somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ ইতিহাস পাল্টে দেওয়া নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়রের জন্ম ও মৃত্যুদিন

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তাঁর সম্পর্কে দুএকটি জানা-অজানা গল্প হয়ে যাক...

শেক্সপিয়র ১৫৬৪ সালের ২৩ এপ্রিল ইংল্যান্ডের এভন নদীর তীরে স্ট্রাটফোর্ড শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ব্যাপারে প্রাপ্ত নথি থেকে জানা যায়, তাঁর আকিকা (ব্যাপ্টিজম) হয়েছিল ২৬ এপ্রিল। জন্মের তিন দিন পর আকিকা করা সে সময় ছিল ইংল্যান্ডের রীতি ছিল। সে হিসাবে শেক্সপিয়রের জন্ম তারিখ ধরা হয় ২৩ এপ্রিল। তিনি ছিলেন ৮ ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয়। তাঁর পিতা জন শেক্সপিয়র নিরক্ষর হলেও সফল ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে স্ট্রাটফোর্ড শহরের মেয়র হতে পেরেছিলেন।

শেক্সপিয়র ১৫৮২ সালের নভেম্বরে যখন বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। মজার ব্যাপার হল তিনি তাঁর চেয়ে ৮ বছরের বড় একজন কৃষককন্যা অ্যানি হ্যাথওয়েকে বিয়ে করেন! তাদের বিয়ের মোহরানা ছিল মাত্র ৪০ (চল্লিশ) পাউন্ড। বিয়ের ছয় মাসের মাথায় এই নবদম্পতির সুজানা নামের এক কন্যা সন্তান জন্মদান করেন।


অ্যানি হ্যাথওয়ে

হ্যামলেট’ নাটকের কথা আমার সবাই কমবেশি জানি। শেক্সপিয়রের হ্যামলেট [মতান্তরে হ্যামনেট] নামে একটি সন্তান ছিল যে এগার বছর বয়সে মারা যায়। গবেষকদের মতে, হ্যামলেট নাটকের সাথে হ্যামনেটের কিছুটা যোগসাজশ রয়েছে। কেননা, এই নাটক রচনার সময় হ্যামনেটের মৃত্যু হয়েছিল।

কথিত আছে, একবার ক্ষুধার জ্বালায় তিনি একটি হরিণ হত্যা করেছিলেন। এ কারণে তাকে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে লন্ডনে পালিয়ে আসতে হয়েছিল। আর তখনই তিনি লন্ডনে কাজের সন্ধানে ঘুরতে বেরিয়ে রঙ্গমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। তবে এ গল্পের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায় না।

‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’- এর প্রেমের গল্প কিংবদন্তি থেকে পাওয়া। শুরুতে স্পেনে এর উৎপত্তি। পরে এ গল্প ছড়িয়ে পড়ে ইতালিতে। ইতালির লেখক মাতিয়ো বান্দেলো এ নিয়ে লিখে ফেলেন একটি উপন্যাস। আর উপন্যাসের কাহিনী ধার করে ইংল্যান্ডের লেখক আর্থার ব্রুকস্ তাঁর মহাকাব্যিক রচনা ‘দি ট্র্যাজিক্যাল হিস্ট্রি অব রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ প্রকাশ করেন। এর প্রায় ৩০ বছর পর শেক্সপিয়র আর্থার ব্রুকস্-এর কাহিনী ধার করে সৃষ্টি করেন কালজয়ী এই ট্রাজেডি।

মৃত্যুর তিন বছর আগে ১৬১৩ সালে তিনি লেখালেখি বন্ধ করে দেন। মনে করা হয়, মোমবাতির আলোয় লেখার কারণে তার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে যাওয়ায় তিনি লেখালেখি বন্ধ করেছিলেন। তবে তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাঁর স্বাক্ষর নিজ হাতে করতে পারতেন।


শেক্সপিয়রের অটোগ্রাফ

'অ্যাসাসিনেশন', 'বেডরুম' বা 'অবসিন'-এর মতো বহু ইংরেজি শব্দ এবং 'ব্যাগ অ্যান্ড ব্যাগেজ', 'ব্রেক দ্য আইস' বা 'নেকেড ট্রুথ'-এর মতো অনেক বাগধারা শেক্সপিয়রের কলমে প্রাণ পেয়েছে।

বিখ্যাত সাহিত্যিক লিও টলস্টয় কখনও শেক্সপিয়রের লেখা পছন্দ করেননি; বরং শেক্সপিয়র সম্পর্কে তিনি বারবার হতাশার কথাই জানিয়েছেন-
'শেক্সপিয়র পড়ে আমি ক্রমাগত বিতৃষ্ণা আর বিরক্তির মুখোমুখি হয়েছি।’

১৬১৬ সালের ২৩ এপ্রিল (তাঁর ৫২ জন্মদিনে) শেক্সপিয়রের মৃত্যু হয়। এর আগের দিন একটি নিমন্ত্রিত বাড়িতে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে মদ্য পান করেন তিনি। ফলে শীতের রাতে পথেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর এই অসুস্থতা থেকেই পৃথিবী থেকে চির বিদায় নেন নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়র।


শেক্সপিয়রের সমাধিস্থল

৥ শেক্সপিয়রের কিছু উক্তি ৥
> সকলকে ভালবাস, কিছুলোককে বিশ্বাস কর কিন্তু কারো কাছে ভুল করো না।
> প্রত্যাশা হলো সকল মানসিক যন্ত্রণার মূল।
> অভাব যখন দরজায় এসে দাঁড়ায়, ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায় ।
> ভীরুরা মরার আগে বারে বারে মরে। সাহসীরা মৃত্যুর স্বাদ একবারই গ্রহণ করে।
> যদি গুণ না থাকে তবে অভিনয় করো।
> আমি সবসময় নিজেক সুখী ভাবি, কারণ আমি কখনো কারো কাছে কিছু প্রত্যাশা করি না, কারো কাছে কিছু প্রত্যাশা করাটা সবসময়ই দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
> সংসারে কারো ওপর ভরসা করো না, নিজের হাত এবং পায়ের ওপর ভরসা করতে শেখো ।


আজ এ পর্যন্তই।
ভালো থাকুন।
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:১৪
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×