
বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য তো অনেক কিছুই করা হলো।বেচারা ঘড়ির কাঁটার কান ধরে এক ঘন্টা এগিয়ে আনা হলো। শীতকালে ঘড়ির কাঁটা বললো আমাকে আগের জায়গা ফিরিয়ে দাও। কিন্তু কে শুনে ঘড়ির কাঁটার প্রার্থনা। এখন শীতকাল কি গ্রীষ্মকাল আগামী অন্তত আরও ৪ বছর ১ মাস ঘড়ির কাঁটা এক ঘন্টা আগে থাকবে। আমরা সাধারন মানুষেরাও কোন রকমে এই ডিজিটাল টাইমের সাথে মানিয়ে চলতে শিখে গেছি এতদিনে। কিছুদিন পরে শীতের সকালে টর্চ লাইট আর ঘন্টি নিয়ে রাস্তায় বের হতে হবে। এই শীতের সকালের অন্ধকার আর ঘন কুয়াশায় কিছুই দেখা যাবে না; আশেপাশের মানুষজনকে সাবধান করতে হবে যে পাশে কেউ আছে। যাই হৌক ভুল করার পরিনতি এটা; সহ্য করতেই হবে।
এত কিছু হয়ে গেল কিন্তু লোডশেডিং তো আগের মতই হচ্ছে। আমরা সাধারন জনগন তো লোডশেডিংকে জীবনের অঙ্গ হিসাবে ধরে ফেলেছি। কিন্তু আপনি কি একবার হাসপাতালে লোডশেডিং এর কথা চিন্তা করে দেখেছেন। আজকে “প্রথম আলো”র একটি রিপোর্ট পড়লাম – “বিদ্যুৎ চলে গেলে মোমের আলোয় চিকিৎসাসেবা, হয় অস্ত্রোপচারও”। রিপোর্টে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কথা বলা হয়েছে। সেখানে “গ্রীষ্ম মৌসুমে দিন-রাত মিলিয়ে ছয় থেকে আট ঘণ্টা লোডশেডিং ছিল। এখন সব মিলিয়ে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং হয়”। আর জেনারেটর যে তেলের অভাবে চলে না নাকি বরাদ্দের টাকা বড় ডাক্তারবাবুর পকেটে চলে যায় তা আপনারা ভাল করেই বুঝেন। অধিকাংশ সরকারী হাসপাতালের চিত্র কিন্তু একই।
একবার চিন্তা করে দেখেন সেই রোগীর কথা যার লোডশেডিংয়ে ভুল অস্ত্রোপচারের কারনে মৃত্যু হতে পারে। মোমবাতির আলোয় কি অস্ত্রোপচার করা যায়? আর অন্যান্য রোগীদের কথাও চিন্তা করেন। অন্ধকারে নার্স ভুল করে অন্য ইঞ্জেকশন অথবা ঔষধ দিয়ে দিলে যে রোগী যে মৃত্যুদ্বারে পৌছে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের গরীব মানুষের তো আর নেতা-নেত্রীদের মত হারামের টাকা নেই যে বেসরকারী হাসপাতালে গলা কাটাতে যাবে। তাদের তো একমাত্র ভরসা সরকারী হাসপাতলই।
সরকারী হিসাবমতে তো অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়েছে কিন্তু সেই সাশ্রিত বিদ্যুৎ তো সরকারী হাসপাতালে না গিয়ে সরকারী দলের নেতা-নেত্রীদের বাসায় পৌছে। আর সরকারী দলের নেতা-নেত্রীরা তো আর লোডশেডিং আর সরকারী হাসপাতালের সেবার স্বাদ নেন নাই তাই তার কষ্ট বুঝবেন না।তাদের পায়ে ব্যাথা হলেই তো মাউন্ট এলিজাবেথ ঘুরতে চলে যান তারা। সরকারী দলের নেতা-নেত্রীদের বলতে চাই একটু সরকারী হাসপাতালের দিকে নজর দিন। সুস্থ মানুষ তো লোডশেডিং তো সহ্য করতে পারে কিন্তু একটা হাসপাতালের রোগীর লোডশেডিং সহ্য করার সেই ক্ষমতা নেই, ডাক্তারবাবুও অন্ধকারে অপারেশন করতে পারবেন না। তাই ছোট মুখে বড় কথা বলছি কি, সাশ্রিত বিদ্যুৎ কি একটু আপনাদের বাসা থেকে ডাইভার্ট করে সরকারী হাসপাতালে দেওয়া যায় না। ঐ রোগীটা বেঁচে থাকলে কি আপনার ভোট ব্যাংকে কি একটি ভোট বাড়বে না?
বিদ্যুত্ চলে গেলে মোমের আলোয় চিকিত্সাসেবা, হয় অস্ত্রোপচারও

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



