somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বাবা ও মুক্তিযুদ্ধ

১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ ভোর ৪:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ উদুর একটা পোষ্ট পড়ে কিছু কথা শেয়ার করতে ইচ্ছে করলো। তাই এই লেখা। আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন গল্পটা আব্বুর মুখে শুনেছিলাম। ১৯৭১ সাল, আব্বু তখন কলেজে পড়ে। দেশ মাতৃকার টানে এই বাংলার আরও লাখো যুবকের মত নিজকেও ধরে রাখতে পারেনি। যদিও বাবা, মার একমাত্র ছেলে হবার কারনে দাদু, দাদি কেউ আব্বুকে যুদ্ধে যেতে দিতে রাজি ছিলনা। তাই রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত এক মাকে সালাম করে আর এক মায়ের টানে ঘর থেকে বেরহয়ে যায়।

তারপর ট্রেনিং নিয়ে ফেরার পর তাদের ছয় বন্ধুর উপড় দায়িত্ব পরে রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের কাটাখালি নদীর উপড় যে ব্রিজটা আছে (বর্তমানে গাইবান্ধা জেলার অর্ন্তগত) সেটি উড়িয়ে দেবার। হাইকমান্ড থেকে নির্দেশ পাবার পর প্রয়োজনীয় বিস্ফরক তারা ভাল করে প্যাক করে নিয়ে গভীর রাতে তারা নদীতে নেমেপরে। তারপর মাথার উপড় কচুরিপানা দিয়ে ধীরে ধীরে ব্রিজের দিকে এগুতে থাকে। ব্রিজের উপড় তখন পাকি আর্মি আর রাজাকারদের নিয়মি টহল। নদীর পাশে তখন পাট ধোয়ার পর অনেকগুলো পাটখড়ির স্তুপ করা ছিল। পাকি আর্মি আর রাজাকারদের চোঁখকে ফাকি দিয়ে তারা ছয়জন তিন ভাগ হয়ে এক একটি পাটখড়ির স্তুপের মধ্যে দুই জন করে ঢুকে পড়ে। অপেক্ষা করতে থাকে সুযোগের। কিন্তু ভাগ্য সহায় না থাকায় সুযোগ বুঝে বের হবার সময় দেখে ফেলে পাকি আর্মি। এর পর শুরু হয় বৃষ্টির মত গুলি বর্ষন। আব্বুর পাশের বন্ধু তখনি গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ে। সেদিন সে তার আহত বন্ধুকে কাধে করে দুই কিলোমিটার রাস্তা বয়ে নিয়ে আসে। যদিও আব্বুর কাঁধেই মারা যায় সে। সেদিন সে তার খুব কাছের দুই বন্ধুকে হারায়। এই বাংলা মায়ের জন্য সেদিন তার দুই সন্তান বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে শহীদ হয়ে যায়।

আব্বুর কাছে এই গল্প শোনার পর তার মত কঠিন মানুষের চোখে যে পানি দেখেছিলাম তারপর কোনদিন আর তার কাছে ৭১ সম্পর্কে জানতে চাইনি। কোন এক অজানা কারনে উনি কোনদিন মুক্তি যোদ্ধার সার্টিফিকেটও আনতে যাননি।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ ভোর ৫:৪৯
৫৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×