একটি দৃশ্যমান কলোনীর পরিবর্তে এখন আমরা অবস্ট্থান করছি অদৃশ্য এক কলোনীতে। ত্রক্রমাগ্রসরমান সময়ের ধারায় এ কলোনীটি কোন একক শক্তির নয় বরং নানা পরাশক্তির চাপে দলিত পিষদ্ব। মহাকালের নানা বাঁকে এ ুদ্র ব-দ্বীপ রাষদ্ব্রে নানা সামরিক-বেসামরিক সংঘাতও ছিল অনিবার্য। তন্মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল বিদ্রোহ আমাদের স্ট্বাধীনতার সংগ্রাম। যে সময়ের অনিবার্যতায় আমাদের স্ট্বাধীদনতা যুদব্দটি হয়েছিল, সাড়ে তিন দশকের পরিবর্তিত বাস্টস্নবতায় তার অর্জন প্রায শহৃন্যের কোটায়। আমাদের দেশ আমাদের হবে- একথার উজ্জীবনা যতটা ছিল একাত্তুরে, ঠিক ততটাই কিংবা তারচেয়েও বেশি রম্য-উক্তি বরে মনে হয় এখন- একুশ শতকের প্রথম দশকের প্রথমার্ধে। উৎপাদনকারী আর বাজারজাতকারীদের মধ্যকার বৈষম্য ভোক্তার তালকা থেকে পুরোপুরি সরিয়ে দিয়েছে উৎপাদককে। ফলে , সর্বস্টস্নরের মানুষ কমপ েদু'বেলা আহার করবে, একটি স্ট্বাধীন দেশে, তা হয়নি বরং 'মঙ্গা' নামক জাতীয় কলগ্ধেকর উত্থান হয়েছে অবশ্যাল্ফ্ভবীরূপে।
বাঙালি জাতি ঐতিহ্যগত ও সাংস্ট্কৃতিকভাবেই ধর্মের গোড়ামিমুক্ত। আমাদের স্ট্বাধীনতা সংগ্রামে ধমৃ-জাতি-বর্ণের নির্বিশেষ অংশগ্রহণই তার প্রমাণ। ধর্মনিরপেতা, ধর্মমুক্ততা যে দেশটির সংস্ট্কৃতির সাথে যুক্ত সেদেশে বক্তিয়ার খিলজির ধর্ম যে কেমন করে এতটা উগ্র, মানধ্বংসী হয়ে ওঠে তা এখন অন্যতম মৌলিক জাতীয় প্রশম্ন। স্ট্বাধীনতার সাড়ে তিন দশকের ব্যবধানেই আমাদের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ধর্মমুখীতা ও তাদের পৃষ্ঠপোষকতা শুধু জাতীয় সংস্ট্কৃতিরই অবমাননা করে না, তা একটি মৌলিক উল্পম্নত জাতিসত্তার ভিত্তিকেই অস্ট্বীকার করছে। মতামুখী রাজনীতি এবং চিরকালই মতার বাইরে থাকার মানসিকতামুখী রাজনীতির যাঁতাকরে পিষদ্ব এদেশবাসী এখন 'পলিটিঙ্' নামক 'পলিটিঙ্' থেকে মুক্তি চায়। পুরো জাতিকে জ্ঞান-কর্মমুখী শিার পরিবর্তে এনজিও নির্দেশিত শিার প্রসারের দিকে ধাবিত করা হয়েছে। মাদ্রাসা- ক্যাডেট করেজ- ইংলিশ মিডিয়াম রেখেই ধোঁয়া তোলা হয়েছে একমুখী মাধ্যমিক শিার। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ত্রক্রমশই পিছিয়ে পড়ছি আমরা, কিন্তু সংস্ট্কৃতিতে ঢুকে গেছে বাহারি মোবাইল ফোন। দেশে গত সাড়ে তিন দশকে বিকশিত হয়েনি কোন শিল্কপ্প, হয়নি টেকসই উল্পম্নয়ন অথচ আমার অভিভাবক হয়েছে ডানো নেসলে, পরিবার হয়েছে ডিজুস।
বিশ্বায়নের সাথে তাল মেলানো এখন- স্ট্বাধীনতা যুদব্দের সাড়ে তিন দশক পর পরিণত হয়েছে ফ্যাশানে। নিজস্ট্ব আর্থনীতিক প্রবৃদব্দি আশানুরূপ না হলেও মুক্তবাজারের নামে অবাধে ঢুকছে উল্পম্নত বিশ্বের পণ্য। অথচ বিশ্বাজারে আমাদের উৎপাদিত গার্মেন্টস পণ্যের কোটা বল্পব্দ হয়ে যাচে। বল্পব্দ হচ্ছে আমাদের আদমজী, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ত্রক্রমশ একটির পর একটি চালু হচ্ছে নৈশকোর্স- রাতের অাঁধারে সার্টিফিকেট কেনাবেচার ব্যবসা হচ্ছে।
