজন হাফেজকে বললাম ভাই যে টাকায় এই চাকচিক্য করা হয়েছে সেই টাকায় উন্নয়নের আর একটু অগ্রগতি হত বা এই টাকা দিয়ে মসজিদের নামে কোন হালাল ব্যবসা শুরু করলে অন্ততপক্ষে ইমাম মুয়াজ্জিনের বেতনের জন্য দান ক্ষয়রাত চাইতে হত না। আমার এই কথা শুনে তিনি যা বললেন তার সেই মন্তব্যের উপর আপনাদের মন্তব্য জানতে চাই, হাফেজ বলিছিলেন আপনারা এই বিষয়ে কতটুকু জানেন আর কিইবা বোঝেন! যা বোঝেন না সেই বিষয় নিয়ে কথা বলা ঠিক না, আপনার চেয়ে অনেক ভলভাল লোকেরা আছে তারা ভাল বোঝেন। মক্কা মদিনায় ও এভাবেই চলে। আমি আর কিছু বলতে পারি নাই, এবার আপনারা যা বলার বলুন।


খ। মাহফিল ব্যবসা

ইসলামে দ্বীন প্রচার করতে বলা হয়েছে কিন্তু অর্থের বিনিময়ে ধর্ম প্রচার করতে বলা হয়েছে কিনা আমার জানা নাই। এক ভাইয়ের কাছে একটা ঘটনা শুনে ছিলাম, এক বক্ত ২ ঘন্টা ৫০,০০০/- টাকা চুক্তিতে ওয়াজ করতে গেছেন। মাহফিল আয়োজক কমিটি আয়োজন করতে গিয়ে ১০,০০০/- যোগার করতে অসমর্থ্য হয়েছে। ওয়াজ শেষে বক্তা রাজকীয় আহার গ্রহন করে টাকা চাইলে আয়োজক কমিটি অতি বিনয়ের সহিত লজ্জিত হয়ে জানায় তারা শত চেষ্টা করেও ১০,০০০/- যোগার করতে অসমর্থ্য হয়েছে। এই কথা শুনে বক্তা এমন ভাষায় গালি শুরু করলো যা শুনলে পতিতাও লজ্জায় মুখ লুকাবে, তার এই গালি শুনে উপস্থিত এক যুবক তাকে প্রহর করতে চাইলে কোন ভাবে তাকে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। গত বছর খুলনার এক উপজেলায় এক স্থানে মাস ব্যাপি ভিন্ন ভিন্ন বক্তার একই ওয়াজ (গদ বাধা কাহিনী) শুনে বিরক্ত হয়েছিলাম তবুও কিছু বলতে পারিনি কারন ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট। এই সেন্টিমেন্টের কাছে কিছু বললেই দফারফা।

** আমার প্রশ্ন হল পাড়ায় মহল্লায় এত মসজিদ থাকতে এত টাকা দিয়ে ২/১ ঘন্টার জন্য এই বক্তা আনার দরকার কি ? তাহলে এই ইমামগন কি করেন ? তারা কি কিছু না জেনেই ইমাম হয়ে বসে আছেন! তাহলে আমরা তাদের পিছনে নামাজ পড়ি কেন এবং তাদের উল্টাপাল্টা ফতোয়া কেন শুনি ?


গ। ফতোয়া ব্যবসা

এই বাংলায় ফতোয়া নতুন কিছু নয় এটা অনেক পুরনো একটা সমস্যা। শুনেছি ব্রিটিশ আমলে নোয়াখালী অঞ্চলের হুজুরেরা ফতোয়া দিতেন " ইজ্ঞানো গ্যাদার বাপ তর হোলারে ইংলিশ হড়াইসনো জাহান্নামে যাইবো" এই এক ফতোয়ায় হিন্দুরা ইংলিশ পড়ে ইংরেজদের কর্মচারী হিসেবে চাকুরি করেছে আর মুসলিমরা চাষী হয়েছে নির্যাতিত নিপিড়ীত। এখন দিন বদলেছে ফতোয়াও বদলেছে। এখন ফতোয়া হয়েছে এমন -

ফতোয়া চাওয়া ব্যাক্তিঃ হুজুর আমার গাছ থেকে নারিকেল চুরি করেছে বিচার চাই

হুজুরঃ চুরির কঠিন সাজা হওয়া উচিৎ। ইসলামে চুরির কঠিন শাস্তি। কে চুরি করছে !

ফতোয়া চাওয়া ব্যাক্তিঃ আপনের ছেলে

হুজুরঃ ডাব খাইছে না ঝুনা খাইছে !

ফতোয়া চাওয়া ব্যাক্তিঃ ডাব খাইছে

হুজুরঃ ঝুনা খাইলে গুনাহ হয় ডাব খাইলে মাফ হয়। এটা নিয়ে বিচার চাওয়ার কি আছে আল্লার নেয়ামত খাইছে এটা চুরি হইলে ক্যামনে ? তুই আমার পোলারে চোর কইছো আমি আজই মেম্বরের কাছে নালিশ দিমু। তুই নামাজ পড় তুই তো জাহান্নামে যাবি। ছিঃ তোর মত বেনামাজির গাছ থেকে ও খাইছে এটা তো তোর ভাগ্য। দুর হ এখান থেকে।

এখন কুরআন হাদিস থেকে ফতোয়া দেয়া হয় না, ফতোয়া দেয়া হয় ব্যাক্তিস্বার্থ্য চরিতার্থ করার জন্য। ফতোয়া দেয়া হয় মাজহাব থেকে, পীরের কথার রেফারেন্স টেনে, বাবার কথা শুনে। একএক জনের জন্য একএক ধরনের ফতোয়া।

মুসলিম আজ বিভক্ত সিয়া, সুন্নী আর মাজহাব নিয়ে, নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে। তাই তো এদের নিয়ে আমার লেখা কবিতা

"ঐক্যের আহব্বান"

এক বিশ্বাস, এক ধর্ম,
ভিন্ন কেন তোদের মত !
একতার অভাবে ছিন্নভিন্ন
হারিয়েছ শান্তির পথ।

হামাস মরছে ফিলিস্তিনে
রোহিঙ্গা মরে আরাকানে
মুসলিম দেশে আগুন জ্বলে
হত্যার প্রতিযোগিতা চলে।

তোদের দোষেই নিঃস্ব তোরা
ডুবছে তোদের তরী !
ঝড়ের মাঝেই দাড় টেনে যা
দিতে হবে সাগর পারি।

ওহে মুসলিম এক হও
ভুলে যাও সকল দন্দ,
হাতে হাত রেখে ঘুরে দাড়াও
হঠাও সকল মন্দ।

আর কতকাল দেখবি তোরা
নিজের ভাইয়ের রক্ত !
অত্যাচারীর দোষ দেবো কী!
তোরাই তাদের ভক্ত।

এমনি ভাবে থাকলে পরে
পুরে হবি ছারখার,
অত্যাচারের প্রতিবাদ করে
ঐক্য, শান্তির বিশ্ব গড়।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:০০
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×