আমি এখন জানালার পাশে,
স্পীকারে হালকা করে গান, হাতে এক কাপ চা,
পাশের টিনশেডের বাড়ির ছাদে বৃষ্টি পড়ছে,
আর আমি বসে তাই দেখছি।
কিছু কাক ভিজে এসে বসেছে ওপাশের বাড়ির সানশেডে,
সানশেড এখন রেইনশেড হিসেবে কাজ করছে।
একদম গা ঘেঁষা বাসাগুলো ছাড়া আর কিছু স্পষ্ট দেখা যায় না।
একটু দূরের বাসাগুলো ঝাপসা,ধুলো পরা পুরানো এলবামের মতো,
মাটির সোঁদা গন্ধ উঠে আসছে চা এর মিষ্টি গন্ধ ছাপিয়ে,
আর উঠে আসছে সোঁদা গন্ধ মাখা হাজারো স্মৃতি,
টিনের বাড়ির পেছনের মাঠটায় মনে হয় ছেলেরা নেমে গেছে ফুটবল নিয়ে,
হালকা করে দেখা যাচ্ছে তাদের ছুটন্ত অবয়ব,
বর্নার গলার সাথে মিশে যাচ্ছে টিনের চালে বৃষ্টি পড়ার শব্দ,
আর তা ছপিয়ে মাঝে মাঝে ভেসে আসছে দুরন্ত কৈশোরের উল্লোসিত চিৎকার,
কিছু স্বর যেন খুব চেনা, পেছনে ফেলে আসা কোনো স্বরের মতো,
ভুলে যাওয়া কোনো কন্ঠের আদলে, নাকি সব কৈশোরের উল্লাসই এক?
পাশের বাড়ির বৌটা শাড়ি দিয়েছিলো শুকাতে, তুলে নিতে ভুলে গেছে,
অঝোর ধারায় আধভেজা শাড়ি আর আধভেজা নেই,
বাতাসে অল্প অল্প দুলে উঠছে,
এক্ষুনি যেন তার পিছন থেকে কোনো চেনা মুখ উঁকি মেরে হেসে উঠবে ফোকলা দাঁতে,
ছোট্ট টোল পড়া গালে, বৃষ্টিতে ভেজার উচ্ছসিত হাসি।
উমমম, নিচের তলায় আজ ইলিশ ভাজা হচ্ছে, মাও ভাজতেন,
ঝুম বৃষ্টিত ভিজে এসে সব ভাইবোন কাড়াকাড়ি করে খেতাম ভুনা খিচুডি আর ইলিশ ভাজা,
এখন জীবনের ব্যস্ততার ভিড়ে যারা আছে দূরে।
নিচের আমগাছটা কি একটু ঝাকি খেলো?
দস্যি ছেলেগুলো নিশ্চয়ই এসে হামলা চলিয়েছে,
ঢিল ছুরেছে কি? আমরাতো ভেজা গাছ বেয়েই উঠে পড়তাম,
কত বকা খেয়েছি তার জন্য।
একটা, দুইটা, তিনটা কাক, মা তিনটা কাক!!!সদ্য গুনতে শেখা কচি উল্লোসিত গলা,
ছোটোনের গলা? নাহ সে কি করে হয়? সেতো আজ হলে থাকবে,
আহ্,বৃষ্টি ধরে এসেছে,তিতলী এখনই টিচরের বাসা থেকে আসবে,
খাওয়া নিয়ে আমার যুদ্ধ করতে হবে তার সাথে,
মনে আছে আমরা বিকেলে খেলে ফিরে এসে কত কত গুলো খেতাম,
আর আজ কালের বাচ্চরা...
গলে যাওয়া মেঘের সাথে মিশে স্মৃতিরা যেন ঝাঁপিয়ে পড়েছে আজ,
বৃষ্টি এমন ই...
২২.০৬.০৭
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:২০