somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যাপিত জীবন (১) আমাদের সমুদ্র দর্শন

২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি সবই করতে পারি তবে আমার ইদানিং খানিকটা হিসেব কষতে হয় আর সব সব কিছুতে একটু বেশি সময় লেগে যায়। এই তো ক'দিন আগেই বরের বন্ধুর অনুরোধে তাদের সাথে হলিডে হোমে ঘুরতে গেলাম। আসা আর যাওয়া মিলিয়ে ৩ ঘন্টা আর সেখানে সময় কাটানো ৪ ঘন্টা, এই মোট ৭ ঘন্টা হলো। তিন মাস বয়সী আমার ছোট মেয়ের জন্য ৩টা আর সাথে ১টা এক্সট্রা ৪টা ফিড নিলেই হবে। বড় মেয়েটির বয়স সবে দুই বছর। দুপুরে খাওয়ার পর তার পটিতে বসার রুটিন, মনে করে তা সাথে নিয়ে যেতে হবে। সাগর পাড়ে কি ঠান্ডা লাগবে? যদিও এখন ভীষণ রকম তাপদাহ চলছে ইংল্যন্ডে তবুও দুটি ফুলহাতা জামা নিয়েই নিই। যদি আবার বেশি গরম লাগে সাথে একদম পাতলা জামাও নাহয় দুটো করে বাড়তি নিলাম।

বড় মেয়ে সমুদ্রে দাপিয়ে খুব খুশি, আমিও খানিক পা ভেজালাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই বড় মেয়ে পানিতে ভিজে বালিতে গড়িয়ে মাখামাখি, আবার ঠান্ডায় ও কাঁপছিল। ওর বাবা ঝটপট মেয়ের ভেজা জামা বদলিয়ে পাশের দোকানে নিয়ে গেলো গরম কিছু একটা খাওয়া কিনে দিতে। এদিকে ফেরার সময় ও হয়ে এসেছে। সঙ্গী ভাবিরা জানতে চাইলো আমি ঠিক আছি কি না। ছোট মেয়েকে ফিডার খাওয়াতে খাওয়াতে একগাল হেসে জানালাম আমি একদম ঠিক আছি। তারা হোটেলের দিকে হাঁটা দিলো। এই রে আমাকে ও তো উঠতে হবে, ওরা যে চলে যাচ্ছে। ছোট জনকে এক হাতে আগলে আমি গোছগাছ এর চেস্টা করি।

আমার কি এখন আর শুধু হাতব্যগ কাঁধে ঝুলিয়ে বেরুবার উপায় আছে! দুই বাচ্চা নিয়ে যেখানে ই যাই একটা ব্যগে বাচ্চাদের বাড়তি কাপড় আর খাওয়া, একটা ব্যগে ন্যপি, ওয়াইপ, চেইঞ্জিং ম্যট বাড়তি তোয়ালে আরো টুকিটাকি জিনিস আর ছোট হাতব্যগে আমার মোবাইল, ওয়ালেট, বাসার চাবি ইত্যাদি। আমার তড়িঘড়িতে গুঁড়োদুধের কৌটো উল্টে মাখামাখি হয়। আমি ফিডারের মুখটা আবার কোথায় রাখলাম তা খুঁজে পাই না। কাপড়ের ব্যগে রেখেছি কি? পাচ্ছি না তো, বোধহয় ন্যপি আর তোয়ালে যে ব্যগে সেখানে রেখেছি। কই পাচ্ছি নাতো, তাহলে বোধহয় হাত ব্যগে রেখেছি। আমি উদগ্রীব চোখে তাকিয়ে দেখি বড় মেয়েকে নিয়ে তার বাবা আসছে কি না। ৫ মিনিট ও সেদিন আমার কাছে পাঁচ ঘন্টা লাগছিলো। মেয়েকে গরম গরম ফ্রাইজ খাওতে খাওয়াতে তার বাবা ফিরলো। আমি চোখ গরম করে বললাম, এখন খাওয়াতে হবে না সবাই চলে যাচ্ছে সব গুছিয়ে নাও। সাগর পাড়ে বিকেলে ঠান্ডা হাওয়া ছেড়েছে। সাথের ভাবিরা তাদের বাচ্চা নিয়ে ততক্ষনে চলে গেছে। এক ভাই আমার বড় মেয়েকে কোলে নিয়ে সাম্লাচ্ছেন, ছোটজন আমার কোলে আর আমার বরের বন্ধুটি বিচটেন্ট গুটিয়ে তল্পাতল্পি গোছাতে আমার বরকে সাহায্য করছেন।

ছোট মেয়েকে এবার তার বাবা ক্যরিয়ারে বুকে ঝুলিয়ে নিলো। বিচ থেকে হোটেল মাত্র মিনিট ১০ এর হাঁটা পথ। আসার সময় আমার বড় মেয়ে লাফিয়ে দৌড়ে চলে এলেও ফেরার সময় সে ভীষণ ক্লান্ত। দু পা হেঁটেই কোলে ওঠার বায়না। ১২সপ্তা আগেই আমার ২য় সিজারিয়ান হয় তাই দু'বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে ১০ মিনিট হাঁটাও আমার জন্য তখন ভীষণ ক্লান্তিকর। ছোটজনকে আমি ক্যরিয়ারে ঝুলিয়ে নিলে অবস্য বড় জনকে তার বাবার কোলে দেয়াই যায়। তবে আমার ভয় লাগে যদি আমি হোঁচট খাই বা পিছলে পড়ি! থাকুক বাবা, এর থেকে কোন রকম বড় মেয়েকে হাচড়ে পাচড়ে আমি হাঁটা দেই। মিনিট চারেকের মধ্যেই আমার নাভিশ্বাস অবস্থা দেখে আমার বর তার বন্ধুকে অনুরোধ করে বড় মেয়েকে কোলে নিতে। মায়ের কোল ছেড়ে যেতে কিছুটা আপত্তি করলে ও আমার ক্লন্ত মেয়েটি এই কোলবদল মেনে নিয়ে আংকেলের কাধে মাথা এলিয়ে দেয়।

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:০৪
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭


ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

পহেল গাঁয়ে পাকিস্থানি মদদে হত্যাকান্ডের জন্য ভারত পাকিস্থানে আক্রমন করে গুড়িয়ে দেয় , আফগানিস্থান তেহেরিক তালেবানদের মদদ দেওয়ার জন্য, পাকিস্থান... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রবাসীর মৃত্যু ও গ্রাম্য মানুষের বুদ্ধি!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০



একজন গ্রামের মানুষের মাথায় ১০০ জন সায়েন্টিস্ট, ৫০ জন ফিলোসফার, ১০ জন রাজনীতিবিদ এবং ৫ জন ব্লগারের সমপরিমাণ জ্ঞানবুদ্ধি থাকে, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন এসব লোকজন বাংলাদেশের এক একটি সম্পদ।

বিস্তারিত:... ...বাকিটুকু পড়ুন

×