somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুবিন খান
অদৃষ্টরে শুধালেম, চিরদিন পিছে, অমোঘ নিষ্ঠুর বলে কে মোরে ঠেলিছে?সে কহিল, ফিরে দেখো। দেখিলাম থামি, সম্মুখে ঠেলিছে মোরে পশ্চাতের আমি।

জীবিত অথবা বিবাহীত

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




দায় কখনও কখনও নিজের পরিসীমা অতিক্রম করে। যখন করে তখন দায় আর দায় থাকে না। মাথার যন্ত্রণা হিসাবে বির্বতিত হয়। বিবর্তনবাদের সেই যন্ত্রণা বোঝার ওপর শাকের আঁটির আকৃতি ধারণ করে। এরে রাখাও যায় না, ফেলাও যায় না। ব্যালেন্স রাখাও কঠিন।
কঠিন কাজ আমার পছন্দ না। লেখাপড়া বড় কঠিন লাগত বলে লেখাপড়া করি নাই। মুর্খ রয়ে গেছি। এই জগত সংসারে আমার তেমন কোন দায় নাই। না থাকার কারণ হল, দায়বোধের বিবর্তনবাদকে আমি ভয়াবহ রকম ভয় পাই। সরাসরি মাইগ্রেন না হলেও মাইগ্রেনের কাছাকাছি একটা কিছু আমার আছে। কি দরকার মাথার যন্ত্রণা নেয়ার? আমি সেধে মাথায় কোন যন্ত্রণা নেই না তাছাড়া ব্যালেন্স করে চলাও আমার ধাতে নাই। আমি সহজ সরল নির্বোধ এবং মুর্খ মানুষ। সাদাকে সাদা না বলে অন্য রঙ বলে চালাতে পারি না। কালোকে আমার কালোই বলতে হয়।

সকল দায়ের বাইরে থাকি বলে আমার সঙ্গে বাড়ির লোকজনও তেমন যোগাযোগ করেন না। কেউ ফোন করেন না। কোন খবরাখবর নেন না। বস্তুত আমার অস্তিত্ব আছে নাকি বিলীন হয়ে গেছে সেটা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নাই।

কিন্তু যতই মুর্খ আর নির্বোধ হই, মানুষ তো। আবার জগত সংসারের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখতে চাইলেও সংসার ছাড়ে নাই। সাংসারিক মানুষের কাতারে ফেলে দিছে। প্রতিবাদ করার উপায় রাখে নাই। আমি তাই নিজের ভালো লাগাকে পাত্তা না দিয়ে সংসারে মুখ বুঁজে দিনানিপাত করি। দায় দায়িত্ব এড়িয়ে মোটামুটি ভালোই দিন কাটছিল। এই সুখ ভাগ্যের সইল না। এতদিন আড়ালে বসে সে যে মিটিমিট করে হাসছিল আমি সেটা টের পাই নাই।

জীবনে নানান রকম বিধি নিষেধ নিয়ম কানুনের মধ্যে বিবাহও একটা নিয়ম। বন্ধু বান্ধব বলল, পুরুষ মানুষ দুই প্রকার। মৃত এবং বিবাহিত। আমি বিবাহিত হইলাম। বিবাহিত হইলে মানুষ আপন সত্ত্বা হারায়। আমিও হারালাম। ব্যক্তিগত বলে আমার কিছুই রইল না। বাইরে বেরুনোর সময় আমাকে বলতে হয়, 'এই, আমাদের আন্ডারওয়্যারটা কই ?' মার্কেটে গিয়ে মেয়েদের ব্রা কিনতে হয়। আমি ফোন করে বলি,'এই আমাদের জন্যে কোন্ রঙের ব্রা কিনবো?' মি মরমে মরে যাই। তবুভালোই চলছিল।
কিন্তু অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকায় যায়। আমার চারপাশের সাগর শুকায়ে গেল। বুকশেলফ ঘাঁটতে গিয়ে আমার শ্রদ্ধাভাজন স্ত্রী দেড় যুগ পুরান ডায়েরি আবিষ্কার করে ফেলল। সেখানে সে গদ্য পদ্যসহ বিভিন্ন রোমান্টিক কথাবার্তা খুঁজে পেল। আর যায় কোথায়। আমার ওপর খড়গ নেমে এলো। আমি যতই বউকে স্মরণ করিয়ে দেই ওই ডায়েরি লিপিবদ্ধ করবার কালটিতে সে আমার প্রায় অপরিচিত এবং সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া বালিকা ছিল, সে শোনে না। বাংলা সাহিত্যর তাবৎ কবি সাহিত্যিকের প্রভাবের কথা বলি। সে চোখমুখ শক্ত করে আমাকে কঠিন কঠিন কথা বলে। আমি বাকহারা হই। অকূলে কূল খুঁজি। কূলের দেখা পাই না।
আমার অনেক বন্ধু বান্ধবের যাবতীয় প্রেমপত্র আমিই লিখে দিছিলাম। অনেকে আমায় বাসায় নিয়ে যেত। সারারাত তার প্রেয়সীর গল্প করত। আমি বসে বসে শুনতাম। তারপর ফরমায়েশ মত লিখে দিতাম। বউয়ের শক্ত চোখমুখ এইসব গল্প করতে নিরুৎসাহিত করে। আমি বিস্মৃতির গল্প করি। বলি, কোন এক সময় যে এইসব লিখেছিলাম এবং সেগুলো এখনও বহাল তবিয়তে আমার বুক শেলফে রক্ষিত আছে, আমার টু জিবি মেমোরি এই তথ্য রক্ষণ করে নাই। কাজ হয় না। প্রায় প্রতিদিনই আমার রোমান্টিক ডায়েরি লইয়া আমাকে বিপুল ও ইস্পাতের মত কঠিন কথাবার্তা শুনতে হয়।
আজ সকালেও ঘুম ভেঙে সেসব বাক্যর পুনরাবৃত্তি। নতুন কিছু যুক্ত হল, দেড় যুগ আগে ডায়েরি লেখা বলেছিলাম। বউ তথ্য ঘাঁটাঘাটি করে সেটাকে তেরো বছরে নামিয়ে আনতে সমর্থ হইছে। আমি হাঁপিয়ে উঠলাম। 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' থেকে 'ডিজিটাল' শব্দটা ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলাম। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নও করে ফেললাম। আমি এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ নয়, শুধু বাংলাদেশের অতিসাধারণ একজন নাগরিক। না থাকবে বাঁশ, না বাজবে বাঁশি।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৫১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×