তখন ব্রিটিশরাজের শাসন চলছে।অখণ্ড ভারতের এক অখ্যাত গ্রামে রহিমুদ্দিন আর নিরঞ্জন পাশাপাশি বসবাস করত।ধর্মে রহিমুদ্দিন মুসলিম আর নিরঞ্জন হিন্দু হলেও অন্তরে তারা মানুষ ছিল বলে দুজনের খুব সদ্ভাব ছিল।হয়ত দেখা গেল রহিমুদ্দিনের জমিতে পানির সেচ দেয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না,নিরঞ্জন এসে হাত লাগাত।আবার মাঝেমাঝেই নিরঞ্জন রহিমুদ্দিনের হালের বলদ নিয়ে নিজের জমি চাষ করত।দুজন মিলে দুরগ্রামে পালাগান-যাত্রা দেখতে যেত।
রহিমুদ্দিনের ছেলে-মেয়েরা নানা পুজা-পার্বণে নিরঞ্জনের বাড়ীতে পেট পুরে লুচি,সন্দেস,নাড়ু,পায়েস খেত।তেমনিভাবে রহিমুদ্দিনের কোরবানি দেওয়া খাসীর মাংস থেকেও নিরঞ্জনের ছেলে-মেয়েরা বঞ্চিত হত না।এভাবে তাদেরদিন ভালই কাটছিল,কিন্তু বাইরে সময় দ্রুত বদলাচ্ছিল।দিকে দিকে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন আগুনের বেগে ছড়িয়ে পড়ছিল।সেই আগুনের ঢেউ রহিমুদ্দিনের গ্রামেও এসে লাগল।দেখতে দেখতে রহিমুদ্দিনের ছেলে জিন্নাহর বড় ভক্ত হইয়া উঠিল,এদিকে নিরঞ্জনের ছেলে গান্ধিবাবার চ্যালা হয়ে উঠল।
প্রকৃতির নিয়মে প্রতিদিন সূর্য উদয় আর অস্ত হতে লাগল।
পরিশেষে খবর এই যে নিরঞ্জনের ছেলের ছুরিকাঘাতে রহিমুদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে।রহিমুদ্দিনের ছেলে তার মুসলিম ভাইদের নিয়ে নিরঞ্জনের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে,নিরঞ্জনের অন্ত্বসত্তা মেয়ে সেই আগুনেই পুড়ে মারা গেছে।এই সকল ঘটনার পরে নিরঞ্জন আর রহিমুদ্দিনের নাতি-নাতনী আর তাদের বংশধরেরা হিন্দু আর মুসলমান হিসেবে বড় হয়ে উঠতে লাগল,তারা মানুষ হতে পারে নাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৪:৪৯