somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছার একডা কতা হুনবেন...

৩০ শে নভেম্বর, ২০০৭ সকাল ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছার আমার কতা হুননের টাইম কি আপনাগো আছে! আমিতো শিক্কিত না, বালা বালা কতাও কইতে পারিনা। আমার কতা আর কি কমু কন। আমি গ্যাদা থাকতেই আমার বাপে আমার মায়েরে ছাইরা গেছেগা। হেরপর মায়ে মাইনষের বাড়ীতে কাম কইরা আমারে খাওইতো। মায়ে কাম কইর‌্যা যে খাওন পাইতো, হেইডা আমি আর মায়ে মিল্যা বাগ কইর‌্যা খাইতাম। অহন মায়ের কতা মনে অইলে খালি কান্দন আহে। মায়ের খালি জ্বর অইতো, আমাগো ওষুদ কিননের ট্যাহা আছিল না। মায়ে আমারে দইর‌্যা খালি কানতো। একদিন মায়ের এমুন জ্বর অইলো যে মায়ে আমারে থুইয়্যা মইরাই গেল। দুইডা দিন মরা মায়েরে নিয়া কত কানছিগো ছার কেও মায়েরে মাডি দেয়নাই। কতজনের পায়ে দরছি, হক্কলে এক ট্যাহা দুই ট্যাহা কইরা দিছে কিন্তুক মায়েরে মাডি দেয়নাই। হেরপর বস্তির মাইনষে আমার ট্যাহা কয়ডা লইয়া মায়েরে হের পুরান কাপড় দিয়া প্যাচাইয়া মাডি দিয়া আইলো। আমার খালি মায়ের কতা মনে অইয়্যা আর খিদায় কান্দন আহে তহন। অহন আমি কইযামু ছার,আপনে কন? মায়ে ট্যাহা দিতে পারেনাই বইল্যা আমারে মায়ের ঘর থাইক্যাও বাইর কইরা দিল।

বিশ্বাস করেন ছার দুইদিন পানি ছাড়া কিছু খাইনাই। খিদার চোটে মায়ের জন্যও কান্দন আইতোনা। কত ছারগো পায়ে দরছি, কইছি,ছার আমার মায়ে মইর‌্যা গেছে, দুইডা দিন কিছু খাইনাই আমারে দুইডা ট্যাহা দেন,হেরা আমার কতা বিশ্বাস করেনাই। আমার কান মইল্যা দিছে আর আমার লগে মস্করা করছে। খিদায় যহন চৌখ্যে কিচু দেহিনা তহন এক আপার পায়ে দইর‌্যা কাইন্দা দিলে, হেয় আমারে দশ ট্যাহা দিছে। হেই ট্যাহা দিয়া রুডি কিনয়্যা খাইছি।
হের পর থাইক্যা ফুটপাতে থাহি। বাজারে মিন্তি খাডি। মাজে মাজে সাহেবেরা এত ট্যাহার বাজার করে যে, মাতায় কইর‌্যা বইতে পারিনা। তহন পিয়াসে কইলজ্যাডা ফাইড্যা যায়। কি করমু কন, টানতে না পারলে ট্যাহা দিবোনা। উল্ডা মাইর দিবো তাই জানডা শ্যাষ অইয়া গেলেও কিচু কইনা। খাইতেতো অইবো।

হারাদিন কাম কইরা ফুটপাতেই হুইয়া পরি। একদিন বৃষ্টির লাইগ্যা মার্কেটের বারান্দায় হুইছিলাম। ঘুমের মইদ্দে নাইট গাড আইয়্যা পিডের মদ্দে এমুন বারিদিছে, মনে অইলো যেন পিডের মইদ্দে বাজ পড়ছে। হের পরেরদিন পিডের ব্যাতায় মিন্তি বাইতে পারিনাই। হারাদিন না খাইয়া আছিলাম। অহন বৃষ্টি অইলে হারা রাইত যাত্রী ছাউনির নিচে বইয়া থাহি।
একদিনের কতা কই ছার হুনেন... এক ব্যাডায় আইয়া কইলো মিছিল করলে নাকি বিশ ট্যাহা কইরা দিব। কার মিছিল জানিনা। আমাগোরে যা কইতে কইলো আমরা হেইডা কইয়া মিছিল করতাছি, এমুন সময় পুলিশ আইয়া এমুন মাইর দিলো যে মাইরের চোটে জ্বর আইয়া পড়লো। তহন খালি মায়ের কতা মনে পড়তো আর কান্দন আইতো। মনে অইতো মইর‌্যা গেলেই বালা, মায়ের কাচে যামুগা।
অহন রাইতের বেলা হুইলে শীতকরে। গায়ে দেওনের একখান কাপুর পাইলে বাইচ্চা যাইতাম। দেহি কত সোন্দর সোন্দর জামা কাপুর পইরা পুলা মাইয়্যারা বাপ মায়ের হাত দইর‌্যা ইসকুলে যায়। মনে কয় আমার বাপ মা থাকলে আমারেও কিন্যা দিত। রাইতের বেলা ঠান্ডায় নিণ্দ আহেনাগো স্যার। হুনছি আপনারা নাহি বড় বড় হোটেলে খাইতে গিয়া কত ট্যাহা বকসিস দেন। আমারে একখান পুরান কাপড় কিন্যা দিয়া আমারে বাচানগো ছার। আমার মায়ে আপনের লাইগ্যা দোয়া করবো।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:৪৫
৯২টি মন্তব্য ৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×