somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা দিন

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ ভালোবাসা দিবস। ভ্যালেন্টাইনের বাংলা প্রতিশব্দ করা হয়েছে ভালোবাসা দিবস। ইতিহাসটা এরকম-
ইতালির রোমে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন খ্রিস্টান পাদ্রী এবং চিকিৎসক। এটা ১৭৪৮ বছর আগের কথা। তখন রোমান সাম্রাজ্য। সে সময় খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। ধর্ম প্রচারের অভিযোগে সম্রাটের নির্দেশে ভ্যালেন্টাইনকে বন্দী করা হয়। কারাগারে এক কারারক্ষীর অন্ধ মেয়েকে তিনি সুস্থ করে তোলেন। মেয়েটির সঙ্গে তার ভালেবাসাও হয়। ভ্যালেন্টাইন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তার জনপ্রিয়তায় রাজা ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যদণ্ড দেন। তার মৃত্যুর দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি। ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুর দু'শ সাতাশ বছর পরে ৪৯৬ সালে পোপ সেইন্ট জেলাসিও প্রথম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইনের স্মরণে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইনস্ ডে ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইন ডে প্রবর্তন করেন। সাপ্তাহিক যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত শফিক রেহমান লন্ডনে নির্বাসিত ছিলেন। তখন লন্ডনে দিনটি উদযাপিত হতে দেখেছেন। শফিক রেহমান অনুভব করেন ঘন বসতির বাংলাদেশে ভালোবাসাটা অনেক বেশি দরকার। সুসম্পর্ক, সহাবস্থান গড়ে ওঠা জরুরি। ১৯৯৩ সালে সাপ্তাহিক যায়যায়দিনের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথম উদযাপিত হয় ভালোবাসা দিবস।
১৪ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় যায়যায়দিন স্টলে সকল ক্রেতা পাঠকদের লাল গোলাপ আর চকলেট দিয়ে আলোড়ন তৈরি করেছিল। ভ্যালেন্টাইন ডে'র বিশেষ কার্ডও ছেপেছিল যায়যায়দিন।

ভালোবাসা দিবস উদযাপনের পাশাপাশি অনেক দেশেই আবার এই দিনটি উদযাপনের বিরুদ্ধে মতবাদ গড়ে উঠছে। মুসলমানপ্রধান দেশগুলোর অনেকেই এই দিনকে ইসলাম বিরোধী আখ্যা দিয়ে তা পালন করার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। গেল বছর মালয়েশিয়ায় ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করার অপরাধে ১০০ জন তরুণ-তরুণী গ্রেফতার হয়েছিল। ভারতে উগ্র হিন্দুবাদী সংগঠন শিবসেনা ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের বিষয়ে সাবধান করে দিয়েছে। দিনটি নিষিদ্ধ করার কথা বলছে পাকিস্তানও।

বাংলাদেশেও ক'বছর ধরে ভালোবাসা দিবসটির বিরোধিতা দেখা যাচ্ছে। তবে খুব মজার ব্যাপার হল বাংলাদেশের ভ্যালেন্টাইন ডে'র বিরোধিতাকারীরা মোটা দুইটা ভাগে বিভক্ত। এদের এক ইসলামের দোহাই দিচ্ছে। এরা বেশ পুরনো। এদের নিয়ে বলার কিছু নেই। এরা সব সময়েই 'ওই নতুনের কেতন ওড়ে'র বিরোধিতা করে এসেছে।

আরেক দল সম্প্রতি মাথাচাড়া দিয়েছে। এরা নিজেদের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বলতে ভালোবাসেন। শুরুতে ভালোবাসা দিবসটাকে স্বাগত জানালেও এখন কোন এক রহস্যময় কারণে এর বিরোধিতা করছেন! ইতোমধ্যেই ১৪ ফেব্রুয়ারিকে 'স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস' হিসেবে আখ্যা দিয়ে ফেলেছেন। অথচ যে স্বৈরাচারকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে দিবসটির সুচনা সেই স্বৈরাচার যে কেবল পুনর্বাসিত হয়েছে তা নয়, দোর্দণ্ড প্রতাপে বাংলাদেশে রাজনীতি করছে এবং বর্তমান সংসদে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে।

যারা বলেন, ভালোবাসার জন্যে আলাদা কোন দিবসের দরকার নাই। প্রতিটা দিনই ভালবাসার। আমি তাদের বিরোধিতা করছি না। কিন্তু কজন মানুষ তার ভালোবাসার মানুষকে ফুল দেন বা আয়োজন করে দুটো ভালোবাসার কথা বলেন? আপনিই জানেন সেটা।
আর ভালোবাসা দিবসের সবচেয়ে বড় ভুল ভাবনাটা হল, ভালোবাসা বলতে কেবলই নারী-পুরুষের হৃদয়ঘটিত ভালোবাসার দিকে ঈঙ্গিত করা। শফিক ভাই একদিন বলেছিলেন, ‘এই দিনে মায়ের প্রতি ভালোবাসা দেখাও। অন্তত এক কাপ চা বানিয়ে মাকে খাওয়াও।' ছোট বড় ভাইবোনকে একটা বই উপহার দিন, সঙ্গে প্রেয়সীর জন্যে কেনা গোলাপের তোড়া থেকে একটা ফুল খুলে দিন না জুড়ে ওই বইটার সঙ্গে। ভালোবাসা জীবনের এত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, থাকুক না হয় তার জন্যে একটা বিশেষ দিন।

সবাইকে ভালোবাসা দিনের শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৪:১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×