somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের চরিত্রের যে রহস্যঘন দিক আমার সন্নিকটে এখনও অমীমাংসিত

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শাহেজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্জের পদত্যাগের দাবীতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের আমরন অনশন ভাঙ্গাইলেন দিন কয় পূর্বে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ডঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। ইহা লইয়া মূলত বামপন্থীরা বড়ই ক্লেশ বোধ করিতেছিল। তাহাদিগের মতে, দুই এক শিক্ষার্থীর লাশ পড়িলেই কেবল এই আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়া তাহা ব্যপকার্থে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ লইতে পারিত। তাহারা নিজেরা আমরন অনশন না করিয়া কি উদ্দেশ্যে শাহেজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীকে মৃত্যু সম্মুখে ঠেলিয়া দিতে আগ্রহী হইলেন, আমার জানা নাই। এই উপাচার্জের বদলে যিনি আসিবেন, বা আসিতেন, উনি কাহার পন্থী হইতেন বলিয়া উহাদের ধারনা ছিল, মোর তাহা জানা নাই। জাফর স্যার এক্ষনে যে ভূমিকা পালন করিয়াছিলেন, মোর তাহাতে পূর্ণ সমর্থন আছে। কিন্তু স্যারের প্রতি মোর সমালোচনার দৃষ্টিভঙ্গি এক ভিন্ন ঘটনা প্রসূত।

আপোনারা যাহারা হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের ইতিহাস সম্পর্কে অবগত আছেন, তাহাদের জানা থাকার কথা, হুমায়ূন আহমেদ এবং জাফর ইকবালের পিতা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আছিলেন। সেই মর্মে তাহাদিগেরে একখানা বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হইয়াছিল, থাকিবার নিমিত্তে। রক্ষীবাহিনী আসিয়া একদা তাহাদিগেরে এক কাপড়ে বাড়ি ত্যাগে বাধ্য করে। হুমায়ূন আহমেদের আখেরি দাস্তা দেয়ালে উহা সবিস্তারে বর্ণিত হইয়াছে। আমি উদ্ধৃতিখানা তাহার কেতাব হইতে সংকলন করিয়াছি -

"এক রাতে রক্ষীবাহিনী এসে বাড়ি ঘেরাও করল। তাদের দাবি- এই বাড়ি তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রক্ষীবাহিনীর কর্মকর্তা এখানে থাকবেন। মা শহীদ পরিবার হিসেবে বাড়ি বরাদ্দ পাওয়ার চিঠি দেখালেন। সেই চিঠি তারা মায়ের মুখের ওপর ছুড়ে ফেলল। এরপর শুরু হল তাণ্ডব। লেপ- তোষক, বইপত্র, রান্নার হাঁড়িকুড়ি তারা রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলতে শুরু করল। রক্ষীবাহিনীর একজন এসে মায়ের মাথার ওপর রাইফেল তাক করে বলল, এই মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হন, নয়তো গুলি করব। মা বললেন, গুলি করতে চাইলে করুন। আমি বাড়ি ছাড়ব না। এত রাতে আমি ছেলেমেয়ে নিয়ে কোথায় যাব?

আমার ছোটভাই জাফর ইকবাল তখন মায়ের হাত ধরে তাঁকে রাস্তায় নিয়ে এল। কী আশ্চর্য দৃশ্য! রাস্তার নর্দমার পাশে অভুক্ত একটি পরিবার বসে আছে। সেই রাতেই রক্ষীবাহিনীর এজন সুবেদার মেজর ওই বাড়ির একতলায় দাখিল হলেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে উঠে পড়লেন।" ( আহমেদ, হুমায়ূন; দেয়াল, পৃষ্ঠা ৯৪)

আপোনাদের কাহারো কাহারো জ্ঞাত হইবার কথা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সঙ্গে এই ঘটনা সংঘটনের প্রতিবাদে মহাত্মা আহমদ ছফা গায়ে কেরোসিন ঢালিয়া আগুন লাগাইয়া আত্মহত্যার কথা ঘোষণা করেন। হুমায়ূন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকালে আজীবন সাদা দলের সদস্য ছিলেন, ডঃ আহমদ শরীফের নেতৃত্বে (অবশ্য তখন নীল দল ছিল না। বঙ্গবন্ধুর শাহাদতের পরে জাসদ পন্থী পিঙ্ক পার্টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল মাস্টরদিগের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল।)।

কিন্তু যাহা আমার মস্তিষ্কে ধরে না, তা হইল এই যে, নিজের পরিবারের প্রতি এহেন ঘটনা যে রক্ষীবাহিনী ঘটাইয়াছিল, তাহার প্রতি, এবং তাহার পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি জাফর ইকবার স্যার সরাসরি বিরূপ মন্তব্য করেন নাই, বরং তাহাদের ঘেঁষিয়া রাজনীতিই কেন আজীবন করিয়া গেলেন?

বিদগ্ধ পাঠক, আপোনার কি মতামত?

এ নিয়া আমার নিজ হইতে তালাশকৃত এক উত্তর আছে অবশ্য। গণ মতামত পাইবার পর হয়তো তাহা ভাগ করিয়া লইব। আপাতত আলোচনার ক্ষেত্র উন্মুক্ত থাকুক।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৩২
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তেল আর জল কখনো এক হয় না......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্ল্যাং রেভলিউশন: ১৮+ সতর্কবার্তা ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩০


সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকে একটা ভাইরাল ভিডিও চোখে পড়লো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য সালাউদ্দিন আম্মার গণজাগরণ মঞ্চ ৩.০ তে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন: দেখতে পাইলে বাকশাল, শা*উয়া মা*উয়া ছিড়া ফেল/... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসেন জুলাই/ আগস্টের মিনি পোস্ট মোর্টেম করি।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:২৪





গল্প শুনেন বলি-

আমরা পড়ালেখা গুছগাছ কইরে চাকরীতে ঢুকছি।হঠাৎ বন্ধু গো ইমেইলের গ্রুপে মেসেজ (নাম ধরেন রফিক), রফিক যে পাড়ায় (রেড লাইট এরিয়া) যাইতো সেখানের একজন সার্ভিস প্রোভাইডাররে বিয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

কবিতাঃ হে বলবান

লিখেছেন ইসিয়াক, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪০

কে আছিস বলবান!
হ্ আগুয়ান।
দে সাড়া দে ত্বরা।
ধরতে হবে হাল,বাইতে হবে তরী, অবস্থা বেসামাল।

জ্বলছে দেখ প্রাণের স্বদেশ
বিপর্যস্ত আমার প্রিয় বাংলাদেশ।
মানবিকতা, মূল্যবোধ, কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতির বাতিঘর।
সর্বত্র আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

তারেক ৩০০০ কোটী টাকার লোভেই দেশে ফিরেছে

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১০



তারেক এসেছে, বলেছে, I have a plan; তারেকের প্ল্যানটা কি? এই মহুর্তে তার প্ল্যান হতে পারে, নমিনেশন বাণিজ্য করে কমপক্ষে ৩০০০ কোটি টাকা আয়। ৩০০ সীটে গড়ে ১০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×