মুক্তবুদব্দির চর্চা আজ স্টিস্নমিত। পরিবর্তে যিনি বলছেন 'আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম? তাঁকে অজ্ঞাতনামা সন্পাসীর ধারালো অস্ট্পে প্রাণ দিতে হচ্ছে। বুদব্দির মুক্তি ঘটছে না বলে সার্টিফিকেট অর্জনের উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে শুধুই মধ্যবিত্তীয় কেরানি হওয়া। কর্মসংস্ট্থানের পর্যাপ্টস্ন সুযোগ নেই বলেই আইন-শৃগ্ধকলা পরিস্টি্থতির অবনতি ঘটছে, পঞ্চাশ টাকার আশায় সল্ফ্ভাবনায় যুবক বোমারু হচ্ছে। দেশে একটি স্ট্বাধীন সরকারি কর্মকমিশন রয়েছে সত্য, তবে তার বিশ্বাস যোগ্যতায় দিনের পর দিন মানুষ আচ্ছা হারাচ্ছে।
স্ট্বাধীন দেশের একজন নাগরিকের স্ট্বাস্ট্থ্য-সুবিধা পাওয়াটি তার মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর আসন খুবই সীমিত, ডাক্তারদের অফুরান, সমস্যা, ডাক্তার সগ্ধকট তো লেগেই আছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কিংবা বিএমএ-র দ্বারা পদায়ন হচ্ছে ডাক্তারদের। সরকারি বিনামহৃল্যে প্রদেয় ঔষধগুলো বিত্রিক্র হচ্ছে বাজারে। খাদ্যের ভেজালে দেশবাসীর নাভিশ্বাস উঠেছে। ঔষধেও ভেজাল উন্মোচিত হচ্ছে। অথচ পৃথিবীর নামী-দামী সব হাসপাতালের শাখা উদ্বোধিত হচ্ছে ঢাকায়, যেখানকার একদিনের খরচ একটি নিল্ফম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের একমাসের খরচের সমান। স্ট্বাধীনতার সময়ে আমাদের দেশে কতজন কোটিপতি ছিরেন আর বর্তমানে কতজন াঅছেন সে শ্বেতপত্র প্রকাশ না করেই বলা যায়- দেশের 90 ভাগ সমঙ্দ এখন কুগিত মাত্র 10 ভাগ মানুষের হাতে। এ পরিসংখ্যানই বলে দেয় ঐসব উচ্চ ব্যয়বহুল হাসপাতালগুলোতে কোন রোগীরা থাকেন।
স্ট্বাধীনতার পর থেকে চ্যামঙ্িয়নের সবচেয়ে বেশি রেকর্ড দুনর্ীতিতে। সরকারের পর সরকার আমরা দেখেছি, দেখেছি নানা পদব্দতির শাসন। কিন্তু কোনো শাসনেরই পরিবর্তিত হয়নি আমাদের মানসিক অবস্ট্থার। তথাকথিত সামাজিক জীব হিসেবে আমলাতন্পের বাধ্যচত্রেক্র বাঁধা পড়েছে আমাদের সৃষদ্বিশীর চেতনা। সরকারি কোনো কাজে গেলেই বাধ্য হয়ে একজন নাগরিককে ঘুষ দিতে হচ্ছে, ফলে ঐ নাগরিকও বাধ্য হচ্ছেন কোনো না কোনো উপায়ে অতিরিক্ত অর্থ আয় করতে। এভাবে দুনর্ীতি হচ্ছে ত্রক্রমপ্রসারিত। সকলেই দুনর্ীতিগ্রস্টস্ন কেউ কেউ কম- এ কথা নিদ্বর্িধায় মানতে হচ্ছে আমাদের। আইন-শৃগ্ধখলা নিয়ন্পণের জন্য যৌথবাহিনী, র্যাব নামক অনেক বাহিনীই অনেকবার গঠিত হয়েছে কিন্তু মানসিক শৃগ্ধকলা নিয়ন্পণের জন্য কোন বাহিনীই গঠনের প্রয়োজন মনে করেননি কোন সরকারই। ফলে দুনর্ীতি বিস্টস্নৃত হচ্ছে অবাধে। অবস্ট্থাদৃষদ্বে মনে হচ্ছে, এটি বাঙালিধিকারের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফদ্ধান্সে সরকারি বাহিনী তাড়িত হয়ে দু'জনের মৃতু্যতে প্রবল আন্দোলন-বিােভ গড়ে উঠলেও র্যাবের ত্রক্রসফায়ারে এদেশের মানুষের মৃতু্য যেন স্ট্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্ট্বাধীনতার সাড়ে তিন দশক পরও মানবাধিকার যেন বাংলাদেশে প্রহসন বলে মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০