somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপু আপনার নাম কি ?? প্রশ্ন টা কি খুব কঠীন ছিল ??

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেমিস্টার শেষ । ছুটি সুরু । বহুদিন পর বাসায় আসার পালা এবার । অনেকদিন পর বাসায় যাচ্ছি । মনে এক অজানা আনন্দ । টিকেট কাটলাম ৫ দোস্ত একসাথে । নির্দিষ্ট সময়ে কাউন্টার এ এসে হাযির হলাম ৫ জন। ঢূকেই দেখি এক সুন্দরি আপু বসে আছেন । ভাবলাম ইনিও বসে আছেন তার গন্তব্যে যাওয়ার ই অপেক্ষায় । তার সৌন্দর্য অতুলনীয় । আমরা সবাই তাকে ২/১ বার দেখলাম । মনে মনে সবাই হয়ত বললাম যে যদি উনি আমাদের বাস এ যান তাহলে ভালই হত , কেউ কেউ হয়ত ভাবল যে আমার যদি এরকম একটা girlfriend থাকত তাহলে কতই নাহ ভাল হত ইত্যাদি ।
নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ মিনিট পর বাস আসল । সবাই বাস এ উটলাম । ৫ জন এর ৪ জন ৪ টা পাসাপাসি সীট নিয়ে বসে পড়ল । আমি একাই রয়ে গেলাম পিছনের একটি সীট এ বসার জন্য । নিজের ব্যাগ রাখতেই দেখি ঐ সুন্দরী আপু ও আমাদের সাথে আমাদের বাস এই যাবে । দেখে তো সবাই মনে মনে একটু খুশি হয়ে গেল । কেন যে খুশি হল তা আমার জানা নেই ।
বাস এর সব গুলো সীট এই লোক বসে আছে । সুধু বাকি আছে আমার পাশের সীট টা । এটা দেখার পর মনে যে না জানা আনন্দ টুকু ছিল তা যেন গায়েব হয়ে গেল । হায় হায় উনি আমার পাশে বসবে !! দোস্ত তোরা কেউ সীট বদলাবি আমার সাথে !! কেউ তখন আর রাজি হয় নাহ । সুধু আমার দিক এ তাকায় আর মিট মিট করে হাসে । হাসে কেন তা তো বুঝতেই পারতেসি । তাদের বাস এ কথা বলার মত একটা বিষয় জোগাড় হয়ে গেছে । আপু এসে ভিতরের সীট এ বসল । আমি বসলাম মাঝখানে ১ বিঘাত জায়গা ফাকা রেখে । বুঝলাম নাহ যাকে দেখে এত কিছুই মনে হল তার পাশে বসতে এত সমস্যা হচ্ছে কেন এখন !!
বাস ছেড়ে দিল । আমি আপুর দিক এ তাকাচ্ছি ও নাহ । নিজের মোবাইল এর হেডফোন কানে দিয়ে গান শুনতেছি আপন মনে । একবার আপুর দিক এ তাকালাম , দেখি উনি জানালার বাইরে অপলক দৃষ্টি তে কি যেন দেখছেন । মনে হল একবার বলি যে আপু কোন সমস্যা হচ্ছে নাহ তো । r u fine !! কিন্তু কেন যেন বলতে পারলাম নাহ । ভাবলাম আপু হয়ত কিছু ভাবছেন , তাকে বিরক্ত করাটা ঠিক হবে নাহ । এর মধ্যে বন্ধুদের ডাক আসল , কিরে কেমন যাচ্ছে তোর দিনকাল , ভালই তো আছিস । একটু লজ্জা পেলুম । আপু আবার ওদের কথা শুনে ফেলল নাকি , শুনলে কি মনে করবে !!
