somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘের দেশে পাহাড়ের দেশে (দার্জিলিং) - ৫

০৭ ই এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব - ৪
Click This Link


২ দিন দার্জিলিং ঘুরার পর আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে পরবর্তী গন্তব্যের। আপনার সময় থাকলে আপনি দার্জিলিং এই থাকতে পারেন। তবে দেশের বাইরে যখন গিয়েছেন তখন যত বেশী সম্ভব নতুন নতুন জায়গা ঘুরে দেখতে পারেন।

আমাদের টীমের সুজন ভাই আর ভাবী প্ল্যান করল কলিমপং যাওয়ার। জিয়া আর হিরন ভাইয়ের ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় শিলিগুড়ি ফিরে যাওয়া ঠিক করল। আমার সময় থাকলেও জার্নীর ভয়ে কলিমপং না গিয়ে শিলিগুড়ি যাওয়াই ঠিক করলাম। সিদ্ধান্তটা যে ভুল হয়েছে তা পরে হাড়ে হাড়ে টের পেলাম।

দার্জিলিং থেকে ফেরার দিন সকালে বের হলাম শেষবারের মত শহড় ঘুরতে। বিখ্যাত চৌরাস্তায় কিছটা সময় কাটিয়ে একটু এগোলাম। ডানের রাস্তায় মহাকাল মন্দির, রবিবার হওয়াতে ভালই ভীড় পেলাম। রামায়ন পাঠরত ভিক্ষুকও আছে। নেপালীদের দেখলাম নেপালী ভিক্ষুকের জন্য একটু বেশী দরদ দেখাতে। মন্দির পেরিয়ে একটু সামনে গিয়ে তো পুরা টাশকি খেলাম। এ কি দেখছি চোখের সামনে? এই তো খাদের ধারের রেলিং! এখান থেকেই তো দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্গার পুরো ক্লিয়ার ভিউ। লোকজন বলছিল এখান থেকেই কলিমপং আর সিকিম দেখা যায়। নিচে দেখলাম তিব্বতিদের স্কুল। আমরা নয়ন ভরে পাহাড়ের চূড়া দেখলাম। তারপর পাহাড়টা ঘুরে দার্জিলিং এর গভর্নর হাউস আর গীর্জা পেরিয়ে আবার চৌরাস্তায়।

শিলিগুড়ি একটু ঘুরে গেলেই পথে পড়ে মিরিক। মিরিকে চা বাগান আর লেক আপনাকে মুগ্ধ করবেই। পাহাড়ের উপরে লেক এই তো এক বিষ্ময়। লেকে আপনি কিছুক্ষন বোটিং করতে পারেন। ঘুরেফিরে দেখতে পারেন। এমনকি পুরো এলাকাই ঘুরতে পারেন। আর মিরিক যাওয়ার পথে নেপাল বর্ডার পাবেন।

আমরা মিরিকে ২ ঘন্টার মত ঘুরে ফ্রেশ হয়ে গেলাম। লেকের মাছকে খাবার খাওয়ালাম। পানিতে বনের টুকরো দিরে তার উপর অনেক মাছের ঝাপিয়ে পড়া দেখার মত এক ব্যাপার।

শিলিগুড়ির মসৃন পথে আপনি কমলা আর ওক গাছের সারি দেখবেন। পাহাড়ী জীবন দেখবেন। আর চা বাগান তো আকছার। ভারত আর নেপালের এক সমন্বয় এই দার্জিলিং। যেখানেই যাই নেপালীদের আধিক্যই বেশী দেখি।

মিরিক চমৎকার একটি জায়গা। এর আবহাওয়া আপনাকে অন্যরকম একটি ফ্রেশনেস দিবে। তবে সুযোগ থাকলে গ্যাংটক, অন্তত কলিমপং গেলেই ভাল। আর শিলিগুড়ি ফিরে ১ রাত কাটিয়ে পরের দিন দুপুর ২টার বাসে ঢাকায় ফিরতে পারেন। শিলিগুড়িতে শপিংএর জন্য বিধান মার্কেট, হংকং মার্কেট, শংকর মার্কেট আছে। এছাড়া কসমস সেন্টারে বিগ বাজার বা অন্য যে কোন দোকান থেকে ফিক্সড প্রাইজে শপিং করতে পারেন। বিগ বাজারে শপিং এর সময় হঠাৎ শুনতে পাবেন ১ ঘন্টার জন্য সেল! আর পুরো শিলিগুড়ি ঘুরে দেখার তো সুযোগ থাকছেই। দেখবেন পথে পথে ইতিহাসের বিশিস্ট মনীষীরা দাড়িয়ে আছে। শিলিগুড়িতে যেখানেই যান মহানন্দা ব্রীজ প্রায়ই আপনাকে পার হতে হবে।

আর সব শেষে দার্জিলিং এর কিছু মধুর স্মৃতি নিয়ে ফেরার বাসে রওয়ানা হলাম। সাথে থাকল সুজন মেহেদী পরিবার। বাসে আরও দেখলাম উত্তম গুহ আর চিত্রলেখা গুহকে। বুড়িমারী থেকে ফেরার সময় বাসের সংকটে যাত্রীরা কিছু অধৈর্য হয়ে পড়ে। এতে রাতের বাসে ৩ বাসের যাত্রীদের ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। সুজন ভাইয়ের প্রফেশনালিজম এখানে জেগে উঠে। তিনি উকি ঝুকি মারতে থাকেন তথ্যের জন্য। তবে উত্তম গুহ দায়িত্ব নিয়ে এর সমাধান না করলে আমরা বিপদেই পড়তাম। সংকোচের কারনে তাকে ধন্যবাদ দেয়া হয় নি।

পুরো ট্যুর আলহামদুলিল্লাহ ভাল কেটেছে। একটি স্বার্থক ট্যুর বলা যায়। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে সুজন-জিয়া-হিরন ভাই পরিবারের সাহচার্যে। তারা না থাকরে আমি কিছুতেই ঘুরে আসতে পারতাম না। একটি বোরিং সময় পার করে আসতাম। হিরন ভাই সব ইনফরমেশন আগে আগে নিয়ে রাখতেন যেন পরে আমাদের কোন কষ্ট না হয়। খুব কেয়ারিং একটি পরিবার হিরন ভাইদের। জিয়া ভাই বেশ কয়বার আমাদের কারনে বিরক্ত হলেও তিনি বা ভাবী মুখে বা ভাবে তা প্রকাশ করেন নি। আর সুজন ভাই তো চমৎকার একজন মানুষ। সবকিছুতেই সবসময় তার হাসিমুখ। পারিবারিক আনন্দ তাদের সবার মাঝেই আছে। তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ।

*ঘুরাঘুরির কথা এখানেই শেষ। পরের পর্বে দার্জিলিং এর কিছু রাজনৈতিক অবস্থা লেখার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০০৯ বিকাল ৩:০২
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×