একটা লাশ আমাকে শোকাহত করে..নতমাথায় সমব্যাতিত হই সবার সাথে।কিন্তু এ লাশ আমার প্রানের ক্যাম্পাস বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইন্সিটিটিউটের এক ছোট ভাইয়ের।
ভালরা হারিয়ে যায়...
সুইডিশ পরিবারের বিনয়ী আন্দোলনে একত্রিত হোক সকলে....
কাপ্তাইয়ে সুইডিশ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রদের সাথে পুলিশের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় মাথায় গুলি লেগে এক ছাত্র মারা গেছে । আহত হয়েছে আরো ১৫জন ছাত্র। নিহত ছাত্রের নাম রায়হান আহমেদ (২১)। সে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কনস্ট্রাকশন বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি হাটহাজারি এলাকায় বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। শান্তিশৃংখলা রক্ষায় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল বিকালে ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিলসহ দুই যুবক কাপ্তাই নতুন বাজার এলাকায় দ্রুত গতিতে দুটি মোটর সাইকেল চালাচ্ছিলেন। ওই মোটর সাইকেলের আওয়াজ বেশি হওয়ায় এতে আপত্তি করে পার্শ্ববর্তী বাজারের স্থানীয় লোকজন। এতে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। ওই সময় কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেখানে একটি চালক সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। এসময় শিক্ষার্থীদের লাইসেন্স দেখার নাম করে এক পুলিশ সদস্য তাদের দাঁড় করায়। নির্বাহী অফিসার প্রথমে তাদেরকে ৩শ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিনমাসের কারাভোগের নির্দেশ দেন বলে জানা যায়। এতে কথা কাটাকাটি হলে নির্বাহী অফিসার এক পর্যায়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এই পর্যায়ে ছাত্ররা নমনীয় হয়ে ক্ষমা চাইলে তিনি জানান, দুইছাত্রকে ৫০ বার কানধরে উঠবস করতে হবে। এতে বেঁকে বসে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনা জানাজানি
হলে ইনস্টিটিউটের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসে। এসময় আরাফাত (২৩) নামের একজনসহ দুইজনকে আটক করা হয়। তবে আরাফাত ছাড়া অন্যজন পালিয়ে যায়। আটকের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসময় পুলিশ গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে রায়হান আহমেদ মারাত্মক আহত হয়। পুলিশ খুব কাছ থেকে তার মাথায় গুলি করে। ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপ্যাল মোছাদ্দেকুল বারি জানান, আহত ছাত্র রায়হানকে (২১) চিকিৎসার জন্য প্রথমে খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ছাত্রদের মধ্যে বাধন, তানভীর, রিয়াজ, রাশেদ, সাইমন, ইদ্রিছ, সজীব, মনির, নাজমুল, আসিফের নাম জানা গেছে।
আমাদের কাপ্তাই প্রতিনিধি জানান, এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরুজ্জামান জানান, আরাফাতকে পুলিশ আটক করলে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে বিপুল সংখ্যক ছাত্র এসে পুলিশের কবল থেকে আরাফাতকে উদ্ধারের জন্য জড়ো হয়। কাপ্তাই সার্কেলের এএসপি প্রণব কুমার রায় বলেন, আটক যুবকরা সম্ভবত পলিটেকনিকে বেড়াতে এসেছিল। তাই পলিটেকনিকের ছাত্ররা তাদের উদ্ধার করতে পুলিশের ওপর হামলা করে। এ সময় অনেক ছাত্রের হাতে রামদা ও কিরিচ ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ফাঁকা গুলি করলে ছাত্ররাও গুলি ছোঁড়ে। তবে কার গুলিতে ছাত্র আহত হয়েছে তা তিনি স্পষ্ট করে বলতে পারেননি। তবে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে পুলিশ যাদেরকে আটক করে তারা পলিটেকনিকেরই ছাত্র। এদিকে সংঘর্ষের সাথে সাথে কাপ্তাই নতুন বাজারসহ আশপাশের প্রায় ৫ শতাধিক দোকানপাটের সবগুলোই বন্ধ হয়ে যায়। সব ধরনের গাড়ি চলাচলও রাত ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। পুলিশের পাশাপাশি ওয়াগ্গাছড়া জোনের বিজিবি সদস্যসহ সেনাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি থমথমে দেখা গেছে। পলিটেকনিকের সামনের সড়কে ছাত্রদের অবস্থান করছিল। কয়েকজন ছাত্র জানান, ওই ঘটনার জন্য নতুন বাজারের ব্যবসায়ীরা দায়ী। মূলত ব্যবসায়ীদের উসকানিতেই এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। এদিকে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে আসে। শোকের মাতম চলছে তার হাটহাজারির গ্রামের বাড়িতেও।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