আমি ওদের বললাম ঐ চুপ থাক ।
দেখতে দেখতে ২ ঘন্টা কেটে গেছে । একটি কথাও হইনি আপুর সাথে । শুধু মাঝে মাঝে দেখছি যে আপুর কল আসছে , হয়ত বাসা থেকে তার বাবা ফোন দিচ্ছে যে তার মেয়ে ঠিক মত বাসায় পউছে যাবে কিনা তার ই খোঁজ নিতে । এর মধ্যে বাস এর চাকা পাঞ্চারহয়ে গেল । প্রায় আধা ঘন্টা ওখানেই দাড়ানো বাস । আমরা তো নিচে নেমে কার্ড খেলা সুরু করছি । এক বন্ধু জিজ্ঞাসা করল যে আপুর সাথে কথা হল কোন ?? কই থাকে ?? কোথায় পড়াশুনা করে ?? আমি বললাম , নাহ এখনও একটি শব্দ ও আলাপ হইনি । আমার বন্ধু বলল যে তুই একটা গাধা । আমি মেনে নিলাম । আরও বলল যে সে হলে তো এতক্ষণ জমায়ে আড্ডা দিতো আপুর সাথে । আমি বললাম ওহ আচ্ছা , আমি পারি নাহ রে ।
আবার ও বাস এ উঠলাম , আপু দেখি একাই বসে আছে বাইরের দিক এ তাকায়ে , তার অপলক দৃষ্টির যেন কোন শেষ ই নেই । আবার ও আমি গান শোনা সুরু করলাম । আর আপু একবার আমার দিক এ দেখলেন আর কিছু না বলেই বাইরে দেখতে লাগলেন আবার । হয়ত মনে মনে ভাবলেন আই ছেলে কেমন । পাসের সীট এ বসে যাচ্ছে , কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা তাও জিজ্ঞাসা করল নাহ একবার । অথবা কিছু হয়ত ভাবেন ই নাই ।
দেখতে দেখতে বাস যশোর এর কাছে যখন আসল তখন আপু সুপারভাইসার কে ডেকে বলল যে উনি যশোর এ নেমে যাবেন । আমি হঠাত করে শুনেই ভাবলাম যে হায় আপু দেখি নেমে ও যাবে , টানা ৬ ঘন্টা পার করে দিলাম পাশাপাশি বসে কিন্তু কেউ কারো নাম টাও জিজ্ঞাসা করলাম নাহ এখনও ।
এটা ভাবতে ভাবতেই যশোর পউছে গেছি । দীর্ঘ সাড়ে ৬ ঘন্টা পর আপু আমার দিক এ তাকিয়ে বলল একটু সরুন , আমি এখানে নেমে যাব । কিছু না বলেই উঠে দাড়ালাম । আপু নেমে চলে গেলেন । হঠাত করে ভাবলাম যে যাকে এতক্ষন মনের অজান্তেই আপু বলে সম্বোধন করে আসছি , উনি কি আসলে আপু নাকি আমাদের বয়সী কেউ ।
কেমন যেন জিজ্ঞাসা করে আসি এখন ই গিয়ে যে আপু আপনার নাম টা কি ??
............কি আজব আমি । এত সুন্দরী একটা মেয়ের পাশে দীর্ঘ ৬ ঘন্টা journey করার পর ও তার নাম টা ও জানিনা । হয়ত ৬ ঘন্টায় কারো জীবনের সব কিছুই জেনে নেওয়া যায় ।
আমার বন্ধু রা বাস থেকে নেমে জিজ্ঞাসা করল যে কি গল্প করলি আপুর সাথে ? আমি চুপ করে দাড়িয়ে থেকে বললাম , কিছুই নাহ রে । নাম টাও জিজ্ঞাসা করা হল না । দুঃখ রয়ে গেল মনের এক কোণে কেন জানিনা । হয়ত সব কিছুর কারণ জানা ও যায় নাহ । না জানার মধ্যে দিয়ে ই এক অতুলনীয় সুন্দরীর পরিচয় আর তার সাথে কাটানো কিছু মুহুর্ত হারিয়ে গেল ..................
২১টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×